পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ছয় বছরের শিশু আবু নাছের। তার ছোট্ট শরীরে বাসা বেঁধেছে মরণব্যাধী বøাড ক্যান্সার। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাজানগরের দরিদ্র কৃষক বদিউল আলম চোখে অন্ধকার দেখছেন। ছেলের শয্যাপাশে বসে মা ইসলাম খাতুনের আহাজারি যেন থামছে না।
পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির রামগড়ের চা-বাগানের শ্রমিক দম্পতি দিপঙ্কর কর্মকার ও রেবা রাণীর দিনে আয় ১০২ টাকা করে ২০৪ টাকা। সকাল ছয়টায় চা বাগানে যান, ফেরেন সন্ধ্যা ছয়টায়। তাদের চার বছরের পুত্র শুভঙ্কর লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত। আবু নাছের, কৃপা দাস ও শুভঙ্করসহ ক্যান্সার আক্রান্ত ১৩ জন শিশুকে নিয়ে তাদের পিতা-মাতা চোখে অন্ধকার দেখছেন। চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক হেমাটোলজি অ্যান্ড অনকোলজি বিভাগে এই ১৬ শিশুর চিকিৎসা চলছে।
আর এর মধ্যে অভিভাবকেরা তারা জানতে পেরেছেন এই বিভাগের একমাত্র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক প্রফেসর ডা. একেএম রেজাউল করিমকে বদলি করে দেয়া হয়েছে। আর তাতে তাদের সন্তানদের চিকিৎসাও বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ওই চিকিৎসকের বদলির আদেশ প্রত্যাহারের আবেদন জানান। তাদের আকুতি আমাদের সন্তানদের বাঁচতে দিন।
চমেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে বিগত ২০১৩ সালে এই বিভাগটি চালু হয়। প্রফেসর রেজাউল করিমকে নিয়েই মূলত এই বিশেষায়িত বিভাগটির যাত্রা শুরু হয়। চিকিৎসকরা জানান, এ বিভাগে লিউকোমিয়া বা বøাড ক্যান্সার, ব্রেইন ক্যান্সার এবং কিডনি ও টিউমার ক্যান্সারসহ সব ধরনের ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা করা হয়। দূরারোগ্য এ রোগের চিকিৎসাও অত্যন্ত ব্যয়বহুল। চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদী হওয়ায় খরচও অনেক বেশি। ঢাকা কিংবা বিদেশে গিয়ে যারা চিকিৎসা করাতে পারেন না তাদের শেষ ভরসা এ বিভাগ।
ফলে একমাত্র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বদলি হয়ে চলে যাচ্ছেন এমন খবরে উৎকণ্ঠিত অভিভাবকেরা। ক্যান্সার আক্রান্ত কৃপা দাশের মা রীনা রাণী বলেন, ভিটে জমি বিক্রি করে সন্তানের চিকিৎসা করাচ্ছি। এ অবস্থায় এ হাসপাতালে যদি চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায় আমরা যাব কোথায়।
দেশের তিনজন সেরা শিশু ক্যান্সার বিশেষজ্ঞের একজন প্রফেসর একেএম রেজাউল করিমকে রাঙ্গামাটি বদলি করা হয়। এমন খবর পাওয়ার পর থেকে রোগীদের স্বজনরা তার কাছে গিয়ে কান্নাকাটি করছেন। ইতোমধ্যে অভিভাবকেরা কয়েক দফা মানববন্ধন করেছেন। তার বদলির আদেশ স্থগিত করার দাবি জানিয়েছেন বিএমএর নেতারাও। রেজাউল করিমকে রাঙ্গামাটি মেডিকেল কলেজে বদলি করা হলেও সেখানে ক্যান্সার রোগের কোন ব্যবস্থা নেই। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও বিশেষজ্ঞ এ চিকিৎসককে ছাড়তে চাইছেন না।
জানা গেছে, প্রফেসর রেজাউল করিম তার বদলির আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল প্রফেসর ড. সেলিম মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের বদলি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, তবে তার ক্ষেত্রে সরকার বিষয়টি মানবিক দিক থেকে দেখবে আমরা এমন প্রত্যাশা করছি।
প্রফেসর রেজাউল করিম বলেন, সরকারি কর্মকর্তা হিসাবে সরকারের সিদ্ধান্ত মানতে তিনি বাধ্য। তিনি নতুন কর্মস্থলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক ও সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া একটি স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে প্রফেসর একেএম রেজাউল করিমকে বদলি করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।