পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সারাদেশে ব্যাপকহারে বেড়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। বিশেষ করে রাজধানীতে এর প্রভাব বেশি। হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। রোগীর ভিড়ে রাজধানীর অনেক হাসপাতাল-ক্লিনিকে শয্যা সঙ্কট দেখা দিয়েছে। জ্বর হলেই রোগী নিয়ে হাসপাতালে ছুটছেন অভিভাবক-স্বজনরা। গত ২৪ ঘণ্টায় শুধুমাত্র ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে নারী-শিশুসহ ৯৯ জন। এর মধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে ঢামেক সূত্রে জানা গেছে।
ঢামেকের একটি সূত্র জানায়, হাসপাতালের নতুন ভবনের চার, পাঁচ, ছয়তলায় মেডিসিন বিভাগের ওয়ার্ডে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা চোখে পড়ার মতো। সর্বশেষ গত সোমবার সকাল ১০টা থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৯৯ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ৩৪৯ জন। এ পর্যন্ত ঢামেকে ডেঙ্গুতে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। নতুন ভবনের মতো একই চিত্র ঢামেকের পুরাতন ভবনের শিশু বিভাগে। সেখানেও অধিকাংশ শিশু ডেঙ্গুতে আক্রান্ত। চিকিৎসকরা বলছেন, মূলত তিন থেকে আট বছরের শিশুরা বেশি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। দেড়-দুই বছরের শিশুরাও আসছে। কিন্তু তাদের সংখ্যা কম।
ঢামেক সূত্রে আরও জানা গেছে, এ বছরের জুলাই পর্যন্ত ঢামেকে ডেঙ্গু রোগে ভর্তি হয়েছে ১ হাজার ৬৪ জন। যার মধ্যে ৯১১ জন ভর্তি হয়েছে গত ২২ দিনে। জুলাইয়ের ২২ দিনে এ সংখ্যা ৯১১ তে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসকরা বলছেন, এ বছরের জুলাইয়ের পরিস্থিতি অন্য যেকোনো বছরের তুলনায় ভয়াবহ।
এ বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মোট ৩৪৯ জন ঢামেকে ভর্তি রয়েছে। প্রতিদিনই অসংখ্য রোগী হাসপাতালের আউটডোরে আসছে। আমরা যাদের অবস্থা খারাপ মনে করছি, তাদের ভর্তি রাখছি। জুলাইয়ে ডেঙ্গু রোগে অতিরিক্ত রোগী ভর্তি হয়েছে, যা হাসপাতালের জন্য একটি বাড়তি চাপ। তবে আমরা আমাদের মতো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছি।
রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালের মতো মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে। জুলাইয়ের শুরু থেকে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৩৩৭ রোগী এখানে ভর্তি হয়েছেন। গত ১ থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত প্রতিদিন ভর্তি হয়েছেন আট থেকে ১৬ জন রোগী। ১১ থেকে ২০ জুলাই প্রতিদিন ১০ থেকে ২১ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। ২১, ২২ ও ২৩ জুলাই- এই তিনদিনে ১১৪ রোগী ডেঙ্গ্গুু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতিদিনই এ রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। মুগদা মেডিকেল কলেজের দায়িত্বরত এক চিকিৎসক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, জুন মাসে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ৪০ জন রোগী ভর্তি হয়েছিল। জুলাইয়ে প্রতিদিন গড়ে ১৮ থেকে ২০ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছেন।
এদিকে রজাধানীর শ্যামলীর ঢাকা শিশু হাসপাতালেও প্রতিদিন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এ হাসপাতালের ৭নং ওয়ার্ডের ১০নং বেডে ভর্তি করা হয় রিয়াকে। রিয়ার বাবা রবিউল ইসলাম বলেন, মেয়ের জ্বর ছিল নিয়ন্ত্রণের বাইরে। জ্বরের সাথে খিঁচুনি, রক্ত বমি ও নাক মুখ দিয়ে রক্ত আসে। ডাক্তাররা রাতে মেয়ের পালস পাচ্ছিলেন না। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর জানা গেল, ডেঙ্গু হয়েছে। রক্তের পাটিলেট কমেছে। ডাক্তাররা এখন চিকিৎসা করছেন। শুধু রিয়া নয়, গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত ৬৫ শিশু ঢাকা শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়। একই পরিবারের একাধিক শিশুও হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন।
ঢাকা শিশু হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুল হাকিম বলেন, এ বছর এখন পর্যন্ত ২২৮ শিশু ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। এখনও ৬৫ শিশু ভর্তি আছে। গত সোমবার ১৬ শিশু ভর্তি হয়। হাসপাতাল সূত্রে আরও জানা গেছে, এখানে ৬ জন রোগীর অবস্থা ক্রিটিক্যাল হওয়ায় ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এছাড়া ১০ বেডবিশিষ্ট আলাদা ডেঙ্গু সেলে ১০ শিশু ভর্তি রয়েছে। বাকি শিশুদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ও কেবিনে ভর্তি রাখা হয়েছে।
রাজধানীর ইস্কাটনে অবস্থিত হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৫০০ শয্যার মধ্যে ১৬০টিতে ভর্তি আছেন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী। গতকাল মঙ্গলবার সকালে এ তথ্য জানান হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তারা জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত এ হাসপাতালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কেউ ভর্তি হয়নি। গত ১ মে হাসপাতালে প্রথম ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন। গত ৭ জুলাই পর্যন্ত মোট ২২২ ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হন।
গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ৫৮৫ রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এ হাসপাতালে ভর্তি হন। গত ১৬ দিনে হাসপাতালে ৩৬৩ রোগী ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নেন। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গত সোমবার থেকে গতকাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ৬০ রোগী ভর্তি হয়েছেন। ওই ৬০ জনসহ বর্তমানে ১৬০ ডেঙ্গু রোগী এ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হাসপাতালটিতে এখন পর্যন্ত ভর্তি ৫৮৫ ডেঙ্গু রোগীর মধ্যে ১৬০ জন ছাড়া বাকিরা চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।