Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উজ্জীবিত নেতা-কর্মীরা

আবু হেনা মুক্তি | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

খুলনায় মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে নেতাকর্মীরা বেশখানিকটা উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে। বেগম জিয়ার অনুপস্থিতি এ অঞ্চলের বিএনপি’র রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ কিছুটা ভাটা পড়লেও খুলনায় সমাবেশকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে। পাশাপাশি দলের কান্ডারী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে কঠোর আন্দোলনের জন্য মাঠে নামতে প্রস্তুতি নিচ্ছে নেতাকর্মীরা।
৮টি শর্তে মহানগরীর শহীদ হাদিস পার্কে আগামী ২৫ জুলাই দুপুর ২টায় সমাবেশের এ অনুমতি দিয়েছে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি)। একইসঙ্গে অনুমতি দিয়েছে খুলনা সিটি করপোরেশন। তাই আগামী বৃহস্পতিবার দুপুর ২ টায় এ সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যবৃন্দ, সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের শীর্ষ নেতারা সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন। বিএনপি’র নেতাকর্মীরা জানান, কর্মসূচিকে ঘিরে খুলনা বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা এবং প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। মামলা-হামলা-নির্যাতন-অত্যাচার এবং হয়রানির শিকার নেতাকর্মীরা বিভাগীয় সমাবেশ কর্মসূচিকে ঘিরে পুনরুজ্জীবিত হয়ে উঠছেন বলেই মনে করছেন তারা। নেতাকর্মীরা সমাবেশে সবাইকে যোগ দেওয়ার আহবান জানান।

এদিকে, লিফলেট বিতরণের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে সমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা। বিএনপি নেতারা জানায়, প্রখর খরতাপ ও উত্তপ্ত আবহাওয়া উপেক্ষা করে তারা রাস্তায় চলাচলরত বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও যাত্রী, পথচারী, দু’পাশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা-বিক্রেতা, অফিস আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারী, শ্রমজীবী জনতার হাতে সমাবেশে যোগ দেওয়ার আহ্বান সম্বলিত লিফলেট তুলে দিয়েছেন।
সূত্র জানায়, গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আপোষহীন নেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি’র চেয়ারপারসন মাদার অব ডেমোক্রেসি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এবং গণতন্ত্র ও জনগনের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ভোট ডাকাতির সংসদ বাতিল ও পুনঃনির্বাচনের ব্যবস্থা, নারী-শিশু নির্যাতন, গুম-খুন-বিরোধীমত দমন বন্ধ, স্বাধীন বিচার বিভাগ ও গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠার দাবিতে এই বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এছাড়া সমাবেশে পাটকল শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি পূরণ, ধানসহ কৃষকের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রদান, ব্যাংক ও আর্থিত প্রতিষ্ঠান লুট, গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যমূল্য বৃদ্ধি এবং দুর্নীতি ও অপশাসনের বিভিন্ন চিত্র তুলে ধরা হবে। কর্মসূচিকে ঘিরে খুলনা বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের মাঝে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা এবং প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে খুলনার কর্মসূচি সফল করতে বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের নিয়ে ১২টি উপ কমিটি গঠন করা হয়। উপকমিটিগুলো- অর্থ উপ কমিটি আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এস এম শফিকুল আলম মনা, যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দা নার্গিস আলী, সার্বিক ব্যবস্থাপনা ও ভেন্যু উপ কমিটি আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান মনি, যুগ্ম আহ্বায়ক শফিকুল আলম তুহিন, অভ্যর্থনা উপ কমিটি আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. গাজী আব্দুল হক, শেখ মোশারফ হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, পরিবহন ও যোগাযোগ উপ কমিটি আহ্বায়ক সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, যুগ্ম আহ্বায়ক মোল্লা খায়রুল ইসলাম, শেখ আমজাদ হোসেন, শৃঙ্খলা উপ কমিটি আহ্বায়ক জাফরউল্লাহ খান সাচ্চু, যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব কায়সার, আশরাফুল আলম নান্নু, মনিরুল হাসান বাপ্পী, সাংগঠনিক উপ কমিটি আহ্বায়ক অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ আব্দুর রশীদ, সিরাজুল হক নান্নু, প্রচার উপ কমিটি আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান মুরাদ, যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুজ্জামান টুকু, কে এম হুমায়ুন কবির, স্বাস্থ্য সেবা উপ কমিটি আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. শেখ মো. আখতার উজ জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. মোস্তফা কামাল, ডা. শওকত আলী লস্কর, আপ্যায়ন উপ কমিটি আহ্বায়ক জলিল খান কালাম, যুগ্ম আহ্বায়করেহানা আক্তার, অধ্যাপক আরিফুজ্জামান অপু, আবাসন উপ কমিটি আহ্বায়কমনিরুজ্জামান মন্টু, যুগ্ম আহ্বায়ক আজিজুল হাসান দুলু, ইউসুফ হারুন মজনু, মিডিয়া উপ কমিটি আহ্বায়ক এহতেশামুল হক শাওন, যুগ্ম আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বাবু, দপ্তর উপ কমিটি আহ্বায়ক মহিবুজ্জামান কচি, যুগ্ম আহ্বায়ক মুর্শিদুর রহমান লিটন, শামসুজ্জামান চঞ্চল। অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের দপ্তর সম্পাদকরা দপ্তর উপ কমিটির সদস্য হিসেবে কাজ করবেন বলে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিএনপি নেতাকর্মীদের ভেন্যু পরিদর্শন:
২৫ জুলাই খুলনা বিভাগীয় সমাবেশ থেকে বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে আর কোন টালবাহানা না করার জন্য সরকারকে বার্তা পাঠানো হবে। গণতন্ত্র, ভোটাধিকার এবং মুক্ত মত প্রকাশের সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার হরণের সকল অপতৎপরতা বন্ধ করে এ সরকারের পদত্যাগ এবং জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠায় দাবি জানানো হবে মধ্যবর্তী নির্বাচনের। আর এই দাবি যে বিশেষ কোন রাজনৈতিক দল বা সংগঠনের নয়, এই দাবি জনগনের- এ সত্য প্রমাণে বিভাগীয় সমাবেশ কর্মসূচিতে লাখো জনতার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চায় বিএনপি। আর সে লক্ষ্যেই চলছে সর্বাত্মক সাংগঠনিক তৎপরতা।

গতকাল সোমবার সমাবেশের ভেন্যু পরিদর্শনকালে বিভিন্ন আলাপচারিতা ও প্রস্ততির নানা দিক সম্পর্কে বিএনপি নেতাকর্মীরা এ কথা জানান।
শহীদ হাদিস পার্কের শহীদ মিনারের মূল বেদীতে স্থাপিত হবে মঞ্চ। সমাবেশের প্রধান অতিথি বিএনপির কেন্দ্রীয় মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ঢাকা থেকে আগত জাতীয় নেতৃবৃন্দ, অঙ্গ দলসমূহের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, খুলনা মহানগর ও জেলা এবং বিভাগের ৯ জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দসহ শতাধিক নেতার জন্য মঞ্চে আসন সংরক্ষিত থাকবে।

শুধু হাদিস পার্কই নয়, সংলগ্ন সকল সড়ক জনারণ্যে পরিণত হবে সমাবেশে আগত নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে। যে কারণে হাদিস পার্ক ছাড়িয়ে পিকচার প্যালেস মোড়, বাংলাদেশ ব্যাংক মোড়, থানার মোড়, নগর ভবন- জেলা পরিষদের মোড় পর্যন্ত টানানো হবে মাইক। সমাবেশ মঞ্চের একেবারে সামনে নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে নারী কর্মীরা অবস্থান করবেন। মঞ্চের ডান পাশে থাকবে মিডিয়া কর্মীদের বসার স্থান। ভেন্যু পরিদর্শনকালে এসব স্থান চিহ্নিত করার পাশাপাশি মঞ্চ-সাজসজ্জা এবং শৃঙ্খলা উপ কমিটিকে বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও নগর কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ