Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার, ০৬ জুন ২০২৪, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

পাস্তুরিত সব দুধ পরীক্ষার নির্দেশ

এসব দুধ কেন এখনো বাজারজাত করা হচ্ছে : বিএসটিআইকে হাইকোর্ট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

সকল প্রকার পাস্তুরিত দুধ পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল রোববার বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ এবং বিচারপতি ইকবাল কবিরের ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। সায়েন্স ল্যাবরেটরি, জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, বিএসটিআই এবং আইসিডিডিআর,বিকে দুধ পরীক্ষার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে পরীক্ষার ফলাফল সম্পর্কে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।

এর আগে পাস্তুরিত তরল দুধে অ্যান্টিবায়োটিক এবং ডিটারজেন্টের অস্তিত্ব পাওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করেন আদালত। পাস্তুরিত দুধের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপকের প্রতিবেদন নিয়ে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানতে চান আদালত।

এ সময় হাইকোর্ট বলেন, দুধের বিষয়ে যেসব ক্যাটাগরিতে পরীক্ষা করা হয়, এর মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক ও ডিটারজেন্ট পরীক্ষার সক্ষমতা আছে কি না? এ ছাড়াও এটা পরীক্ষা করে প্রতিবেদন তৈরি করতে সায়েন্স ল্যাব এবং আইসিডিডিআর,বির কত দিন লাগবে? এসব প্রশ্নের উত্তর জানাতে দুই ঘণ্টা সময় দেন। পরে বিকেলে দেশে বাজারজাতকৃত সব পাস্তুরিত দুধের মান পরীক্ষার নির্দেশ দেন।

গতকাল আদালতে বিএসটিআই’র পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার সরকার এম আর হাসান। রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট তানজীর আহমেদ এবং ব্যারিস্টার অনিক আর হক। দিনের প্রথমার্ধে শুনানির শুরুতে আদালত দুধে অ্যান্টিবায়োটিক কিভাবে আসে, সেটির উৎস এবং এসব মানব শরীরে কী ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে- জানতে চান। বিএসটিআই কখনো দুধের অ্যান্টিবায়োটিক পরীক্ষা করে দেখেছে কি না সে বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন, বিস্ময় প্রকাশ করেন।

উত্তরে ব্যারিস্টার সরকার এম আর হাসান বলেন, বিভিন্ন সোর্স থেকে দুধে অ্যান্টিবায়োটিক প্রবেশ করে। অনেক কৃষক গরু মোটাতাজাকরণ এবং দুধ বেশি পাওয়ার জন্যও ইনজেকশন ব্যবহার করেন। দুধের অ্যান্টিবায়োটিক পরীক্ষা করার প্যারোমিটার বিএসটিআইতে আগে ছিল না। কিন্তু এখন মান পরীক্ষার বিষয়ে প্যারোমিটার অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। একটি কমিটি করে দুধের মান পরীক্ষা করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

হাইকোর্ট এ সময় জানতে চান, আদৌ পাস্তুরিত করার মধ্য দিয়ে অ্যান্টিবায়োটিক রোধ করার সুযোগ রয়েছে কি না? জবাবে আইনজীবী বলেন, যে তাপমাত্রায় হিট দেয়া হয় তাতে অ্যান্টিবায়োটিক অক্ষত থাকে। আদালত বলেন, তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা প্রতিবেদনের বিষয়ে কোন ধরনের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে?

জবাবে আইনজীবী বলেন, মানুষের শরীরের অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করছে না। হয়তো এ কারণেই। পাস্তুরিত করার পরও যদি অ্যান্টিবায়োটিক থাকে তাহলে পাস্তুরাইজড করুক আর না করুক সেই দুধ তো মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বলে আদালত বিস্ময় প্রকাশ করেন। আদালত বিএসটিআই’র উদ্দেশ্যে বলেন, এসব দুধ কেন এখনো বাজারজাত করা হচ্ছে? হাইটেক ল্যাব রেখে লাভ কী; যদি খাদ্য সিকিউরড না করতে পারে?

এ সময় বিএসটিআই’র আইনজীবী আদালতকে জানান, বিএসটিআই’র একজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয়েছে। ৬ মাসের মধ্যে নিরাপদ খাদ্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের নিয়ে একটি কমিটি করে আইসিডিডিআর,বি, সায়েন্স ল্যাবরেটরি এবং বিএসটিআই’র ল্যাবে একই দুধের নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব।

তখন আদালত বলেন, তার প্রতিবেদন কবে দেয়া হবে, সেটাও কি ছয় মাস পরে জানাবেন? রিটকারীর পক্ষের কৌঁসুলি অনিক আর হক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক আ ব ম ফারুকের দুধ পরীক্ষার প্রতিবেদন আলোচনা করে আদালতকে বলেন, যেভাবেই হোক না কেন দুধে বিন্দুমাত্র অ্যান্টিবায়োটিকের অস্তিত্ব থাকতে পারে না। এ ছাড়াও দুধে ভেজিটেবল অয়েল রয়েছে। সেই অয়েল কমাতে ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা হয়। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে দেশে বাজারজাতকৃত সকল পাস্তুরিত দুধ পরীক্ষার নির্দেশ দেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ