Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রথম রাজনৈতিক স্লোগান হিসেবে বিজেপির ব্যবহার

জয় শ্রীরাম-২

বিবিসি | প্রকাশের সময় : ১৩ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

অযোধ্যায় বাবরি মসজিদের বিতর্কিত জায়গায় রামমন্দির নির্মাণের পক্ষে আন্দোলনকালে জনসমর্থন গড়ে তোলার চেষ্টায় আশির দশকের শেষের দিকে বিজেপি প্রথম রাজনৈতিক স্লোগান হিসেবে ‘জয় শ্রীরাম’ এর ব্যবহার শুরু করে। দলের তৎকালীন সভাপতি লাল কৃষ্ণ আদভানি রামমন্দির নির্মাণের পক্ষে অযোধ্যা পানে এক পদযাত্রা শুরু করেন। ১৯৯২ সালের ডিসেম্বরে হিন্দুরা ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি দিয়ে বাবরি মসজিদ ভেঙ্গে ফেলে।

বিজেপির বিশ্বাস, একটি মন্দির ধ্বংস করে সেই স্থানের উপর এই বাবরি মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে। এই আন্দোলন ভারতের হিন্দু ভোটারদের বিজেপির পক্ষে নিয়ে যায়। তারা দেবতা রামকে রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত করতে সাহায্য করে। তারপর থেকে বিজেপি প্রতিটি নির্বাচনে রামকে ব্যবহার করেছে। চলতি বছরের নির্বাচনেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

সমালোচকরা বলেছেন, পার্লামেন্টের ভেতরে বা বাইরে যারা এভাবে সংখ্যালঘুদের হেনস্থা করছেন, তারা গত এপ্রিল-মের নির্বাচনে বিজেপির বিশাল বিজয়কে তাদের এই আচরণের প্রতি সমর্থনের বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করেন। ৫৪৩ সদস্যের পার্লামেন্টে বিজেপি তিনশ’র বেশি আসনে জিতেছে।

নরেন্দ্র মোদির প্রথম মেয়াদে ভারতে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে অনেক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। মুসলমানরা গরুর গোশত খাচ্ছে বা জবাই করার জন্য গরু চোরাচালানের চেষ্টা করছে। এমন অভিযোগ তুলে তথাকথিত ‘গোরক্ষকরা’ তাদের ওপর অনেক হামলা চালিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এরকম হামলা সমর্থন করেননি। কিন্তু একই সঙ্গে তিনি এসব ঘটনার নিন্দাও করেননি।

এবারের নির্বাচনে বিপুল বিজয়ের পর অবশ্য মোদি তার আগের স্লোগান ‘সবকা সাথ, সবকা ভিকাস’ এর সঙ্গে আরেকটি স্লোগান যুক্ত করেন, ‘সবকা বিশ্বাস’। তখন এমন একটি আশাবাদ তৈরি হয়েছিল যে তার এবারের মেয়াদের সরকার হয়তো ভিন্ন কিছু হবে। কিন্তু বহু ভারতীয়রা মনেই সংশয়, সরকার আসলে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেবে কীনা।

২০১৪ সালের পর থেকে উন্মত্ত হিন্দু জনতার হামলায় কয়েক ডজন মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েকশ’। কিন্তু এর মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি মামলাতেই আসলে কারও সাজা হয়েছে।

অনেক ক্ষেত্রেই অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কারণ কোনো প্রমাণ নাকি পাওয়া যায়নি। নরেন্দ্র মোদির দলের লোকজন তাদের উল্টো সমাদর করছে। বিজেপির নেতারা অবশ্য এসব ঘটনাকে অতটা গুরুত্ব দিতে চান না। তারা মনে করেন, এসব ‘ছোটখাট’ ঘটনাকে ব্যবহার করে সাংবাদিকরা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে চায়।
একজন বিজেপি এমপি সম্প্রতি এক নিউজ ওয়েবসাইটকে বলেন, ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান অনেক জনপ্রিয় হয়েছে। তার কারণ হিন্দুরা আসলে এর মাধ্যমে ভারতে সংখ্যালঘুদের পক্ষে যে পক্ষপাতিত্ব ও ব্যবস্থা রয়েছে, তার প্রতিবাদ জানাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ওরা আসলে বলতে চায় আমরা হিন্দু এবং আমরা হিন্দু হিসেবেই গণ্য হতে চাই’। তবে সমালোচকরা বলছেন, এই কাজটা অন্যভাবে এবং ভালো উপায়েও করা যায়। (শেষ)



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ