Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

বন্যা অপরিবর্তিত

বঙ্গোপসাগরে মৌসুমী লঘুচাপ চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের শঙ্কা

শফিউল আলম | প্রকাশের সময় : ২৭ জুলাই, ২০১৯, ১২:০১ এএম

দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। উজানে ভারতের ঢল ও সেই সাথে অভ্যন্তরীণ ভারী বৃষ্টিপাতে অনেক নদ-নদীতে পানি কখনও হ্রাস কখনও বৃদ্ধি পাচ্ছে। গতকাল (শুক্রবার) পর্যন্ত উত্তরবঙ্গ, মধ্যাঞ্চল ও মধ্য-পূর্বাঞ্চল হয়ে ভাটিতে বানের পানির চাপ অব্যাহত থাকে। অনেক এলাকায় বানের পানি নামার সাথে নদীভাঙন চলছে। তীব্র ভাঙনের আশঙ্কা আরও বেড়েই চলেছে। বন্যা পরিস্থিতি হচ্ছে দীর্ঘায়িত। সর্বক্ষেত্রে বাড়ছে সর্বনাশা বন্যার ক্ষয়ক্ষতি।
রাস্তাঘাট, সড়ক, সেতু-কালভার্ট, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ অবকাঠামো এবং বসতঘর, শিক্ষা ও সরকারি প্রতিষ্ঠান, হাটবাজার, ফসলি জমি বাানের তোড়ে কোথাও পুরোপুরি কোথাও আংশিক ক্ষতির শিকার। খাদ্য, আশ্রয়, চিকিৎসা, বিশুদ্ধ পানির অবাবে লাখ লাখ বন্যার্ত অসহায় মানুষের দুঃখ-যাতনা অবর্ণনীয়। ত্রাণ সাহায্যের আশায় হাহাকার বিরাজ করছে সর্বত্র। সরকারি হিসাবে ২৬টি ও বেসরকারি হিসাবে ২৮ জেলা বন্যাকবলিত। এ যাবত অন্তত এক কোটি মানুষ বন্যায় নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। আসছে আগস্ট মাসেও বন্যার ঝুঁকির কথা জানান সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞগণ।

এদিকে গতকাল উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর এবং এর সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উপক‚লীয় এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এটি যদি জোরদার হয় তাহলে বৃষ্টিবাহী মৌসুমী নি¤œচাপে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর সক্রিয় প্রভাবে এ সপ্তাহে চট্টগ্রাম তথা দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে করে চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে অতি বর্ষণে ফের পাহাড়ি ঢল, বন্যা ও পাহাড়ধসের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাছাড়া লঘুচাপ-নি¤œচাপে এ মুহূর্তে বাংলাদেশের সংলগ্ন উত্তর বঙ্গোপসাগর উত্তাল অবস্থায় রয়েছে। ফলে ভাটির দিকে স্বাভাবিক গতিতে বানের পানি নেমে যাওয়া ব্যাহত হতে পারে।
পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র গতকাল জানিয়েছে, যমুনা ছাড়া দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি হ্রাসের দিকে। বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগের তথ্য মতে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-মধ্যাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় কুশিয়ারা এবং দেশের দক্ষিণাঞ্চলের নদীসমূহ ছাড়া অন্যান্য নদীর পানির সমতল হ্রাস পেতে পারে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-মধ্যাঞ্চল এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। তবে মধ্যাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে।
দেশের নদ-নদীসমূহের ৯৩টি পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে গতকাল ২৪ ঘণ্টায় ৩৬টিতে পানি বৃদ্ধি ও ৫৪টিতে হ্রাস পায়। ১১টি নদী ১৯ পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। আগের দিন (বৃহস্পতিবার) ৪২টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৫০টিতে হ্রাস পাচ্ছিল। ১৯টি পয়েন্টে বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

বৃষ্টিপাত পরিস্থিতি
গতকাল উজানে উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম, মেঘালয়, অরুণাচল এবং পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাঞ্চলে বৃষ্টিপাত হয় কম। আজ (শনিবার) সেসব অঞ্চলে তেমন বৃষ্টিপাত হবে না, তবে ২৮ ও ২৯ জুলাই মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ। অন্যদিকে গতকাল ২৪ ঘণ্টায় দেশের নদ-নদীপ্রধান এলাকাগুলোর মধ্যে উত্তর, মধ্যাঞ্চল ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমান কম। তবে এ সময় উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত হয়েছে দক্ষিণাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বে। এরমধ্যে পটুয়াখালীতে ১২০ মিলিমিটার, মাদারীপুরে ৭৩ মি.মি., টেকনাফে ৭২ মি.মি., বরিশালে ৬৮ মি.মি., নারায়ণহাটে ৫০ মি.মি., পাঁচপুকুরিয়ায় ৭০ মি.মি., লামায় ৫৬ মি.মি., কক্সবাজারে ৫০ মি.মি., চট্টগ্রামে ৪৪ মি.মি.।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ