পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশে নির্মিত হচ্ছে বিশ্বের দ্বিতীয় উঁচ‚ মিনারের ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট নয়নাভিরাম মসজিদ। ইটের তৈরি মিনারের উচ্চতা হবে ৪৫১ ফুট যা ৫৭ তলা ভবনের সমান। মসজিদটি নির্মিত হচ্ছে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলার ঝাওয়াইল ইউনিয়নের দক্ষিণ পাথালিয়া গ্রামে ঝিনাই নদীর তীরে।
ইতিহাস বলছে, ভারতের দিল্লিতে রয়েছে ২৪০ ফুট উঁচু ইটের তৈরি কুতুব মিনার। কুতুব মিনার তাজমহলের চেয়েও বেশি পর্যটক পরিদর্শন করেন। আর বিশ্বের সর্বোচ্চ ৬৮৯ ফুট বা ৬০ তলা ভবনের সমান মিনারটি মরক্কোর কাসাবøাংকায় দ্বিতীয় হাসান মসজিদে অবস্থিত। বাংলাদেশসহ বিশ্বের মসজিদের ইতিহাসে জায়গা করে নিতে যাচ্ছে নির্মানাধীন ঐতিহাসিক ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদটি। এখানে দেশি-বিদেশি পর্যটক ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আগমন ঘটবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। মসজিদ নির্মাণে ব্যয় হবে প্রায় ১০০ কোটি টাকা। মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের ভাই নির্মাণাধীন মসজিদের তত্ত্ববাধায়ক মো. হুমায়ুন কবির জানান, প্রায় ১৫ বিঘা জমির ওপর মসজিদ কমপ্লেক্সে থাকবে অত্যাধুনিক সব সুবিধা। শীততাপ নিয়ন্ত্রিত হওয়ার পরও মসজিদে সহস্রাধিক ফ্যান লাগানো হবে।
তিনি জানান, মসজিদের ছাদের মাঝখানে থাকবে ৮১ ফুট উচ্চতার একটি বড় গম্বুজ। এর চারপাশে থাকবে ১৭ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট ২০০টি গম্বুজ। মূল মসজিদের চার কোণে থাকছে ১০১ ফুট উচ্চতার চারটি মিনার। পাশাপাশি থাকবে ৮১ ফুট উচ্চতার আরও চারটি মিনার। ১৪৪ ফুট লম্বা ও একই মাপের প্রস্থের দোতলা মসজিদে নামাজ আদায় করতে পারবেন একসঙ্গে প্রায় ১৫ হাজার মুসল্লি।
মসজিদের দেয়ালে টাইলসে অঙ্কিত থাকবে ৩০ পারা পবিত্র কোরআন শরীফ। যে কেউ বসে বা দাঁড়িয়ে কোরআন তেলাওয়াত করতে পারবেন। আর মসজিদের প্রধান দরজা তৈরিতে ব্যবহার করা হবে ৫০ মণ পিতল। আজান প্রচারের জন্য মসজিদের দক্ষিণ পাশে নির্মাণ করা হবে উঁচু মিনার। উচ্চতার হিসেবে মিনারটি হবে ৫৭ তলা ভবনের সমান অর্থাৎ ৪৫১ ফুট। মিহরাবের দুই পাশে লাশ রাখার জন্য হিমাগার তৈরি করা হবে। নির্মাণাধীন অবস্থাতেই ২০১ গম্বুজ মসজিদে ঈদের নামাজ আদায় শুরু হয়েছে।
মসজিদের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে নির্মাণ করা হচ্ছে পৃথক দুটি পাঁচতলা ভবন। সেখানে থাকবে দুস্থ নারীদের জন্য বিনামূল্যের হাসপাতাল, এতিমখানা, বৃদ্ধাশ্রম, দুস্থ মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের জন্য পুনর্বাসনের ব্যবস্থা। মসজিদের উত্তর পাশের ভবনটি দেশি-বিদেশি অতিথিদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থার জন্য।
মসজিদের পাশেই নির্মান করা হবে দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসুল্লিদের জন্য ডাক বাংলো ও বিনামূল্যে খাবার বিতরণের ব্যবস্থা। পশ্চিমের ঝিনাই নদীর তীর থেকে মসজিদ পর্যন্ত সিঁড়ি করা হবে। একটি সেতু নির্মাণ করা হবে নদীর ওপর। চারপাশে থাকবে দেশি-বিদেশি ফুলের বাগান।
হুমায়ুন কবির আরও জানান, টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা সদর থেকে সাত কিলোমিটার পশ্চিমে ঝিনাই নদীর তীরে অবস্থিত সুদৃশ্য মসজিদের নির্মাণ শুরু হয়েছে ২০১৩ সালের ১৩ জানুয়ারি। মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন কল্যাণ ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের মা রিজিয়া খাতুন। চলতি বছরের শেষদিকে নির্মাণকাজ শেষ হবে। পবিত্র কাবা শরীফের ইমামকে এনে মসজিদের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ লক্ষ্যে নির্মাণ করা হয়েছে দুটি হেলিপ্যাড।
ডিজাইন ও কারুকার্যের দিক থেকে মসজিদটি একটি ভিন্ন সৌন্দর্যের প্রতীক হয়ে গড়ে উঠছে। মসজিদ বাংলাদেশকে বিশ্বে নতুনভাবে পরিচিত করে তুলবে। রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকা-গোপালপুর বাসে গোপালপুর নেমে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় মসজিদে যাওয়া যাবে। সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের লোকজন মধুপুর হয়ে আসতে পারবেন। এছাড়া উত্তরবঙ্গের লোকজন বাস অথবা ট্রেনে বঙ্গবন্ধু সেতু পূর্ব স্টেশনে নেমে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় চড়ে মসজিদটি দেখতে পারবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।