Inqilab Logo

বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪, ১২ আষাঢ় ১৪৩১, ১৯ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বন্যা দুর্গতদের জন্য সরকারের ত্রাণ তৎপরতা নেই সংবাদ সম্মেলনে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী বন্যা দুর্গতদের পাশে থাকার ঘোষণা দিলেও এখনও পর্যন্ত্র ত্রাণ তৎপরতার কোন উদ্যোগই দেখা যায়নি বলে। বন্যা বিস্তৃত হয়ে দেশের মধ্যভাগসহ প্রায় সকল জেলা আক্রান্ত হয়ে পড়েছে। গতকাল (রোববার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় রিজভী বিএনপি নেতাকর্মীসহ দেশের বিত্তবান মানুষদেরকে বন্যা উপদ্রæত এলাকায় অসহায় মানুষদের পাশে যার যার সামর্থ অনুযায়ী দাঁড়ানোর জন্য আহবান জানান। তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে দেশের বন্যা পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে। একদিকে বসতবাটি তলিয়ে গেছে, গবাদি পশু ও ক্ষেতের ফসল ভেসে গেছে, অন্যদিকে লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে খাদ্য ও বিশুদ্ধ খাবার পানি সঙ্কটে হাহাকার করছে। ত্রাণের জন্য লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থেকেও কোন ত্রাণ পাচ্ছে না বন্যাকবলিত মানুষ।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশের উন্নয়নের জোয়ার মানুষ দেখেনি, মানুষ দেখছে বন্যা ও বৃষ্টির পানিতে শহর তলিয়ে যাওয়ার দৃশ্য। এক মাসে চট্টগ্রাম নগরী ডুবেছে পাঁচ বার, আর রাজধানী ঢাকার মানুষ বৃষ্টির পানিতে হাবুডুবু খাচ্ছে প্রতিনিয়ত। উজানের পানি ও প্রবল বর্ষণে সারাদেশ এখন পানিতে ভাসছে। লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, সিরাজগঞ্জ, জামলপুর, শেরপুর, নেত্রকোণা, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ, সিলেটসহ তিন পার্বত্য জেলার বাসিন্দারা এখন পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
আওয়ামী লীগকে চিৎকারসর্বস্ব দল উল্লেখ করে তিনি বলেন, অসংযমী ভাষণ, উদ্ভট মন্তব্য, অনাবশ্যক কটুকথা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি। সুতরাং দুর্ভিক্ষ, দুর্যোগ, দুর্বিপাক ও দুর্নীতি ছাড়া জনস্বার্থে ভাল কিছু করার ঐতিহ্য আওয়ামী লীগের নেই। আওয়ামী নেতারা শুনে কম, কিন্তু বলে বেশি। তারা দেশব্যাপী মহাপ্লাবনের বিপর্যয় নিয়ে ছলচাতুরী করছেন।
বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত হলেই কালো রাতের অবসান হবে দাবি করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ও গণতন্ত্র অভিন্ন সত্ত্বা। আজ কুৎসিত ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে তিনি কারাগারে বন্দী। নিজের পথকে কন্টকমুক্ত করতেই সরকার প্রধান কারাগারে আটকিয়ে রেখেছেন বেগম জিয়াকে। অথচ দেশের মানুষ অধিকারহারা হয়ে এক ভয় ও আতঙ্কের মধ্যে প্রতিনিয়ত দেশনেত্রীর মুক্তির প্রহর গুনছে। জনগণ মনে করে বেগম জিয়া কারামুক্ত হলেই অন্ধকারের কালো রাতের অবসান হবে, মানুষ প্রাণখুলে কথা বলতে পারবে, গুমের ভয়-ক্রসফায়ারের ভয়-মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেফতারের ভয় থেকে মুক্ত হতে তাদের মধ্যে সাহস সঞ্চারিত হবে।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মানুষের নাগরিক স্বাধীনতার প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে মন্তব্য করে রিজভী বলেন, সরকার বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে শুরু করে দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে ক্রীতদাসে পরিণত করার চেষ্টা করছে। শাশ্বত গণতন্ত্র ও রাষ্ট্রীয় সংবিধানেও মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সভা-সমাবেশের স্বাধীনতা স্বীকৃত। কিন্তু পুলিশ মিছিল দেখলেই নেতাকর্মীদেরকে ছো মেরে তুলে নিয়ে গিয়ে গ্রেফতার বাণিজ্যে মেতে উঠেছে। থানায় গ্রেফতারকৃত নেতাকর্মীদের মুক্তিসহ রিমান্ড পাওয়া না পাওয়া নিয়ে দরকষাকষি করা হয়। টাকা দিতে না পারলে জটিল মামলা দেয়া হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। বিএনপি নেতাকর্মীরা গ্রেফতার হওয়ার পরে তাদেরকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পর সৃষ্টি হয় এক বিষাদঘণ ঘোর পরিস্থিতি। পুলিশ স্টেশনগুলো যেন এখন দাসবাজারে পরিণত হয়েছে। আর এই দাসরা হচ্ছেন বিএনপিসহ সাধারণ জনগণ।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবুল খায়ের ভুঁইয়া ও যুগ্ম সাংগঠনিক খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ