Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নদ-নদীর পানি হ্রাসে বন্যার উন্নতি রোদ-মেঘ-বৃষ্টিপাতের লুকোচুরি মধ্যশ্রাবণে

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৩১ জুলাই, ২০১৯, ১২:০০ এএম

আবহাওয়ার বিপরীতমুখী আচরণ অব্যাহত রয়েছে। মধ্য-শ্রাবণে এসেও পঞ্জিকা ঋতুর ‘বর্ষাকাল’ কখনও বৃষ্টি-বজ্রবৃষ্টিতে সিক্ত। আবার কখনও সূর্যের কড়া রোদে ও ভ্যাপসা গরমে খটখটে রুক্ষ। কখনওবা হিমেল দমকা বাতাসের সঙ্গে মেঘলা গুমোট দিনমান। এক সপ্তাহেরও বেশিদিন ধরে চলছে রোদ-মেঘ-বৃষ্টির লোকোচুরি। ‘স্বাভাবিক’ হিসেবে ধরলে যা হওয়ার কথা ভাদ্রের শেষে ও আশ্বিন মাসে।

গতকাল (মঙ্গলবার) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টার বৃষ্টিপাতের রেকর্ডে দেশের বিভিন্ন স্থান ভেদে গরমিল বা অসঙ্গতি লক্ষ্য করা যায়। এ সময় ঢাকা, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগে এবং উত্তরাঞ্চল অর্থাৎ রাজশাহী ও রংপুর বিভাগে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগে তুলনামূলক বৃষ্টিপাত হয় বেশি। সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত ফেনী ও টেকনাফে ৬৭ মিলিমিটার। এ সময় ঢাকায় ১১, চট্টগ্রামে ৪৭, সিলেট ও রংপুরে ৬, খুলনায় ২৭, বরিশালে ১৭ মি.মি. বৃষ্টিপাত হয়। অনেক এলাকায় আদৌ বৃষ্টি ঝরেনি।

গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল দিনাজপুরে ৩৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দিনাজপুরে দিনভর কোনো বৃষ্টিপাত হয়নি। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল টেকনাফে ২৪ ডিগ্রি সে.। ঢাকার তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩১.৬ এবং সর্বনিম্ন ২৬.৯ ডিগ্রি সে.।

আজ (বুধবার) সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানা গেছে, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল, ঢাকা ও রংপুর বিভাগের অনেক স্থানে, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও হতে পারে মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ।

পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ার তেমন পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। তবে এর পরের ৫ দিনে অর্থাৎ আগামী সপ্তাহ থেকে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে। বর্তমানে বর্ষার মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর মোটামুটি সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপ এবং বাংলাদেশের উপক‚লের সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য দুইই কেটে গেছে। সমুদ্র প্রায় শান্ত স্বাভাবিক হয়ে আসছে। এরফলে সমুদ্র বন্দরসমূহকে দেওয়া সতর্ক সঙ্কেত গতকাল তুলে নেয়া হয়।
পানি হ্রাসে বন্যার উন্নতি

নদ-নদীর প্রধান অববাহিকা ব্রহ্মপুত্র-যমুনায় পানি বিপদসীমার নিচে নেমে আরও হ্রাস পাচ্ছে। গঙ্গা নদীর পানির সমতল নিচে এবং কমতির দিকে রয়েছে। পদ্মা উজান ও ভাটিতে বিপদসীমার নিচে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি হ্রাস অব্যাহত রয়েছে। আপাতত উজানে উত্তর-পূর্ব ভারতে ও এর সংলগ্ন দেশের অভ্যন্তরে নদ-নদী অঞ্চলে তেমন বৃষ্টিপাত নেই। এরফলে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত রয়েছে।

পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সর্বশেষ তথ্যে গতকাল মঙ্গলবার ৬টি নদ-নদী ৮টি পয়েন্টে বিপদসীমার ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হয়। সবকটি পয়েন্টে পানি হ্রাস অব্যাহত আছে। গত সোমবার ৭টি নদী ১০ স্থানে বিপদসীমার উপর ছিল। দেশের প্রধান নদ-নদীর ৯৩টি পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল ১৮টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি, ৭২টিতে হ্রাস এবং ৩ জায়গায় পানি অপরিবর্তিত থাকে। সোমবার ২৩টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি, ৬৫টিতে হ্রাস ও ৫টি স্থানে পানি অপরিবর্তিত ছিল।

নদ-নদী প্রবাহের পূর্বাভাসে জানা গেছে, দেশের প্রধান সব নদ-নদীর পানির সমতল হ্রাস পাচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় এসব নদ-নদীর পানির সমতল হ্রাস অব্যাহত থাকতে পারে। গতকাল বিকেল পর্যন্ত সুরমা নদী একটি পয়েন্টে, কুশিয়ারা তিনটি পয়েন্টে এবং তিতাস, ধলেশ্বরী, আত্রাই ও গুর নদী একটি করে পয়েন্টে বিপদসীমার কিছুটা ঊর্ধ্বে প্রবাহিত হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ