পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রপাতির আড়ালে চীন থেকে আনা মদভর্তি জাহাজ এখনও কর্ণফুলী নদীতে ভাসছে। আটকের সাত দিন পরেও জাহাজটিতে কি পরিমাণ মাদকদ্রব্য আনা হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ওই জাহাজে আসা ৬৬৯ মাস্টার কার্টন খুলে শতভাগ কায়িক পরীক্ষা শুরু করা নিয়ে এখনও চট্টগ্রাম বন্দর ও কাস্টম হাউসের চিঠি চালাচালি চলছে। এ অবস্থায় মিথ্যা ঘোষণায় আনা কোটি কোটি টাকা মূল্যের মাদকদ্রব্য সরিয়ে ফেলার আশঙ্কা প্রবল হচ্ছে।
এদিকে জাহাজবোঝাই মদ-বিয়ারের চালান আটকের এক সপ্তাহ পর চীনা কোম্পানি তাদের দোষ স্বীকার করে নিয়ম অনুযায়ী শুল্ককর পরিশোধের মাধ্যমে মালামাল ছাড়িয়ে নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এ আগ্রহের কথা জানিয়ে কোম্পানির পক্ষ থেকে গতকাল মঙ্গলবার কাস্টম কমিশনারের কাছে একটি পত্র দেয়া হয়েছে।
গত ২৪ জুলাই পটুয়াখালীর পায়রা বন্দরের অদূরে চায়না-বাংলাদেশ পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি লিমিটডের যন্ত্রপাতির নামে আনা জাহাজভর্তি বিদেশি মদ-বিয়ারের বিশাল চালান আটক করে কাস্টম কর্তৃপক্ষ। চীনের সাংহাই থেকে আসা জাহাজ এমভি কিউ জি শান থেকে বার্জে মালামাল খালাস করার সময় চালানটি আটক করা হয়। তখন ১৯টি মাস্টার কার্টুন খুলে ১৮টিতে পাওয়া যায় মদ-বিয়ারের বিশাল চালান। মাত্র একটি কার্টুনে মিলে কিছু যন্ত্রপাতি। ঘোষণা অনুযায়ী, বড় জাহাজটিতে ছিল মোট ৬৬৯টি মাস্টার কার্টুন।
জাহাজটিতে আনা সব মাস্টার কার্টুনেই মদ-বিয়ারের চালান রয়েছে বলে ধারণা করছেন কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা। এসব কার্টনের মধ্যে এখনও ২০টি কার্টন বড় জাহাজটিতে রয়ে গেছে। বাকি কার্টনগুলো তিনটি বার্জে খালাস করে রাখা হয়েছে। বর্তমানে জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের তিন নম্বর জেটির উল্টোদিকে সিইউএফএল জেটিতে রয়েছে। কার্টনভর্তি বার্জ তিনটি রাখা হয়েছে বন্দরের বিভিন্ন পয়েন্টে।
মিথ্যা ঘোষণায় আনা পণ্য ধরা পড়ার পরদিন কাস্টম হাউসের পক্ষ থেকে বার্জ ও জাহাজে থাকা মাস্টার কার্টনগুলো বন্দরের শেডে খালাস করতে বন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়। কাস্টম হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়, মাস্টার কার্টনগুলো আকারে বড় এবং ওজন বেশি হওয়ায় চীন থেকে আসা জাহাজের নিজস্ব ক্রেন দিয়ে বন্দরের শেডে নামাতে হবে। সব কার্টন নামানোর পরেই তা একে একে খুলে সেখানে কি পরিমাণ মদ-বিয়ার এসেছে তার তালিকা করার প্রস্তুতিও নেয় কাস্টম কর্তৃপক্ষ। এজন্য ১৬ সদস্যের কমিটিও গঠন করে কাস্টম হাউস। তবে গতকাল পর্যন্ত এসব কার্টন বন্দরের শেডে নামানোর কোন প্রক্রিয়াই শুরু হয়নি।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের যুগ্ম কমিশনার সাধন কুমার কুন্ডু দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, বন্দরের পক্ষ থেকে মাদার ভেসেলে থাকা কার্টুনগুলো বন্দরের শেডে নামিয়ে আনার কথা বলা হলেও পরে বন্দর কর্তৃপক্ষ শেডের বদলে কাস্টমের নিলাম শেডে কার্টনগুলো নামিয়ে আনার প্রস্তাব দেয়। বন্দরের পক্ষ থেকে যুক্তি দেখানো হয়, কার্টনগুলোতে ঘোষণা বহির্ভূত পণ্য থাকায় সেটি খালাস করতে দীর্ঘ সময় লেগে যেতে পারে। আর এত সময় বন্দরের শেডে এসব কার্টন রাখা সম্ভব না। তিনি বলেন, নিলাম শেডেও এত বিপুল সংখ্যক কার্টন রাখা এবং শতভাগ কায়িক পরীক্ষা অসম্ভব। আমরা বন্দর কর্তৃপক্ষকে বিকল্প কোন শেডে কার্টনগুলো খালাস করতে গতকাল আরও একটি চিঠি দিয়েছি।
চীনা কোম্পানির পক্ষ থেকে কাস্টম কমিশনারের সাথে তাদের দুই প্রতিনিধি দেখা করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, তারা শুল্ককর দিয়ে জাহাজে আনা মালামাল ছাড়িয়ে নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তারা দাবি করছেন, নিজেদের ব্যবহারের জন্যই মদ-বিয়ার এবং অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী আনা হয়েছে। বাংলাদেশের শুল্ক আইন সম্পর্কে ধারণা না থাকায় তারা এভাবে পণ্য এনেছেন (মিথ্যা ঘোষণা) বলেও দাবি করেন। জাহাজটিতে কি পরিমাণ ঘোষণা বহির্ভূত পণ্য রয়েছে সেটা জানার পরেই তাদের ওই আবেদন বিবেচনা করা হবে বলে জানান তিনি। দীর্ঘদিন বন্দরের বিভিন্ন পয়েন্টে বার্জ ও জাহাজে পড়ে থাকা কার্টন থেকে মদ-বিয়ার সরিয়ে ফেলার আশঙ্কা প্রসঙ্গে সাধন কুমার কুন্ডু বলেন, এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। জাহাজ ও বার্জগুলো এখন বন্দরের নিরাপত্তা হেফাজতে রয়েছে। এরপরও কাস্টম হাউসের পক্ষ থেকে নৌ পুলিশ ও কোস্টগার্ডকে সতর্ক নজরদারি করতে বলা হয়েছে।
দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে ওই প্রতিষ্ঠানের নামে বিদ্যুৎকেন্দ্রের মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি করা হচ্ছে। অনেকের ধারণা, এ চালানের মতো আগের চালানেও মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য এসেছে। ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক মাত্র এক শতাংশ। অনেকটা নামমাত্র শুল্ককরে এসব চালান বন্দর থেকে খালাস করে নেয়া হয়। অথচ মদের ক্ষেত্রে শুল্ককর ৩৯৬ শতাংশ। অন্যদিকে বিয়ারের ক্ষেত্রে শুল্ককরের হার ২৯৩ থেকে ৪৮৮ শতাংশ। এ চালানের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার শুল্কফাঁকির চেষ্টা চলছিল বলে ধারণা কাস্টম হাউসের কর্মকর্তাদের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।