Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

একে একে ৬ জন নেমে ফিরলেন না কেউই

জয়পুরহাট জেলা সাংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০০ এএম

নির্মাণাধীন সেপটিক ট্যাংকের শাটার খোলার জন্য প্রথমে একজন নেমেছিলেন। তার সাড়া না পেয়ে নেমে পড়েন আরেকজন এভাবে একে একে ছয়জন সেপটিক ট্যাংকে নেমে মারা পড়লেন। গতকাল বুধবার জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে পলাশবাড়ী গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, জাফরপুর পলাশবাড়ী গ্রামের নিখিল চন্দ্রের বাড়িতে মিস্ত্রিগণ গত কয়েকদিন আগে টয়লেটের সেপটি ট্যাংক নির্মাণ করে ট্যাংকের মুখ বন্ধ করে চলে যান। পরে বুধবার সকালে সেপটিক ট্যাংকের ছাঁদ ঢালাইের শাটার খুলতে প্রথমে একজন নিচে নামেন অনেকটা সময় পেরোলেও সে না উঠায় অপর একজন নামেন। তিনি ট্যাংকের ভেতরে তার সহকারীকে পড়ে থাকতে দেখেন। তবে তিনি তার সহকারীকে উদ্ধার করতে পারেননি। তাকে উদ্ধার করতে নেমে তৃতীয় ব্যক্তিও ট্যাংকি থেকে উঠে আসতে পারেনি। এরপর আরও চারজন নামেন। এর মধ্যে মাত্র একজনকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। বাকি ছয়জন ট্যাংকের ভেতর মারা যান।

নিহতরা হলেন, জাফরপুর পলাশবাড়ী গ্রামের বাড়িওয়ালা নিখিল চন্দ্রের ছেলে প্রিতম (১৯), মৃত গোবিন্দ চন্দ্রের ছেলে গণেশ (৪৫), রেজাউল করিমের ছেলে সজল (২০), সাথী হোসেনের ছেলে শিহাব (১৮), গণিপুর গ্রামের ছামছুল আকন্দের ছেলে শাহিন (৩০) এবং বগুড়া জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলা খলিশ্বর গ্রামের টিটু মন্ডলের ছেলে মুকুল (২৫)। গুরুতর অসুস্থ দিলীপ চন্দ্র মহন্ত (৫৫) নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

আক্কেলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কিরন কুমার রায় বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত ৬ জন শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আক্কেলপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর ভারপ্রাপ্ত স্টেশন অফিসার বজলুর রশিদ বলেন, আমরা খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে ৬ জনের লাশ উদ্ধার করেছি। তবে নিহতরা ট্যাংকিতে নেমে সাথেই সাথেই মৃত্যুবরণ করার ফলে কাউকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।



 

Show all comments
  • Dipto Sarker ১ আগস্ট, ২০১৯, ১:১৮ এএম says : 0
    এটা আসলে কেন হয়? ভেতরে অক্সিজেনের অভাবে নাকি বিষাক্ত গ্যাস তৈরি হয় কোন?
    Total Reply(0) Reply
  • Ziaur Rahman ১ আগস্ট, ২০১৯, ১:১৮ এএম says : 0
    খুব দুঃখ জনক ঘটনা ।
    Total Reply(0) Reply
  • Samadder Ratan ১ আগস্ট, ২০১৯, ১:১৯ এএম says : 0
    জয়পুর হাটে এক নির্মানাধীন সেপটিক ট্যাংকে নেমে একে একে ছয় জনের মৃত্যু হয়েছে। খবরটা পড়ে তব্দা খেয়ে আছি। ঘটনা যা ঘটেছে তা তব্দা খাওয়ার মতোই। সেপটিক ট্যাংকের ঢাকনা খুলে প্রথমে এক নির্মান সহকারী নামে। কয়েক মিনিট পরে তার কোন সাড়া না পেয়ে প্রধান মিস্ত্রী নামে। তাদের কারো সাড়া না পেয়ে একে একে অন্য মিস্ত্রী এবং শেষ পর্যন্ত বাড়িওয়ালার ছেলে ও ভাই নামে। মোট সাত জনের মধ্যে একজন অসুস্থ অবস্থায় ওপরে আসতে সক্ষম হয়। বাকিরা ওখানেই মরে পড়ে থাকে। এই দুর্ঘটনা থেকে বোঝা যায়, আমাদের শ্রমিক-মিস্ত্রীরা কতটা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে। তাদের সাধারণ নিরাপত্তা প্রশিক্ষণটাই নেই। হোক নির্মানাধীন, তবুও কোন সেপটিক ট্যাংকে নামার আগে কিছুক্ষণ খোলা রাখা দরকার। দরকার বিষাক্ত গ্যাস পরীক্ষা করে নেয়ার সহজ কোন ব্যবস্থা। আরেকটা বিষয়, যখন দেখা গেলো একে একে দুজন নেমে গিয়েও সাড়া মিলছে না, তখন ফায়ার সার্ভিস খবর দেয়া। নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ থাকলে অন্তত তাই করতো। খবরটা পড়ে প্রথমেই প্রশ্নগুলো জেগেছে- এই মৃত্যুর জন্য কে দায়ী? কেবলই ভিক্টিমের অজ্ঞতা? এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের কি কোন দায়বদ্ধতা নেই?
    Total Reply(0) Reply
  • Md. Faysal Ahmed ১ আগস্ট, ২০১৯, ১:২০ এএম says : 0
    এমন দুর্ঘটনার কথা প্রায়ই শোনা যায়,তবুও পাবলিক কেন সাবধান হয়না বুঝিনা!
    Total Reply(0) Reply
  • Kazi Nazia Mustary ১ আগস্ট, ২০১৯, ১:২০ এএম says : 0
    ছোটবেলায় বিটিভিতে এই অ্যাক্সিডেন্ট নিয়ে একটা এড দেখাতো, আগে একটা মোমবাতি জ্বালায়ে ট্যাংকের ভিতর দড়ি দিয়ে নামায়ে দিতে, মোম নিভে গেলে বুঝতে হবে বিষাক্ত গ্যাস আছে আর জ্বলে থাকলে গ্যাস নাই, এটা এখন দেখায় কিনা জানিনা..
    Total Reply(0) Reply
  • Kazi Nazia Mustary ১ আগস্ট, ২০১৯, ১:২০ এএম says : 0
    ছোটবেলায় বিটিভিতে এই অ্যাক্সিডেন্ট নিয়ে একটা এড দেখাতো, আগে একটা মোমবাতি জ্বালায়ে ট্যাংকের ভিতর দড়ি দিয়ে নামায়ে দিতে, মোম নিভে গেলে বুঝতে হবে বিষাক্ত গ্যাস আছে আর জ্বলে থাকলে গ্যাস নাই, এটা এখন দেখায় কিনা জানিনা..
    Total Reply(0) Reply
  • ড্যানিয়েল সুশান্ত ১ আগস্ট, ২০১৯, ১:২০ এএম says : 0
    অজ্ঞতাই এতোগুলো মৃত্যুর জন্য দায়ী, যেকোন ট্যাংক খুলে প্রথমে ব্লোয়ার দিয়ে ভেন্টিলেশান করতে হয় মিনিমাম এক ঘন্টা, তারপর গ্যাস টেষ্ট....
    Total Reply(0) Reply
  • Nikhil Kanti ১ আগস্ট, ২০১৯, ১:২০ এএম says : 0
    সরকারের দায়বদ্ধা অবশ্য কিছুটা আছে,কারন সরকার শ্রমিকদের সাধারণ নিরাপত্তার প্রশিক্ষন দেয়নি। তবে শ্রমিকরা মোটামুটি জেনেও এই বিষয় তেমন সচেতন হবার মোটেই চেষ্টা করেনা।
    Total Reply(0) Reply
  • Samaresh Biswas ১ আগস্ট, ২০১৯, ১:২১ এএম says : 0
    এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে,তবুও কারো হুশ হয়না কেন? অনেকেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে আবার এদের মধ্যে কারো কারো নিরাপত্তা সংক্রান্ত বোধও অত্যন্ত কম।তবে সরকারের উচিৎ, এ বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা।
    Total Reply(0) Reply
  • Mahmudul Hasan Mamun ১ আগস্ট, ২০১৯, ১:২১ এএম says : 0
    খুঁজলে অনেকেরই দোষ পাওয়া যাবে। নির্মাণ শ্রমিকদের সংগঠন খুব শক্তিশালী। অথচ তাদের নিজেদের শ্রমিকদের জন্য কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা বা নিরাপত্তার কোনো গাইডলাইন নাই। পৌরসভারও কোনো দিকনির্দেশনা নাই। আমাদের দেশের শ্রমিকরা কতটা নিরাপত্তাহীন ভাবে কাজ করে, তা দেখলে অবাক হতে হয়। এখানে শ্রমিকের মৃত্যু কোনো ব্যাপার নয়। তেজপাতার মতো শ্রমিকের জীবনের মূল্য হয়ে গেছে। তবে শ্রমিকদেরও নিজেদের নিরাপত্তা নিজেদেরই ভাবা দরকার। ছোট ছোট কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে আজকের মত এমন দুর্ঘটনা এড়ানো যেত। যেমন একটি হারিকেন জ্বালিয়ে দড়ি বেঁধে টাংকির ভেতর নামিয়ে দিলে যদি দেখা যায় হারিকেন নিভে যায় তাহলে বুঝতে হবে অক্সিজেন ভেতরে নেই এবং বিষাক্ত গ্যাস রয়েছে। তখন ঢাকনা খোলা রাখতে হবে এবং ভেতরে পাইপ দিয়ে প্রচুর পানি দিতে হবে। সেপ্টিক ট্যাংক মানেই বিষাক্ত গ্যাস চেম্বার। এমনই আরো একটি মৃত্যুফাঁদ হলো বিদ্যূৎ লাইন। উচু বিল্ডিংগুলোতে কাজ করার সময় পাশ দিয়ে যাওয়া বিদ্যূতের তারে পিষ্ঠ হয়ে অনেক শ্রমিক মারা যাচ্ছে। কোনো ব্যবস্থা নেই।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ