পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দীর্ঘদিন থেকে দুর্দশায় থাকা বেসিক ব্যাংকের সম্মাননা গ্রহণ করলেন না অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল মতিঝিল বেসিক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পরিষদ ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা সভায় এ সম্মাননা ক্রেস্ট না নেওয়ার কথা জানান অর্থমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রীকে ব্যাংকটির পক্ষ থেকে সম্মান সূচক ক্রেস্ট দিতে চাইলে তা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তিনি বলেন, আমি এখন ক্রেস্ট নিবো না। এক বছরে যদি তারা ভালো করতে পারে তাহলে ক্রেস্ট নিবো। আপনারা ভালো করেন আগামীতে আপনাদের সঙ্গে আমরা পিকনিক করবো। এ সময় অর্থমন্ত্রীর পাশাপাশি অনুষ্ঠানে থাকা অন্যান্য অতিথিরাও ক্রেস্ট গ্রহণের অস্বীকৃতি জানান। এছাড়া বেসিক ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অন্যান্য ব্যাংকগুলোর তুলনায় অনেক বেশি বেতন নেন। আবার তারা লোকসানে আছে। এটা কোন ভাবেই মানা যায় না। তাই বেসিক ব্যাংক কর্মকর্তাদের বেতন কমানো হবে। একই সঙ্গে টানা তিন বছর বেসিক ব্যাংকের যেসব শাখা লোকসান দেবে আগামীতে ওইসব শাখা বন্ধ করে দেয়া হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন এ মাজিদ। ব্যাংকের সার্বিক আর্থিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. রফিকুল আলম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, অর্থ মন্ত্রনালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম ও অতিরিক্ত সচিব ফজলুল হক।
বেসিক ব্যাংককে হুশিয়ারি দিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, গত দুই বছর যেসব শাখা লোকসান দিয়েছে। এ বছরও যদি তারা লোকসান দেয়, তাহলে ওইসব শাখা বন্ধ হরে দেওয়া হবে। বর্তমানে ব্যাংকটির প্রায় ৩৬টি শাখা লোকসানে আছে।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, যারা বেনামে ঋণ নিয়েছে টাকা ফেরত না দেওয়ার জন্য; তাদের ছাড় দেয়া হবে না। তাদের পেছনে আমরা এজেন্সির লোক নিয়োগ দিবো। দেশ বিদেশে যেখানেই থাকুক তাদের বের করা হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। আমরা ঋণ আদায় সহজ করে দিবো কিন্তু ঋণ মাফ করতে পারবো না। বেসিক ব্যাংকে স্পেশাল অডিট করা হবে।
অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কম হলেও শাস্তি দেয়া হবে। অনুষ্ঠানে অনিয়ম দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনায় নাজুক অবস্থায় পড়া শতভাগ রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংক নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেন বক্তারা। এ সময় লোকসানে থাকা ব্যাংকটি লাভজনক অবস্থায় না আসলে বিভিন্ন শাস্তির পাশাপাশি কর্মী ছাঁটাইয়ের হুমকি দেওয়া হয়।
বেসিক ব্যাংক কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত বেতন সম্পর্কে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, বেসিক ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অন্যান্য ব্যাংকগুলোর তুলনায় অনেক বেশি বেতন নেন। আবার তারা লোকসানে আছে। এটা কোন ভাবেই মানা যায় না। তাই বেসিক ব্যাংক কর্মকর্তাদের বেতন কমানো হবে। অর্থমন্ত্রী বেসিক ব্যাংক কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, গত আপনারা ৩৫৪ কোটি টাকা লোকসান করেছেন। মাত্র ৭২ টা ব্রাঞ্চের জন্য এখানে প্রায় ২১শ’ জনবল আছে। এতলোকের এখানে কি কাজ?
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আপনার একদিকে অন্যান্য ব্যাংকগুলোর তুলনায় বেতন বেশি নেন। অন্যদিকে ব্যাংক লোকসানে। এটা কোন ভাবেই সম্ভব হতে পারে না। বেতন কমানো হবে। আপনারা কর্মকর্তারা সবাই বসে সিদ্ধান্ত নেন। কিভাবে কত কমাবেন। সিদ্ধান্ত আমাকে জানান। এরপর আমি আমার সিদ্ধান্ত জানাবো।
অর্থমন্ত্রী বলেন, এখানে আমি বার বার আসবো না। আজকে এসেছি আপনাদেরকে একটা সুযোগ দিয়ে গেলাম। ব্যাংক কিভাবে ঘুরে দাঁড়াবে সে প্ল্যান দেন। আপনারা একটু সামনে এগুলে আমরাও এগুবো। না হলে আমরাও এগুবো না। আপনারা আপনাদের কাজ করেন। আমরা আমাদের কাজ করবো।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, কোন কর্মকর্তা কাজ না করলে, অনিয়ম করলে একবার বলবো, দ্বিতীয় বার বলবো না। চাকরি থাকবে না। আপনি কোর্টে যান। কোন সমস্যা নাই। কিন্তু কোন দিন আমাদের ভালবাসা পাবেন না।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বেসিক ব্যাংকের ৪ হাজার ৬০০ কোটি টাকা খেলাপি তাদের কাছে যান। ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে ৯ শতাংশ সুদে ১০ বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধের সুবিধা নিতে বলেন। যারা ঋণ শোধ করতে চান তাদেরকে সর্বোচ্চ সহায়তা করবো। আর যারা টাকা মারার ধান্ধায় আছেন কোন ছাড় দেওয়া হবে না।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ব্যাংক ইচ্ছা করলে খেলাপি ঋণ আদায় করতে পারে। ঋণ আদায়ে শক্ত হতে হবে। বর্তমানে দুই শতাংশ ডাউনপেমেন্টে সরকার পুন:তফসিলের সুযোগ দিয়েছে। এই সুযোগ গ্রহণ করে কেউ যদি না আসে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। এতো দুর্ণাম নিয়ে একটি প্রতিষ্ঠান চলতে পারে না। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। সরকারি চাকরিজীবীদেরও ব্যবস্থা নেয়া যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেসব কর্মকর্তা কাজ না করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন।
বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন এ মাজিদ বলেন, বেসিক ব্যাংকে বেশ কিছু ঋণের অনিয়ম হয়েছিল। আমরা অনিয়মগুলো চিহ্নিত করে ঋণ আদায় ও পুনঃতফসিল করি। কিন্তু দেখা গেছে পুনঃফসিল করা ঋণও আবার খেলাপি হয়ে যাচ্ছে। এখন নন পারফরমেন্স লোন ৫৯ শতাংশে এসেছে। পূর্বে যা ছিল ৬৭ শতাংশ। এ অবস্থায় আমাদের মূলধন সহায়তা প্রয়োজন। তা পেলে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।