পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাংলাদেশের প্রধান নদ-নদীসমূহের উজানভাগে আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা, অরুণাচল, মিজোরাম, পশ্চিমবঙ্গসহ উত্তর-পূর্ব ভারতে গতকাল রোববার পর্যন্ত এক সপ্তাহে তেমন বৃষ্টিপাত হয়নি। এরফলে উজানের ঢলের পানি আসার জোর আপাতত নেই। অন্যদিকে দেশের উত্তরাঞ্চলে বন্যার পানি প্রতিদিনই ধীরে ধীরে কমছে। প্রবল বেগে নামছে ভাটির দিকে। এ অবস্থায় দেশের মধ্যাঞ্চল এমনকি ঢাকা মহানগরী ও চারপাশের নদ-নদী, খালগুলো প্লাবিত হচ্ছে। ডুবে যাচ্ছে মধ্যাঞ্চলের আরও নতুন নতুন বিশেষ করে নিচু এলাকাগুলো।
প্রধান নদ-নদীর প্রবাহের সর্বশেষ তথ্যে জানা যায়, গতকাল ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, ঘাগট, ধরলা, করতোয়াসহ পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত উত্তরাঞ্চলের প্রায় সবকটি নদ-নদীর পানি হ্রাস অব্যাহত থাকে। উত্তরের নদীসহ বর্তমানে বিপদসীমার ঊর্ধ্বে রয়েছে ১৩টি নদী ২০টি পয়েন্টে। এরমধ্যে ১৫টি পয়েন্টে পানি হ্রাসের দিকে রয়েছে। ৫ স্থানে আছে ওপরের দিকে। খুব শিগগির ব্যাপক আকারে বৃষ্টিপাত (উজানে ও ভাটিতে) না হলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা আপাতত দেখা যাচ্ছে না।
তবে বানের পানি হ্রাসের সাথে সাথে ভেসে উঠছে বন্যার ক্ষতচিহ্ন। নদীভাঙনের তান্ডবও বাড়ছে। বন্যার্তদের দুর্ভোগ বেড়েই চলেছে। খাদ্য, আশ্রয়, চিকিৎসা, বিশুদ্ধ পানির অভাবে তাদের দুঃখ-কষ্ট সীমাহীন। বন্যাকবলিত এলাকায় কাজ ও খাবার নেই। মিলছে না ত্রাণ সাহায্য।
পাউবো’র বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, গতকাল ২৪ ঘণ্টায় দেশের নদ-নদীগুলোর ৯৩টি পানির সমতল পর্যবেক্ষণ স্টেশনের মধ্যে ৩৫টি পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি এবং ৫৩টিতে হ্রাস পায়। অপরিবর্তিত রয়েছে ৫ জায়গায়। গত শনিবার ৩৯ পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৫২টিতে হ্রাস, শুক্রবার ৪৫ পয়েন্টে পানি বৃদ্ধি ও ৪৭টিতে হ্রাস পায়।
উত্তর জনপদের নদ-নদীগুলোর একযোগে বানের পানির চাপ ভাটিতে গিয়ে পড়েছে। এখন তা আরও বেড়ে গেছে। এতে করে গতকাল রাজধানী ঢাকার চারপাশের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির দিকে রয়েছে। এরমধ্যে গতকাল বিকেল পর্যন্ত বুড়িগঙ্গা, বালু, তুরাগ, টঙ্গী খাল, শীতলক্ষ্যা, কালিগঙ্গা নদীগুলোর পানি বেড়েছে। তবে বিপদসীমার বেশ নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি জামালপুরে বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপরে এবং ময়মনসিংহে ৬৮ সেমি নিচে রয়েছে। তবে বাঘাবাড়িতে আত্রাই ও টাঙ্গাইলে ধলেশ্বরী নদীর পানি বিপদসীমার ঊর্ধ্বে থাকলেও তা স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে।
নদ-নদীর প্রবাহের অবস্থা সম্পর্কে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র গতকাল জানিয়েছে, পদ্মা নদী এবং ঢাকার চারপাশের নদ-নদীসমূহ ছাড়া অন্যান্য প্রধান নদ-নদীর পানির সমতল হ্রাস অব্যাহত রয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র-যমুনা, সুরমা নদ-নদীসমূহের পানির সমতল হ্রাস পেতে পারে। অন্যদিকে আগামী ২৪ ঘণ্টায় গঙ্গা-পদ্মা এবং কুশিয়ারা নদ-নদীগুলোর পানির সমতল স্থিতিশীল থাকতে পারে।
আগামী ২৪ টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকতে পারে। মধ্যাঞ্চলের মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর ও মুন্সীগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকতে পারে। এ সময়ের মধ্যে বগুড়া, জামালপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, ও সিলেট জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকতে পারে।
এদিকে বাংলাদেশ ও ভারতের আবহাওয়া বিভাগের জানা যায়, বাংলাদেশের উজানভাগে অবস্থিত উত্তর-পূর্ব ভারতে আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। তাছাড়া দেশের অভ্যন্তরে আপাতত ভারী ধরনের বর্ষণের সম্ভাবনা নেই। কারণ বর্ষার মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর কম সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে তা দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। সমুদ্রে আপাতত লঘুচাপ-নিম্নচাপ তৈরি হওয়ার মতো আলামত নেই।
প্রধান নদ-নদীগুলোর বিপদসীমায় প্রবাহের সর্বশেষ তথ্য-উপাত্তে পাউবো জানায়, উত্তরাঞ্চলে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপদসীমায় আরও কমে এসেছে। ব্রহ্মপুত্র নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ১১ সেমি ও চিলমারীতে ৫৪ সেমি ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে। যমুনা নদেও পানি হ্রাস অব্যাহত থাকায় বাহাদুরাবাদে ১০০ সেমি, ফুলছড়ি পয়েন্টে ৯৩ সেমি, সারিয়াকান্দিতে ৭৯ সেমি, কাজিপুরে ৭৯ সেমি, সিরাজগঞ্জে ৬৯ সেমি, আরিচায় ৩৭ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
উত্তরে কুড়িগ্রামে ধরলা নদীর পানি হ্রাসের ফলে বিপদসীমার ১৭ সেমি ওপর রয়েছে। গাইবান্ধায় ঘাগট নদীর পানি আরও কমে বিপদসীমার ৫০ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে অন্যতম বৃহৎ নদী অববাহিকা গঙ্গা-পদ্মায় গত ১০ দিন যাবৎ ধীরে ধীরে পানি বৃদ্ধি পেলেও গতকাল থেকে সবকটি পয়েন্টে ফের ধীরে ধীরে হ্রাস পেতে শুরু করেছে। পদ্মা ভাটিতে গোয়ালন্দে বিপদসীমার ৬৬ এবং ভাগ্যকূলে বিপদসীমার ৩৪ সেমি ওপরে প্রবাহিত হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।