পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কুড়িগ্রাম জেলার বন্যা পরিস্থিতি আবারও অবনতি হয়েছে। ধরলা নদীর পানি বিপদ সীমার ২০ সে. মি. ব্রক্ষপুত্র নদের পানি বিপদসীমার ১১ সে. মি. উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে দুধকুমার নদীর পানি ১৭ সে. মি. কমেছে। সাড়ে ৯ লাখ বানভাসী মানুষ চরম দুর্ভোগে। বিধ্বস্ত রাস্তাঘাট, বাঁধ, ঘরবাড়ি। নেই শৌচকর্ম সম্পন্ন করার মত নিরাপদ ব্যবস্থা। দেখা দিয়েছে পানিবাহিত নানা রোগ বালাই। সব মিলিয়ে এ জনপদের কয়েক লাখ মানুষ দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছেন। ধরলা নদীতে নতুন করে পানি বেড়ে যাওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। সেই সাথে চলছে অবিরাম বৃষ্টি।
বাঁধ, পাকা সড়ক ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলো বৃষ্টির মাঝে চরম কষ্টে পড়েছে।বন্যা কবলিত এলাকা গুলোতে ছড়িয়ে পড়ছে ডায়রিয়া, আমাশয়, জ্বর, কাশি সর্দিসহ নানা পানি বাহিত রোগ। খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকটে দুর্ভোগ বেড়েছে বন্যা দুর্গতদের। এ অবস্থায় হাতে কাজ না থাকায় এবং পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ায় চরম খাদ্য সঙ্কটে পড়েছেন দিনমজুর শ্রেণির মানুষজন।
জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা যায়, বন্যার ফলে ৩টি পৌরসভাসহ ৬০টি ইউনিয়নে ৮৯৪টি গ্রামের ২লাখ ৩৮হাজার ৬৭২টি পরিবার পানিবন্দি। পরিবার প্রতি ৪ জন হিসাবে বানভাসি মানুষের সংখ্যা দাড়ায় ৯ লাখ ৫৪হাজার ৬৮৮ জন। প্রায় ১০দিন ধরে এ মানুষ গুলো বন্যায় আক্রান্ত হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। ফসলী জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৩ হাজার হেক্টর। বন্যায় এক হাজার ২৪৫কিলোমিটার রাস্তা, ৪০ কি.মি বাঁধ ও ৪১টি ব্রীজ/কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নলক‚প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৯ হাজার ৭৩৪টি। বন্যার কারনে প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও কলেজ মিলে এক হাজার ২৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ।
জেলা প্রশাসন থেকে ৯ উপজেলার ৯ লক্ষাধিক বন্যা কবলিত মানুষের জন্য এখন পর্যন্ত মাত্র ৮শ মেট্রিক টন চাল, ৭ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও সাড়ে ১৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন।
অকার্যকর সুইচ গেটে দীর্ঘ বন্যার কবলে চিলমারী
অকার্যকর সুইচ গেটের কারণেই দীর্ঘ বন্যার কবলে পড়েছে চিলমারী। পাত্রখাতা সরকারপাড়া এলাকায় মরা তিস্তা নদীর উপর বন্যা নিয়ন্ত্রণ রক্ষা বাঁধে নির্মিত ১২টি পানি প্রবাহ পথ বিশিষ্ট এ সুইচ গেটটি কার্যকারিতা হারিয়ে উপজেলার বাসির চরম এক দুর্ভোগ হয়ে দেখা দিয়েছে। পানি প্রবাহ পথ অকেজো হওয়ায় চিলমারী উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকা টানা ৬ দিন ধরে অথৈই পানির নিচে তলিয়ে আছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, চিলমারী উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র নদের ডানতীরে বন্যা নিয়ন্ত্রণ রক্ষা বাঁধে পানি প্রবাহ সামঞ্জস্য রাখতে ১৯৭৬-৭৭ অর্থ বছরে পানি উন্নয়ন বোর্ড ৪টি সুইচ গেট নিমার্ণ করে। এর মধ্যে মাগুরা সুইচ গেটটির পানি প্রবাহ পথ ২টি, চাচলার বিল সুইচ গেটটির ২টি, কাঁচকোল গেটটির ১০টি ও পাত্রখাতা সরকারপাড়া মরা তিস্তা নদীর উপর নির্মিত সুইচ গেটটি ১২টি পানি প্রবাহ পথ বিশিষ্ট। এ সুইচ গেটগুলো ৩ বছর আগেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক অপারেটর দ্বারা পরিচালিত হলেও অপারেটর পদটি বিলুপ্ত হওয়ায় কার্যত এখন সুইচ গেটগুলো মরার উপর খড়ার ঘাঁ হয়ে দেখা দিয়েছে। অপারেটরহীন এ সুইচ গেটগুলো স্থানীয় কয়েকজন সুবিধাভোগী মাঝি তাদের সুবিধার্থে পানি প্রবাহ পথ আটকে দেয়ায় দীর্ঘ বন্যার কবলে পড়েছে চিলমারী।
সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার পাত্রখাতা মরা তিস্তা নদী উপর বন্যা নিয়ন্ত্রণ রক্ষা বাঁধে নির্মিত এ সুইচ গেটটির উত্তর-দক্ষিণ দিকের প্রথম প্রবাহ পথ ২টি অকেজো অবস্থায় রয়েছে। এরমধ্যে দক্ষিণ অংশের ৩টি পুরোপুরি সচল থাকলেও বাকি গুলো পুরোপুরি সচল করা যায়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এ সুইচ গেটটি কার্যকারিতা হারিয়েছে কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায়। এতে সৃষ্ট দীর্ঘবন্যায় কয়েকহাজার আবাদী জমির ফসল বিনষ্ট হয় বলেও জানান তারা।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবসরপ্রাপ্ত ওয়ার্ক এ্যাসিসটেন্ট মো. আবু তাহের বলেন, এ গেটটি দিয়ে উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণী ক্যানেল, ঠাটমারী ক্যানেল, টকরাইহাট ক্যানেল, অনন্তপুর বিল, বামনি নদী, চৌমানী বিল, নিরাশীবন বিল, চিলমারীথর কয়ারপাড় বিল, সড়কটারি বিল ও তিতিশীয়ালের বিলের পানি মরা তিস্তা হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে নেমে যায়। তিনি আরও জানান, ৮৮’র বন্যায় প্রবল চাপে ওই সুইচ গেটটি ঝুঁিকপূর্ণ হয়ে উঠলে তৎকালিন পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিজি, সচিব মহোদয় পরিদর্শন এসে একটি সার্ভে রিপোর্ট করেন। সে সময় এ সুইচ গেটের পূর্ব দিকে নজির হোসেনের বাড়ি সংলগ্ন এলাকায় একটি ৮ ভ্যান বিশিষ্ট সুইচ গেট নিমার্ণের নকশা চুড়ান্ত করা হয়। কিন্তু তৎকালিন ডিজি মহোদয়ের অবসরের পর আমলা তান্ত্রিক জটিলতায় সেটি আর আলোর মুখ দেখেনি। তিনি আরো বলেন, এ সুইচ গেটগুলো স্থানীয় কয়েকজন মাঝি মাছ মারার স্বার্থে বিভিন্ন ভাবে বিকল করে দেন। তার সময়ে এ সমস্যা উত্তরণে থানাপুলিশ করতে হয়েছিল বলেও জানান তিনি।
এদিকে বিভিন্ন নদীর পানির তোড়ে চিলমারী অথৈ পানিতে তলিয়ে থাকলেও পানি নেমে যাওয়ার অন্যতম এ পথটি উন্মুক্ত করতে পাউবোর দায়িত্বপ্রাপ্ত কেউ আসেননি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, এটি আমরাই দেখভাল করছি। এর হ্যান্ডেল স্থানীয়দের কাছে থাকার প্রশ্নই ওঠে না। স্থানীয়রা যে অভিযোগ করেছেন তা সঠিক নয় দাবি করে তিনি আরো বলেন, পানি কমে গেলে সুইচ গেটটি মেরামত করা হবে। সে সঙ্গে এ বাঁধে আর একটি সুইচ গেট নির্মাণের ব্যাপারে প্রস্তাব পাঠানো হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।