পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
‘এই নিয়েছে ঐ নিল যা! কান নিয়েছে চিলে/ চিলের পিছে মরছি ঘুরে আমরা সবাই মিলে’ (শামসুর রাহমান)। কবির এই ‘পন্ডশ্রম’ কবিতার ‘চিল কান নিয়েছে কি না’ যাচাই না করার মতোই ‘ছেলেধরা’ গুজবে পৈচাশিকভাবে নিরীহ মানুষ পিটিয়ে মারছি। সমাজবদ্ধ মানুষ হয়েও বনের হিংস্র পশুকেও হার মানাচ্ছি নিষ্ঠুরতায়। ছেলেধরা গুজবে সারাদেশে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আর বিপন্ন মানুষের হাহাকার। একদিকে বন্যা দুর্গত লাখ লাখ বিপন্ন মানুষ, পাশে কেউ নেই; ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে কান্ডজ্ঞানহীন কথাবার্তা। অন্যদিকে ছেলেধরা গুজবে সর্বনাশ।
ছেলেধরা গুজবে ‘কান হারানোর মতোই’ তসলিমা বেগম রেনুদের প্রাণ হারাতে হয়; অবুঝ শিশু তুবাদের মা হারাতে হয়। এই আধুনিক যুগে ডিজিটাল মাধ্যমে গুজব ছড়ানোয় ‘বলি’ হচ্ছেন তুবার মা ছাড়াও প্রতিবন্ধী এবং অসহায় নিরীহ মানুষ। আবার গুজবের মধ্যে মন্ত্রী-এমপি-মেয়রের কান্ডজ্ঞানহীন কথাবার্তা গুজবের রাশ টেনে ধরার পরিবর্তে গুজবের ডালপালা ছড়িয়ে দিচ্ছে। দায়িত্বশীল চেয়ারে বসে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করতে ‘উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে’ চাপানোর চাতুরি বুঝে ফেলে গুজব রটনাকারীরা হয়ে পড়েন আরো বেপরোয়া। নির্বিবাদে ছড়ান গুজবের ডালপালা।
গুজবের হাত-পা, কান বলে কিছুই নেই। তবুও গুজব ঘূর্ণিঝড়-টর্নেডোর চেয়েও শক্তিশালী। ষাট-সত্তুর দশকে কমিউনিস্টদের ‘শ্রেণি শত্রু খতম কর’ গুজবে কতজনের যে প্রাণ ‘বলি’ হয়েছে হিসাব নেই। এমনকি ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান বনাম ভারতের যুদ্ধের সময় ভারতীয় তরুণদের উষ্কে দিতে গুজব ছড়ানো হয় ‘পাকিস্তান হাজার হাজার ভারতীয় সৈনিক হত্যা করেছে। পাকিস্তানের সৈনিকরা যে কোনো সময় দিল্লির দখল নিয়ে দিল্লির জামে মসজিদে নামাজ আদায় করবে’। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলেও সরকারকে অস্থিতিশীল করতে জাসদ গণবাহিনী গুজব ছড়িয়ে মানুষ হত্যা করতো। ভারতে এখন গরু হত্যার গুজব ছড়িয়ে মুসলিম হত্যা মামুলি ঘটনা। উত্তর প্রদেশে দাদরিতে গরুর গোশত রাখা গুজব ছড়িয়ে মোহাম্মদ আখলাক; একই গুজবে কাশ্মীরের উধমপুরের চেনানি গ্রামের ট্রাকচালক জাহিদ রাসুল বাট ও তার হেলপার শওকত আহমেদ দার, মধ্যপ্রদেশের হারদা জেলায় নাসিমা বানো ও তার স্বামী মুহম্মদ হুসেইনকে ট্রেন থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা ঘটনা আলোড়ন তুলেছিল। সব খুন হয়েছে গুজব ছড়িয়ে। ’৬৫ এ পাক-ভারত যুদ্ধে গুজব ছড়িয়ে ভারতের, ভারতে মুসলিম হত্যায় বিজেপির, বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে গুজব ছড়িয়ে জাসদ-গণবাহিনী এবং শ্রেণি শত্রু খতম গুজব ছড়িয়ে হয়তো নকশালরা লাভবান হতেন। কিন্তু বাংলাদেশে ‘পদ্মা সেতুতে মাথা লাগা’ বা ছেলেধরা গুজব ছড়ালে কোনো ধর্মের, কোন মহলবিশেষ বা কোন শ্রেণির মানুষের লাভ? সবাই একই সমাজে বসবাস করছি। গুজবে যে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে তা সবার জন্যই আতঙ্ক ও উদ্বেগের। তাহলে কেন গুজব ছড়ানো হচ্ছে? যে দুষ্টচক্র গুজব ছড়াচ্ছে তাদের সনাক্ত না করে কেন বিএনপি-জামায়াত বা বিদেশ থেকে গুজব আমদানির মতো মনগড়া তথ্য তুলে ধরা হচ্ছে?
দেশে রাজনীতি ‘নেই’ হয়ে গেছে অনেক আগেই। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভাল নয়। রাজনৈতিক বৈরিতার কারণে সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে অবিশ্বাস জেঁকে বসেছে। ছেলেধরা আতঙ্ক সর্বত্রই। কেউ ‘ছেলেধরা’ শব্দ উচ্চারণ করলেই অচেনা নিরীহদের ওপর হামলে পড়ছে মানুষ রুপি নরপশু। রক্ত ঝড়ছে প্রাণ যাচ্ছে। গুজবে কান না দেয়ার জন্য মাইকিং করে জনগণকে সতর্ক করছে পুলিশ। কিন্তু রাজনৈতিক কাজে তাদের অতি পক্ষপাতিত্ব, নির্বাচনে বিতর্কিত ভূমিকাসহ নানাবিধ কারণে বাহিনীটির প্রতি মানুষের আস্থাহীনতা তৈরি হয়েছে। ক্রসফায়ার ও বন্দুকযুদ্ধে মানুষ হত্যা এবং মাদকবিরোধী অভিযানের নামে ধারাবাহিক মানুষ হত্যার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। হারানো ইমেজ পুনরুদ্ধারে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে মনে হয় না। তারপরও ছেলেধরা গুজব ঠেকাতে মাইকিং সময়োপযোগী পদক্ষেপ।
গুজবের হাত-পা থাকুক বা না-ই থাকুক, ভাসতে ভাসতেই পৌঁছে যায় হাজার মানুষের কানে। ডিজিটাল যুগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্লগ, ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটআপের মাধ্যমে শহর থেকে গ্রামান্তরে, দেশ থেকে দেশান্তরে গুজব পৌঁছে যায়।
জাতি হিসেবে আমরা হুজুগপ্রিয় এবং গুজবপ্রিয়। শুধু প্রিয় নয়, গুজবের খবর পেলে আশপাশে ঘুর ঘুর করা স্বভাব। গুজবের বৃক্ষ তৈরি সেই বৃক্ষের শাখা-প্রশাখা ছড়ানোয় আমাদের জুড়ি নেই। গুজবের গন্ধ পেলেই নাক উসখুস করে, কান খাড়া হয়। বিচক্ষণ বুদ্ধিমান মানুষও গুজবে হয়ে যান বিবেকহীন জ্ঞানপাপী! বাতাসে গুজবের গন্ধ পেয়ে ম্যাজিকের মতো ঘটনার ঘনঘটা সাজাই, মনের মাধুরী মিলিয়ে গল্প বানাই; সেটা ফেসবুক নামের মেশিনে ফেলে সকাল-বিকেল তৈরি করি নতুন নতুন চটকদার মিথ্যা গল্প। আবার কেউ কেউ এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করি যে মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব কি না তা নিয়ে সন্দেহের সৃষ্টি হয়।
গুজব ছড়িয়েছে পদ্মা সেতু মানুষের মাথা চেয়েছে। পদ্মা সেতু কী প্রাণী যে মনের ইচ্ছা ব্যক্ত করবে? সেটা নিয়েই কয়েক দিন ধরে নারী, বৃদ্ধ, এমনকি মানসিক ভারসাম্যহীন অপরিচিত লোকজনকে ‘ছেলেধরা সন্দেহে’ মহাসমারোহে বাঁশ, রড, লাঠি দিয়ে উন্মত্তের মতো পিটিয়ে মারা হচ্ছে। শত শত হাজার হাজার মানুষের সামনে ঘটছে এই নিষ্ঠুর কান্ড। কেউ কেউ ভিকটিমকে বাঁচানোর চেষ্টা না করে মোবাইলে ভিডিও করে ফেসবুকে ছেড়ে দিচ্ছেন। আহা! কি মানবতা!!
এই গুজবে লাভক্ষতি কার? এতে ক্ষতি হচ্ছে দেশের এবং সব মানুষের। মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান, বৌদ্ধ যে ধর্মের হোক; রাজনৈতিক পরিচয়ে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, বাম-ডান যেই যে দলই করুক; কেউ সমাজ থেকে আলাদা নয়। দলমত-ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন এই গুজবে। ‘ছেলেধরা’ গুজব ছড়ানো, কান দেয়া এবং শ্রোতে নিজেদের ভাসিয়ে দেয়া অজ্ঞতা, মূর্খতার নামান্তর। আর এটা নিয়ে অসংলগ্ন কথাবার্তা আরো ভয়াবহ কান্ডজ্ঞানহীনতার নামান্তর। দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের কেউ কেউ ‘ছেলেধরা গুজব’ দায় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপি ও জামায়াতের ওপর চাপিয়ে নিজেদের ব্যর্থতা আড়াল করার প্রয়াস পাচ্ছেন। একজন দায়িত্বশীল জনপ্রতিনিধি (মেয়র) বলেছেন, ছেলেধরা গুজবের মতো ডেঙ্গু নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। ছেলে ধরা, সাড়ে তিন লাখ ডেঙ্গু আক্রান্ত একই সূত্রে গাঁথা। দু’দিন আগে ঢাকায় ‘মশক নিধন ও পরিচ্ছন্নতা সপ্তাহ’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমন বক্তব্য কী দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেয়? তিনি আরো বলেছেন, মশা নিয়ে রাজনীতি কাম্য নয়। প্রশ্ন হলো তিনি যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটা কী রাজনীতি নয়?
২৫ জুলাই একজন মন্ত্রী ডেঙ্গু নিয়ে তথ্য দিয়েছেন এই বলে যে, বিশ্বের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে ফিলিপাইনে প্রায় ৫০০ জন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ায় প্রায় ১০০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। বাংলাদেশে ডেঙ্গু জ্বরে মাত্র ৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। ডেঙ্গু জ্বরে ৮ জনের প্রাণহানি কী তার কাছে মামুলি ঘটনা? ডেঙ্গুতে কতজনের প্রাণহানি হলে মন্ত্রীর কাছে ডেঙ্গু ‘ভয়াবহ’ মনে হবে? এ ছাড়াও আপত্তিজনক কথা বলেছেন ওই মন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের দেশে এসে যেভাবে রোহিঙ্গা পপুলেশন বাড়ে, সেভাবে মসকিউটো পপুলেশন বেড়ে যাচ্ছে।’ মন্ত্রীর কান্ডজ্ঞানহীন এই মস্করা কী শোভনীয়? গতকাল ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের শরীক ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ‘মশা তাড়ানোর ওষুধ কেনায় দুর্নীতি আর অদক্ষতা ঢাকতেই ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবের খবরকে মেয়র সাঈদ খোকন ‘গুজব’ বলেছেন। আর স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হারকে পাশের দেশগুলোর সাথে তুলনা করে বুঝাতে চাচ্ছেন দেশের মানুষের মৃত্যু তার কাছে কিছু না’। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের অবশ্য বলেছেন, ‘বর্তমানে ডেঙ্গু যেভাবে ছড়িয়ে পড়ছে, এখানে দল দেখে এডিশ মশা কাউকে কামড় দেবে না। সবাইকে সচেতন ও সতর্ক হতে হবে। সবার উচিত দায়িত্বশীল কথাবার্তা বলা’।
শাসক দলের নেতাদের কথায় পরিষ্কার ডেঙ্গু যে ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যারা চিকিৎসা দেন ডেঙ্গুকে আক্রান্ত হয়ে তাদেরই তিনজন চিকিৎসক প্রাণ হারিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এডিস মশার উপদ্রবে অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আল্লাহ যে কাউকে ডেঙ্গু জ্বর না দেয়’। বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি মিয়া সেপ্পো ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশের ডেঙ্গু জ্বরের পাদুর্ভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। দুদিন আগে দেয়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন্স সেন্টার অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের হিসাব অনুযায়ী দেশে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ৯ হাজার ২৫৬ জন। এটা মূলত কেতাবি হিসেব। সারা দেশে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত অসংখ্য মানুষ। অনেকেই বাসায় বসেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। এতো মানুষ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন সেই ডেঙ্গু জ্বরের বাহক মশা নিয়ে মন্ত্রীর মস্করা!
বাংলাদেশে গণপিটুনির আতঙ্ক এখন চারদিকে। আতঙ্ক এমনভাবে ছড়িয়েছে সাতক্ষীরায় ভিক্ষুকরা গলায় আইডি কার্ড নিয়ে ভিক্ষা করছে এমন সচিত্র খবর মিডিয়ায় এসেছে। আর এই গুজবের উৎপত্তিস্থল নাকি দুবাই। এ তথ্য দিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘ছেলেধরা গুজব শুধু দেশে নয়, বিদেশ থেকেও প্রপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে এ ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে’। আমাদের কথা গুজব ভারত, আমেরিকা, দুবাই যেখান থেকে ছড়ানো হোক সেটা নয়; এই মুহূর্তে গুজব যে ‘নিছক গুজব এবং মিথ্যার বেসাতি’ জনগণের মধ্যে সেই বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতে হবে।
দেশে কার্যত কোনো কিছুই স্বাভাবিক চলছে না। মানুষ শুধু ভোটের অধিকার নয়, নাগরিক সুবিধা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা এমনকি বন্যায় বিপন্ন মানুষ ত্রাণ সুবিধা থেকেও বঞ্ছিত। দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বন্যা। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দী। সরকারি হিসেবে গত ১৫ দিনে বিভিন্ন বন্যাক্রান্ত জেলায় ১০৪ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। দুর্গতদের করুণ আর্তি শোনার কেউ নেই। এর মধ্যে ডেঙ্গু জ্বর এবং পদ্মা সেতু মাথা চেয়েছে মিথ্যা প্রচারণায় ছেলেধরা গুজবে মানুষকে পিটিয়ে মারার দৃশ্য। রাজধানী ঢাকা থেকে শুরু করে প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলে পর্যন্ত সাধারণ মানুষ পরিবারের কম বয়সী ছেলেমেয়েদের নিয়ে শঙ্কিত। স্কুলে উপস্থিতি কম। আর সুযোগ সন্ধানীদের মিথ্যা ‘গুজব প্রচার’ বিপন্ন করে তুলেছে নাগরিক জীবন। এই সময় মন্ত্রী-এমপি-মেয়রসহ দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের দায়িত্বহীন বালখিল্য কথাবার্তা এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে লক্ষ্য করে বেøম গেইম না ছুঁড়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। গুজব কারো জন্যই মঙ্গলজনক নয়। ‘মশা দলের পরিচয় দেখে কামড়ায় না’ ওবায়দুল কাদেরের এই বক্তব্য যেমন যথার্থ। তেমনি ‘ছেলেধরা’ গুজব যাতে না ছড়ায় সে ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ জরুরী। ‘চিলে কান নিয়েছে’ শুনেই চিলের পিছে না ছুটে কানে হাত দিয়ে দেখা উচিত সত্যিই চিল কান নিয়েছে কিনা। বিজ্ঞানের বদৌলতে আমরা জাতি হিসেবে উপকৃত হচ্ছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অনেকটা ‘ছুরি’র মতো। ছুরির ব্যবহার নানাভাবে হয়। ডাক্তার অপারেশন ছুরি ব্যবহার করেন, ছিনতাইকারী ছিনতাইয়ে ব্যবহার করেন, কসাই পশু জবেহ করেন। ছুরির দোষ নেই, ব্যবহার কিভাবে হচ্ছে সেটাই আসল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দোষ নেই। সেই মাধ্যম ভাল কাজে ব্যবহার হচ্ছে না মন্দ কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে সেটাই কথা। ডিজিটাল সুযোগ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে যেমন ‘গুজব’ ছড়ানোর কাজে ব্যবহার অনৈতিক; তেমনি নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে দায়িত্বশীলদের দায়িত্বশীল আচরণও প্রত্যাশিত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।