Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ওয়াসার পানি নিয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত চাইলেন হাইকোর্ট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৩১ জুলাই, ২০১৯, ১২:০১ এএম

ঢাকা ওয়াসার পাতলা খান লেন এবং মিরপুর জোনের পানিতে আর কোনো ব্যাক্টেরিয়া নেই বলে দাবি করেছে ওয়াসা। গতকাল মঙ্গলবার দুটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদন দাখিল করে এ দাবি করা হয়। তবে প্রতিবেদনে উল্লেখিত বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামি ২৩ অক্টোবরের মধ্যে এ মতামত দিতে হবে। গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি জেবিএম হাসান এবং বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এ দুটি জোনের পানি সংশোধন করে গতকাল হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করে বুয়েট ও ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ডায়রিয়াল ডিজিজ রিসার্চ, বাংলাদেশের (আইসিডিডিআরবি)। এ বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার আইনজীবী আদালতকে জানান, ওয়াসার ওই দুই জোনের পানি (ফিকেল কলিফর্ম ও ইকোলাই ব্যাকটেরিয়া) সংশোধন করা হয়েছে। পরে স্যাম্পল নিয়ে টেস্ট প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে। ঢাকা ওয়াসার পানির নমুনা পরীক্ষার জন্য গঠিত ৪ সদস্যের কমিটির প্রতিবেদনে ওই দুই এলাকার পানিতে কলিফর্ম ও ইকোলাইয়ের উপস্থিতির কথা রয়েছে। পরে দুই এলাকার পানির বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত চান আদালত। কমিটিকে এই প্রতিবেদনের ওপর আগামী ২৩ অক্টোবরের মধ্যে মতামত দিতে বলা হয়। বিশেষজ্ঞ মতামত পাওয়ার পর প্রয়োজনে আবারও ওয়াসার পানি পরীক্ষা করার আদেশ দেয়া হবে বলে জানান হাইকোর্ট। রিটের পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ২৩ অক্টোবর।
গতকাল শুনানিকালে আদালত বলেন, ওয়াসার কাজ সুপেয় বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করা, যা চলমান প্রক্রিয়া। সরকারপক্ষে শুনানিতে অংশ নেন এটর্নিজেনারেল মাহবুবে আলম। ওয়াসার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ এম মাসুম। রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তানভীর আহমেদ।

আদালত থেকে বেরিয়ে ওয়াসার আইনজীবী এ এম মাসুম বলেন, ওই দুই জোনের পানি সংশোধন করা হয়েছে। বুয়েট ও আইসিসিডিআরবি পানি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দিয়েছে। সেখানে আর কোনো ব্যাকটেরিয়া নেই। আমরা বলেছি যেখানে ক্লোরিন থাকবে সেখানে ব্যাকটেরিয়া থাকবে না। বৈজ্ঞানিকভাবে এক সঙ্গে দুটি থাকার সুযোগ নেই। এ কারণে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের ‘রিমার্কস’ চেয়েছেন আদালত। তা পাওয়ার পর পরবর্তী ছুটির পরে এটি আবার আসবে। মাসুম আরও বলেন, আমরা এখন পদ্মা ও মেঘনার দিকে যাচ্ছি। পদ্মা এবং মেঘনার পানি অনেক ফ্রেশ। তখন এ ধরণের অভিযোগ আর থাকবে না।

আদালত থেকে বেরিয়ে তানভীর আহমেদ বলেন, আজ ওয়াসা যে প্রতিবেদন দিয়েছে সেটিতেওনারা স্বপ্রণোদিত হয়ে টেস্ট করেছে আইসিসিডিআরবি এবং বুয়েটে। নিজেরা পানি দিয়েছে। সে পানির স্যাম্পল ‘আনসিল্ড’। এ প্রীতবেদনে বলা হচ্ছে পানি সুপেয়। বিষয়টা যেহেতু ‘হাইলি টেকনিক্যাল’ কোর্ট বলেছে , এ দুইটা রিপোর্ট যারা এক্সপার্ট ছিলো (আদালতের নির্দেশে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি) তাদের কাছে যাবে। তারা এ রিপোর্টের আঙ্গিকে একটা কমেন্ট করবে, যে কী ধরণের পদক্ষেপ নিলে আমরা সুপেয় পানি পাবো। তিন মাস পরে এ কমেন্ট পাওয়ার পরে কোর্ট যদি দেখেন আরেকটা টেস্ট করার দরকার, তাহলে টেস্ট করবে। পানি পরীক্ষায় আদালতের নির্দেশে গঠিত চার সদস্যের কমিটির প্রতিবেদন গত ৭ জুলাই আদালতে উপস্থাপন করা হয়। সেই প্রতিবেদনে ঢাকা ওয়াসার ১০টি বিতরণ জোনের ৩৪টি নমুনার মধ্যে ৮টি পানির নমুনায় মলের অস্তিত্ব ও ব্যাকটেরিয়াজনিত দূষণ রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
আগে ২০১৮ সালের ১২ অক্টোবর ‘অনিরাপদ পানি পান করছে সাড়ে ৭ কোটি মানুষ’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ হয় গণমাধ্যমে। সেটি সংযুক্ত করে ওই বছরের ১৪ অক্টোবর রিট করেন সুপ্রিমকোর্টবারের আইনজীবী তানভীর আহমেদ। সেবছর ৬ নভেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। ওয়াসার পানির মান পরীক্ষায় চার সদস্যের কমিটি গঠন করতে বলেন আদালত। গত ১৮ এপ্রিল স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ