পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সুন্দরবন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ও একমাত্র ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল যা রয়েল বেঙ্গল খ্যাত বাঘের আবাসস্থল হিসাবে বহুল পরিচিত। অথচ সেই বাঘ রক্ষায় পিছিয়ে বাংলাদেশ। প্রধানত সুন্দরবনের বাঘের স্বাভাবিক জীবনচক্রের জন্য যে স্বাদু পানি, শিকার ও গহিন জঙ্গল ছাড়াও নিরাপদ প্রজনন ব্যবস্থা থাকা দরকার তার কোনোটাই বর্তমানে যথেষ্ঠ নয়।
চার দেশে বাঘের সংখ্যা বাড়লেও সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা দিন দিন কমছে। বাংলাদেশে এখনো অজানাই রয়ে গেছে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা আসলে কত। আজ বিশ্ব বাঘ দিবস। দিনটি নানা কর্মসূচিতে পালন করা হচ্ছে।
বন বিভাগের তথ্যানুযায়ী, সুন্দরবনে ২০০১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ১৮ বছরে ৩৫টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। সুন্দরবনের মোট আয়তনের শতকরা প্রায় ৬০ ভাগ বাংলাদেশে এবং চল্লিশ ভাগ ভারতে। বনবিভাগের সমীক্ষা অনুসারে ২০০৪ সালে বাংলাদেশে মোট বাঘের সংখ্যা ছিল ৪৪০টি, যা ২০১৫ সালে এসে দাঁড়ায় মাত্র ১০৬টিতে। গত মে মাসে বন বিভাগ জানায়, সুন্দরবনে জরিপ চালিয়ে ১১৪টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার পাওয়া গেছে, এ সংখ্যা চার বছর আগের চেয়ে আটটি বেশি।
ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে বাঘ গণনার এ জরিপ চালানো হয়। এবারের জরিপে পুরুষ বাঘের চেয়ে স্ত্রী বাঘের সংখ্যা বেশি পাওয়া গেছে। একে উদ্বেগজনক বলছেন বিশেষজ্ঞরা। মোট চারটি ধাপে তিনটি বøকে ১৬৫৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় ক্যামেরা বসিয়ে ২৪৯ দিন ধরে পরিচালিত ওই জরিপে ৬৩টি পূর্ণ বয়স্ক বাঘ, ৪টি জুভেনাইল বাঘ (১২-১৪ মাস বয়সী) এবং ৫টি বাঘের বাচ্চার (০-১২ মাস বয়সী) ২৪৬৬টি ছবি পাওয়া যায়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা দিন দিন কমছে সাত কারণে। যেমন বাঘ শিকার ও দেহাবশেষ পাচার, বাঘ সমৃদ্ধ বনাঞ্চল ধ্বংস, বাঘের আবাসস্থলের চারপাশে শিল্প ও কলকারখানা স্থাপন, বাঘ শিকার করার জন্য ফাঁদ ও অবাধে বিষটোপের অপব্যবহার, বাঘের খাদ্য শিকার প্রাণি নিধন ও গোশত বাজারজাতকরণ। বন বিভাগের দেয়া তথ্যানুযায়ী, ২০০০ থেকে ২০১৮ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সুন্দরবন অঞ্চলে ৪৪টি বাঘ হত্যার ঘটনা ঘটে।
বাঘ নিয়ে গবেষকরা বলেন, পরিবর্তিত পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ এলাকার সুন্দরবনের বাঘ স্থান পরিবর্তন করে থাকে। বনে গভীর জঙ্গল না থাকায় বাঘ তার নিরাপদ আবাসন হারিয়েছে। বাঘ সচরাচর নিঃশব্দ এলাকা পছন্দ করে। সূত্র অনুযায়ী, ২০১৫ সালে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘ ছিল ১০৬টি। পরের বছর ২০১৬ সালে বন বিভাগের বাঘ গণনায় পাওয়া গেছে ১২২টি। তাঁর মতে, ২০১৮ সালে বাঘের সংখ্যা এখন বেড়ে দাঁড়ায় ১৩০টি। পাশাপাশি নতুন করে যুক্ত হয়েছে বিষটোপে বাঘ শিকার, শাবক পাচার, পিটিয়ে ও গুলি করে বাঘ হত্যার ঘটনা। চোরাকারবারিরা শাবকও দেশ-বিদেশে পাচার করে আসছে।
বাংলাদেশ পরিবেশ ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সোসাইটির মহাসচিব মো. আজগর হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, বাঘ সুন্দরবনের অমূল্য সম্পদ। বর্তমান সরকার সুন্দরবন রক্ষায় নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বাড়াতে হলে নতুন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ ছাড়া ক্যাপটিভ বাঘ শাবক লালন-পালনের জন্য বিদেশ থেকে আমদানি করতে হবে। সুন্দরবনে পুরুষ বাঘ সংখ্যায় বেশি হলেও বাঘিনীর সংখ্যা কম। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর একটি বাঘিনী একবারে দুই থেকে চারটি বাচ্চা দেয়।
জানা গেছে, জন্ম দেয়ার পর থেকে বাঘিনী শিকার ধরা ছাড়াও স্বাভাবিক চলাফেরা সম্পূর্ণ বন্ধ করে বাচ্চাগুলোকে নিয়ে নিরাপদ জায়গায় লুকিয়ে থাকে। এ সময় শাবকগুলো মায়ের সঙ্গে চলাফেরার যোগ্য হয়ে ওঠা পর্যন্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করে বাঘিনী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।