Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আমেরিকা যাওয়া হলো না ছেলেধরা সন্দেহে নিহত রেনুর

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২২ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

মেয়েকে ভর্তির জন্য স্কুলে খোঁঁজ নিতে গিয়ে গণপিটুনিতে নিহত তাসলিমা বেগম রেনুর (৪০) আগামী জানুয়ারি মাসে আমেরিকায় যাওয়ার কথা ছিল। সেখানে তার একমাত্র ভাই আলী আজগর ২৩ বছর ধরে বসবাস করছেন। আমেরিকা যেতে রেনু সব প্রস্তুতি গুছিয়ে নিয়েছেন। ঘটনার দিন সকালে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় তিনি ফটোকপি করার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে নিয়ে বের হন। ওই দিন ছোট মেয়েকে খালার কাছে রেখে যান। নিহত রেনুর ভাগনি নূরজাহান বেগম মুন্নি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
গত শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকার উত্তর পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে রেনুকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। মেয়েকে ভর্তির জন্য ওই স্কুলে খোঁজ নিতে গিয়ে কথাবার্তায় সন্দেহ হলে মুহূর্তের মধ্যে লোকজন জড়ো হয়ে পিটুনি দিলে তার মৃত্যু হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাসলিমা বেগম রেনুর এক ভাই ও পাঁচ বোন। মাস্টার্স শেষ করা রেনু সবার ছোট। পড়ালেখা শেষে তিনি ঢাকায় আড়ং ও ব্র্যাকে চাকরি করেছিলেন। গত দুই বছর তিনি প্রাইভেট পড়াতেন। পারিবারিক কলহের কারণে প্রায় দুই বছর আগে স্বামীর সঙ্গে রেনুর ডিভোর্স হয়। তাদের সংসারে তাসফিক আল মাহি (১১) ও তাসলিমা তুবা (৪) নামের দুই সন্তান রয়েছে। বিচ্ছেদের পর ছেলে বাবার সঙ্গে থাকে। আর মেয়ে মায়ের কাছে থাকতো। ল²ীপুর শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে নিহত রেনুর গ্রামের বাড়ি রায়পুর উপজেলার উত্তর সোনাপুর গ্রামে।
গতকাল বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা গেল, পারিবারিক করবস্থানে মাটি খুঁঁড়ে করব করার কাজ চলছে। দুই বছর আগে মারা যাওয়া বাবার কবরের পশ্চিম পাশে তাকে শায়িত করা হবে। ঘরের ভেতর পরিবারের সদস্যরা কাঁদছেন। তাদের চোখে-মুখে স্বজন হারানোর চাপ।
নিহতের ভগ্নিপতি অবসরপ্রাপ্ত চাকরিজীবী মো. বদিউজ্জামান বলেন, অভিভাবকরা সন্তান ভর্তি করার জন্য স্কুলে যাবেন, এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে গুজব ছড়িয়ে একজন শিক্ষিত-সংগ্রামী নারীকে এভাবে প্রকাশ্যে হত্যা করতে হবে। এ সভ্য সমাজে এটা মেনে নেয়া যায় না।

 



 

Show all comments
  • অজানা পথিক ২২ জুলাই, ২০১৯, ১:৫৪ এএম says : 0
    এর সাথে জড়িত আমার মতে স্কুলের শিক্ষক,শিক্ষাথীদের বাবা, ভাই,উওর বাডডা মোড়ের রিকশা চালক, উওর বাডডা ব্যবসায়ী যা ফেসবুকে পাওয়া ভিডিওগুলো পেলেই সনাক্ত করা
    Total Reply(1) Reply
    • Yourchoice51 ২২ জুলাই, ২০১৯, ৯:৫৮ এএম says : 4
      Hell to these barbarians.....these are worse than animals. Are these really Bangladeshi citizens?
  • Shadat Sarker ২২ জুলাই, ২০১৯, ১:৫৪ এএম says : 0
    যারা যারা এ হত্যার সাথে জড়িত এদের চিহ্নিত করে সকলকে আইনের আওতায় এনে সর্বচ্চো শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। সাধারণ মানুষের কি এই দেশে কোন নিরাপত্তা নাই। গণপিটুনী দিয়ে মানুষ মারার অধিকার কে দিয়েছে এদেরকে।
    Total Reply(0) Reply
  • Ali Mirza ২২ জুলাই, ২০১৯, ১:৫৪ এএম says : 0
    এই বর্বর, নিকৃষ্ট, হিংস্র মানুষগুলাকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে এইভাবে প্রহার করা উচিত, তাহলে বুঝত কেমন লাগে । ভিডিওতে অনেককেই স্পষ্ট চেনা যাচ্ছে, বাড্ডা থানা কতৃক দ্রুত গ্রফতার করা উচিত ।
    Total Reply(0) Reply
  • Imdad Hossain Bhuiyan ২২ জুলাই, ২০১৯, ১:৫৪ এএম says : 0
    কি লিখলেন??? "নিহত রেনুর আমেরিকা যাওয়া হলো না" শুধু রেনু বললে শুদ্ধ হতো। যাই হোক। উনার এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
    Total Reply(0) Reply
  • Jewel Mahmud ২২ জুলাই, ২০১৯, ১:৫৫ এএম says : 0
    পুলিশ ও বিচার বিভাগের উপর মানুষের আস্থা না থাকায়, আমপাব্লিক সঠিক বেঠিক সবকিছু নিজ হাতে করে ফেলে (বিচার)।
    Total Reply(0) Reply
  • Prience Prience ২২ জুলাই, ২০১৯, ১:৫৬ এএম says : 0
    দেশবাসির কাছে অনুরোদ তারা যেন আইন হাতে তুলে না নেয়। আল্লাহতায়ালা নিকট এ ধরনের কাজ পছন্দ নয়। তিনি এরুপ কাজের কারনে বলা মসিবত দেন। বিশ্ব আমাদের উগ্র জাতি হিসাবে দেখব । আপনারা ঠান্ডা মাথায় প্রতিটি কাজ সমাধান করুন। ভাল খারাপ মানুষ মুখ দেখে চেনা যায় না। এ কাজ পুলিশকে করতে দিন। ধের্য্য ধরুন, নিরহ মানুষদের মেরে জাহান্নামে যাবেন না। এই গুজব কে কাজে লাগিয়ে পেশাদারী খুনিরা স্বার্থ উদ্ধার করবে আর আপনারা হবেন বিব্রান্ত।
    Total Reply(0) Reply
  • Masud Rana ২২ জুলাই, ২০১৯, ১:৫৬ এএম says : 0
    ছেলে ধরার এতই সাহস যে একটা স্কুলে যেয়ে ছেলে ধরতে গেছে। আমাদের বিবেক বুদ্ধি লোপ পেয়েছে যার কারণে অহরহ অঘটন ঘটেই চলছে। এখন এই মহিলার বাচ্চাদের মায়ের অভাব পূরণ করবে কে
    Total Reply(0) Reply
  • Masud Rana ২২ জুলাই, ২০১৯, ১:৫৬ এএম says : 0
    ছেলে ধরার এতই সাহস যে একটা স্কুলে যেয়ে ছেলে ধরতে গেছে। আমাদের বিবেক বুদ্ধি লোপ পেয়েছে যার কারণে অহরহ অঘটন ঘটেই চলছে। এখন এই মহিলার বাচ্চাদের মায়ের অভাব পূরণ করবে কে
    Total Reply(0) Reply
  • D.h. Shuvo ২২ জুলাই, ২০১৯, ১:৫৬ এএম says : 0
    খুবই দুঃখ জনক, চোখের পানি ধরে রাখতে পারলাম না, বোন ক্ষমা করিস এই অভাগা জাতিকে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ