পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে এবার মেট্রোরেল চালু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বন্দরনগরীর কালুরঘাট থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত সাড়ে ২৬ কিলোমিটার, সিটি গেট থেকে কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার এবং অক্সিজেন থেকে একে খান মোড় পর্যন্ত সাড়ে ১৪ কিলোমটিার মেট্রোরেল-এমআরটি লাইন চালুর প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু করেছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন-চসিক। গতকাল শুক্রবার চসিকের সম্মেলন কক্ষে এ বিষয়ে প্রাক-যোগ্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।
প্রতিবেদনে সাড়ে ৫৪ কিলোমিটারের তিনটি লাইনে ৪৭টি স্টেশনের প্রস্তাব করা হয়েছে। একেকটি স্টেশনের দূরত্ব হবে ৭০০ মিটার থেকে ২ দশমিক ৪ কিলোমিটার। ঘণ্টায় ৪৫ কিলোমিটার গড় গতিবেগ থাকবে মেট্রোরেলের। ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটির মাধ্যমে ঘণ্টায় দুই প্রান্তের ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন সম্ভব হবে। বাসস্থান ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড কনসালটেন্টস লিমিটেড নামের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের অধীনে বুয়েটের ড. সোহরাব উদ্দিন, ড. এম আজাদুর রহমান, মো. মাহবুবুল আলমসহ ২৫ জনের বিশেষজ্ঞ টিম এই প্রাক-যোগ্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন তৈরী করেন। ম্যাস রেপিড ট্রানজিটের (এমআরটি) ডেপুটি টিম লিডার মাহবুবুর রহমান তথ্যচিত্র উপস্থাপন করেন। এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান মো. জহিরুল আলম দোভাষ।
প্রকল্পের উপর আলোচনায় চুয়েটের ভিসি ও আইইবি চট্টগ্রামের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ভিশন হতে হবে দূরদর্শী। চট্টগ্রাম নগরীর আয়তন বাড়বে। ২০৪১ সালের চট্টগ্রাম কেমন হবে প্রকল্প গ্রহণে সেই দূরদর্শিতা থাকতে হবে। প্রকৌশলী আলী আশরাফ বলেন, চট্টগ্রামের জন্য এমআরটি দরকার এ বিষয়ে দ্বিমত নেই। চট্টগ্রাম এক রাস্তার শহর। হুকুম দখল, ইউটিলিটির লাইন সরানো কঠিন ও ব্যয়বহুল। তাই ৫০০ মিটার দূরে নতুন লাইনের পরিকল্পনা নিতে পারতেন।
চিটাগাং চেম্বারের সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে চ্যালেঞ্জে আছে। বে-টার্মিনাল করার উদ্যোগ নিচ্ছে। এবারের মতো পানিবদ্ধতা ও যানজট জীবনে দেখিনি। তাই এমআরটি লাইন নির্বাচনে গভীরভাবে ভাবতে হবে। এটি স্বপ্নের প্রকল্প, এর বিকল্প নেই। মীরসরাইয়ের বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরের চিন্তা করে, ৫০-১০০ বছর ব্যবহার উপযোগী এমআরটির পরিকল্পনা করতে হবে। প্রকৌশলী মো. হারুন বলেন, চট্টগ্রামের মহাপরিকল্পনা শেষ হচ্ছে। নতুন মহাপরিকল্পনা প্রয়োজন। এমআরটির প্রস্তাবনায় চট্টগ্রাম মহানগরকে ছোট আকারে চিন্তা করা হয়েছে। বড় পরিসরে চিন্তা করলে উদ্যোগ আরও ফলপ্রসু হবে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত মেট্রোরেল স¤প্রসারণ করা উচিত। স্থপতি সোহেল শাকুর বলেন, এমআরটি আধুনিক ব্যবস্থা। সঠিকভাবে না বুঝে করলে অর্থ অপচয়ের আশঙ্কা আছে। নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি আশিক ইমরান বলেন, ২০ লাখ জনসংখ্যার শহরে মেট্রোরেল অপরিহার্য। চট্টগ্রামে ৬৫ লাখ জনসংখ্যা। এ প্রকল্পের সাথে চট্টগ্রামের আশপাশের ইকোনমিক জোনগুলো সংযুক্ত রাখতে হবে। মাস্টারপ্ল্যানের আলোকে এমআরটি হওয়া উচিত। পটিয়া, রাউজান, হাটহাজারীকে এমআরটির সুবিধা দিতে হবে।
পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের নেতা প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া বলেন, মেট্রোরেল নিয়ে আরও অনেক স্টাডি লাগবে। বন্দরকে বাদ দিয়ে কিছু করা যাবে না চট্টগ্রামে। পুরো দেশের জন্য চট্টগ্রামকে বাঁচাতে হবে। বে-টার্মিনাল হলে বারিক বিল্ডিং থেকে সল্টগোলা সড়ক ফ্রি হয়ে যাবে। বন্দরের প্ল্যানিং জানতে হবে। অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে হবে। তিনি বলেন, আইএসপিএস কোড মানলে বন্দরের ওপর দিয়ে ফ্লাইওভার করা যাবে না তাতে নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে। চসিকের প্রধান প্রকৌশলী কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, এমআরটির কানেকটিভিটি বাড়াতে হবে। বাস্তবায়নে যাতে ওভারলেপিং না হয়।
সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামস বলেন, ফ্লাইওভার ও এমআরটি দুটোই দরকার। এর জন্য সমন্বয় দরকার। ঢাকায় এমআরটি কর্তৃপক্ষ করেছে। ৫০-১০০ বছরের যাত্রীর চাপ বিবেচনা করতে হবে। নগর স¤প্রসারণের বিষয় ভাবতে হবে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রকৌশলী বিধান রায় বলেন, এমআরটি চালু সাহসী পদক্ষেপ। ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটারে ৬০ হাজার যাত্রী দরকার। এমআরটি চালু হলে নগরে গাড়ি চলাচল কমে যাবে। ভবিষ্যতে হাটহাজারী, মীরসরাইকে অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ রাখতে হবে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন বলেন, এমআরটির বিষয়ে সত্যিকার ফিজিবিলিটি স্টাডি করতে হবে। অবশ্যই বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, টেলিফোন, ইন্টারনেট ইত্যাদি ইউটিলিটি সরানোর অর্থ বরাদ্দ রাখতে হবে। চসিকের প্রধান পরিকল্পনাবিদ রেজাউল করিম বলেন, এমআরটি হতে হবে সমন্বিত। উন্নয়নের জন্য চট্টগ্রামের পাহাড়, সাগর, নদীর ক্ষতি করা যাবে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।