পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা ভয়াবহ অবনতি হয়েছে বলে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে দলটি তার পছন্দ অনুযায়ী চিকিৎসার দাবি জানিয়েছে। গতকাল গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দলটি এ দাবি জানায়।
সংবাদ সম্মেলনে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অবিলম্বে সরকারের কাছে তার মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। তার পছন্দ অনুযায়ী দেশে অথবা বিদেশে যেখানে তিনি চিকিৎসা করতে চান, সেখানেই তার চিকিৎসা ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
গত ১৭ মাসে খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভয়াবহ অবনতি হয়েছে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আপনারা দেখেছেন, গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি তিনি কারাগারে যাওয়ার সময় অত্যন্ত সুস্থ অবস্থায় পায়ে হেঁটে গেছেন। এখন তিনি হুইলচেয়ার ছাড়া চলাফেরা করতে পারছেন না।
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়ার জিহ্বায় আলসার হয়েছে। তার ৩টা দাঁত ক্ষয় হয়ে গেছে। এই কারণে কষ্ট হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে তার দাঁতের চিকিৎসা প্রয়োজন। কয়েকটি দাঁত ফেলেও দিতে হবে। খালেদা জিয়ার শরীরে ওজন কমে গেছে বলে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, গত এক সপ্তাহে ৪ কেজি ওজন কমে গেছে। এটি একটি সতর্কবার্তা। এখন আপনারা খালেদা জিয়াকে দেখলে চিনতে পারবেন না। তিনি কিছুই খেতে পারছেন না।
একজন প্রথম শ্রেণির কয়েদির সঙ্গে যে আচরণ করা হয়, খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার চেয়ে খারাপ আচরণ করা হচ্ছে বলে দাবি করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, এটা অমানবিক, আমরা কোনোভাবে এটা মেনে নিতে পারি না। খালেদা জিয়া সঙ্গে সরকারের এমন আচরণের উদ্দেশ্য কী, প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, তার সঙ্গে এমন আচরণ করে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে কি তার জীবনের অবসান ঘটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে? এই প্রশ্নগুলো মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে।
খালেদা জিয়া সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা প্রাপ্য বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমরা খুব দ্রæত তার মুক্তি চাই। যা তিনি প্রাপ্য। সরকার প্রত্যেকবার তার জামিনে বাধা সৃষ্টি করছে। গত এক সপ্তাহে খালেদা জিয়ার ডায়াবেটিস ১৮-২০-এর নিচে নেমেছে বলে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ইনসুলিন ব্যবহারের পরেও তা নিয়ন্ত্রণে আসছে না।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. মঈন খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেএম জাহিদ হোসেন প্রমুখ।
এর আগে সকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কারামুক্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলকে নিয়ে গতকাল শেরেবাংলা নগরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি বলেন, সরকার খালেদা জিয়াসহ রাজবন্দিদের মুক্তি না দিলে বিএনপি আন্দোলন জোরদার করবে। ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে ফখরুল বলেন, এখনো সময় আছে, আপনারা রাজবন্দিদের মুক্তি দিন, দেশনেত্রীকে মুক্তি দিন, মিথ্যা মামলাগুলো প্রত্যাহার করুন। তিনি বলেন, আজকে এখানে শপথ নিয়েছি, দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য সব রকমের আন্দোলন বেগবান করব এবং দেশনেত্রীকে মুক্ত করার জন্য, আটক নেতা-কর্মীদের মুক্ত করার জন্য, তাদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করার জন্য আমরা অবশ্যই আন্দোলন গড়ে তুলতে সক্ষম হব ইনশাল্লাহ।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বিভিন্ন সময়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছিল বিএনপি, তবে তাতে সাফল্যের দেখা তারা পায়নি। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের কটাক্ষও তাদের বিভিন্ন সময়ে সইতে হয়েছে।
দুর্নীতির দুই মামলায় ১৭ বছরের সাজা নিয়ে গত দেড় বছর ধরে কারাগারে আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বর্তমানে কারা তত্ত্বাবধানে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে রেখে তার চিকিৎসা চলছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় বেআইনিভাবে তাকে ১৮ মাস যাবত আটক করে রাখা হয়েছে। এখন তিনি অত্যন্ত অসুস্থ। এই অসুস্থ অবস্থায় তিনি সঠিক চিকিৎসা পর্যন্ত পাচ্ছেন না।
আগের মতই বর্তমান সংসদকে ‘অবৈধ’ আখ্যায়িত করেন বিএনপি মহাসচিব। এ সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচনের দাবি জানান তিনি। ফখরুল বলেন, অন্যথায় এদেশের জনগণ কোনোদিনও আপনাদের ক্ষমা করবে না।
বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আহসানুল্লাহ হাসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েলসহ মহানগরের নেতা-কর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। হাবিব উন নবী খান সোহেল গত ১১ জুলাই জামিনে মুক্তি পান। তারি বিরুদ্ধে ২১২টি মামলা রয়েছে বিভিন্ন থানায়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।