Inqilab Logo

রোববার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭ আশ্বিন ১৪৩১, ১৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

দরকার বিশুদ্ধ পানি এত কথা বুঝি না

ওয়াসার উদ্দেশে হাইকোর্ট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ জুলাই, ২০১৯, ১২:০০ এএম

আর কোনো কথা নেই। আমরা অতশত বুঝি না। বিশুদ্ধ পানি চাই। আমাদের দরকার বিশুদ্ধ পানি। ওয়াসা যদি সমস্যার সমাধান করতে পারে ভালো। ঢাকা ওয়াসার উদ্দেশে এ মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল বুধবার বিচারপতি জেবিএম হাসান এবং বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের ডিভিশন বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। পানির নমুনায় ব্যাক্টেরিয়া ও মানব বিষ্ঠার অস্তিত্ব থাকার বিষয়ে ঢাকা ওয়াসার প্রতিবেদনের ওপর শুনানিকালে আদালত এ মন্তব্য করেন।

গত ৭ জুলাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় হাইকোর্টে একটি প্রতিবেদন জমা দেয়। এর আগে ৩ জুলাই ঢাকা ওয়াসার ১০টি মডস জোনের মধ্যে চারটি এবং সায়েদাবাদ ও চাঁদনীঘাট এলাকা থেকে সংগৃহিত ৮টি নমুনার পানিতে দূষণের তথ্য-সংক্রান্ত প্রতিবেদন অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে জমা দেয়া হয়। প্রতিবেদনে এসব এলাকার পানিতে ব্যাকটেরিয়া, উচ্চমাত্রার অ্যামোনিয়া পাওয়া গেছে এবং কিছু কিছু নমুনায় মলের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে- মর্মে তথ্য উঠে আসে। তারও আগে গত ২১ মে এক আদেশে ঢাকা ওয়াসার পানির উৎস, ১০টি বিতরণ জোন, গ্রাহকদের অভিযোগের ভিত্তিতে ১০টি ঝুঁকিপূর্ণ স্থান এবং লটারির ভিত্তিতে ১০টি স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে, তা পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের ধারাবাহিকতায় ৩৪টি স্থান থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করে তা আইসিডিডিআরবি, বুয়েট ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে ৮টি নমুনায় দূষণ পাওয়া যায় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এ বিষয়ে আগামী ৩০ জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করেছেন আদালত। আদালতে গতকাল শুনানি করেন ওয়াসার আইনজীবী এএম মাসুম। রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ।

প্রতিবেদনের ওপর শুনানিতে ওয়াসার আইনজীবী এএম মাসুম বলেন, সমন্বিত পানি পরীক্ষার প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, নমুনায় ফেকাল কলিফর্ম পাওয়া গেছে। সেই প্রতিবেদনে কিছু সুপারিশ ছিল, সেগুলো বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ওই সুপারিশ অনুসারে আইসিসিডিআরবি ও বুয়েটে আমাদের পানি পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। পাতলাখান লেনের পানির রিপোর্ট পেয়েছি। মিরপুরেরটা আগামী ২৮ জুলাই পাবো বলে আশা করছি।
এসময় রিটকারী আইনজীবী তানভীর আহমেদ বলেন, আদালতের আদেশের পরে পানি পরীক্ষার জন্য কমিটি গঠন করতে ৩ মাস সময় লেগেছিল। বুধবার প্রতিবেদনের ওপর জবাব দাখিলের কথা ছিল।

পরে মাসুম জানান, ঢাকা ওয়াসার ১০টি বিতরণ জোনের পানিতেই ব্যাকটেরিয়াজনিত দূষণ পাওয়া গেছে। এছাড়া, কমিটি ঢাকা ওয়াসার ১০টি বিতরণ জোনের বিভিন্ন এলাকা থেকে লটারি ও দূষণের অভিযোগ রয়েছে এমন ৩৪টি স্থান থেকে নমুনা সংগ্রহ করে। এর মধ্যে ৮টি নমুনায় ব্যাকটেরিয়াজনিত দূষণ পাওয়া গেছে। এছাড়া, বিতরণ জোন-১ এর পুরান ঢাকার পাতলাখান লেন, জোন ৪-এর মিরপুরের কাজীপাড়া ও বিতরণ জোন-৭ এর শনির আখড়া, ধনিয়া থেকে সংগ্রহ করা পানিতে কলিফর্ম পাওয়া গেছে। প্রতিবদনে ঢাকা ওয়াসার লিংকে (হটলাইন) গত তিন মাসে ময়লা পানির অভিযোগের তালিকা বিশ্লেষণ করে ১০টি জোনের ৫৯ এলাকায় ময়লা পানির প্রবণতা বেশি বলে উল্লেখ করা হয়। গত ১৪ মে পানি পরীক্ষা কমিটির তৃতীয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বুয়েট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইসিডিডিআরবির ল্যাবে পানির বিভিন্ন প্যারামিটারের মূল্যহার একীভূত করে মোট বাজেট সংযুক্ত করা হয়। বাজেটে বলা হয়, এই ১০টি জোনের প্রত্যেক এলাকা থেকে ৩৫৫টি নমুনা সংগ্রহ করা হবে। ফলে মোট নমুনার সংখ্যা দাঁড়াবে ১০৬৫টি। এই ১০৬৫টি নমুনা করে তিনটি ল্যাবরেটরিতে রোগজীবাণু ও ভৌত রাসায়নিক সংক্রান্ত পরীক্ষা করতে খরচ হবে ৭৫ লাখ ৬১ হাজার ৫শ’ টাকা। প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপনের পর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে মতামত শুনতে ওই কমিটির সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের (মাইক্রোবায়োলজি ডিপার্টমেন্ট) চেয়ারম্যান ড. সাবিতা রেজওয়ানা রহমানকে আদালতে ব্যাখ্যা দেয়া নির্দেশ দেন।

উল্লেখ্য, এর আগে গতবছর নভেম্বর এক রিটের শুনানিতে হাইকোর্ট ঢাকা ওয়াসার পানি পরীক্ষার জন্য প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করার আদেশ দেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ