Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বানভাসীদের বাঁচাতে জাতীয় সংলাপ চান ড. কামাল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

দেশের বানভাসী মানুষদের বাঁচাতে জাতীয় সংলাপ চেয়েছেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। পাশাপাশি বন্যার বিস্তৃতি ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনে সঠিক তথ্য তুলে ধরতে তিনি সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। বানভাসী মানুষের পাশে দাঁড়াতে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলারও আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে গণফোরামের এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহবান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে উত্তরবঙ্গের বন্যা ও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির উপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন আরো বলেন, দেশে কার্যকর গণতন্ত্র নেই। দলমত নির্বিশেষে জনগণকে বানভাসী মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে।

বন্যা পরিস্থিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট মাঠে না থাকা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, ওইটা তো একটা ইলেকশনকে কেন্দ্র করে হয়েছিল। এই বিষয়ে তো আমি মনে করি ঐক্যফ্রন্ট না, আসল ঐক্য, জনগণের ঐক্য করা দরকার। কয়েকটা দলের ঐক্য না, সারা দেশের ঐক্যকে আমি বেশি গুরুত্ব দিতে চাই। ঐক্যফ্রন্টের টানাপোড়েন প্রসঙ্গে জোটটির আহ্বায়ক বলেন, ম‚ল লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ঐক্যফ্রন্ট হয়েছিল। সে ম‚ল লক্ষ্য তো আমাদের থাকবেই। ওটা ইলেকশনের ব্যাপারে একটা উদ্যোগ ছিল। এখন এই ধরনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে আরও গুরুত্বপ‚র্ণভাবে ঐক্য গড়তে হবে।
বন্যা পরিস্থিতিতে দোষারোপের চেয়ে কারণগুলো চিহ্নিত করা দরকার, যেখান থেকে কোথায় ঘাটতি তা বেরিয়ে আসবে বলে জানান কামাল হোসেন। তিনি বলেন, দলীয় সংকীর্ণতা চলে আসে, পাল্টাপাল্টি দোষারোপ করলে তখন সমস্যা সমাধানের চেয়ে এটাই চলতে থাকে। তিনি আরও বলেন, জনগণকে সচেতন করা ও সঠিক তথ্য দেওয়া হচ্ছে সবচেয়ে বড় কাজ।

দেশে কার্যকর গণতন্ত্র নেই উল্লেখ করে কামাল হোসেন বলেন, দেশ শাসন করতে নাগরিকদের ভ‚মিকা থাকে। সমস্যা মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি নাগরিকদেরও ভ‚মিকা পালন করতে হয়। এককভাবে সরকারের পক্ষে মোকাবিলা করা সম্ভব না।
কামাল হোসেন বলেন, ‘এই ধরনের বন্যা পরিস্থিতিতে সবাইকে নিয়ে বসা দরকার। সেটা কি হয়েছে? দলমত-নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে মতবিনিময় করা দরকার। তথ্য এক জায়গায় এনে ম‚ল্যায়ন করা। সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে জাতীয় সংলাপ প্রয়োজন মনে করেন কি না এ প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, অবশ্যই একটি জাতীয় সংলাপ অপরিহার্য মনে করি বন্যার জন্য।

ড. কামাল বলেন, বন্যা থেকে দেশকে বাঁচাতে হলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মানুষকে সচেতন করতে হবে। ঘাটতিগুলো চিহ্নিত করতে হবে। বন্যাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করার কথা বলেন তিনি। বন্যার শিকার থেকে বাঁচতে ঐক্যবদ্ধ সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও দেশে ঐকমত্য গড়ে তোলার কথা বলেন গণফোরাম সভাপতি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি আবু সাইয়িদ। গণফোরামের বক্তব্যে সরকারের ত্রাণ কার্যক্রমের সমালোচনা করে বলা হয়, পর্যাপ্ত ত্রাণ এখনো বন্যাকবলিত মানুষের কাছে পৌঁছায়নি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে অনেক বরাদ্দ থাকলেও কাজ হয়নি এ অভিযোগ করে বলা হয়, বন্যা নিয়ন্ত্রণের নামে লুটপাট হয়েছে। আবু সাইয়িদ বলেন, ১৭ জুলাই থেকে গণফোরামের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আমসা আ আমিন কুড়িগ্রামে ত্রাণ কার্যক্রম চালাচ্ছেন।

গণফোরাম বন্যা পরিস্থিতে বেশ কিছু দাবি জানায়। তা হচ্ছে খাদ্য, জরুরি ওষুধ ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা, সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে ত্রাণ কার্যক্রম। জবাবদিহির ভিত্তিতে ত্রাণ কার্যক্রম, বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা এবং পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে পানি ও নদী ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী সভাপতি এডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সভাপতি পরিষদ সদস্য জগলুল হায়দার আফ্রিক, এডভোকেট মহসীন রশীদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশতাক আহমদ, সম্পাদক পরিষদ সদস্য মোহাম্মদ আজাদ হোসেন, খান সিদ্দিকুর রহমান, স্থায়ী পরিষদ সদস্য হারুনুর রশীদ তালুকদার প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ