Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাংলাদেশ দেখিয়েছে উন্নয়নই ঘুরে দাঁড়ানোর সেরা উপায়

স্কুল জীবন থেকে বাংলাদেশে আসার স্বপ্ন দেখতাম : বিশ্ব ব্যাংক সিইও

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৭ এএম

বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করে বিশ্ব ব্যাংকের সিইও ক্রিস্টালিনা জর্জিভা বলেছেন, উন্নয়নই যে ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতা অর্জনের সবচেয়ে সেরা উপায় সেটি বাংলাদেশ করে দেখিয়েছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ‘ঢাকা মিটিং অব দ্য গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশন’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। কমিশনের চেয়ারম্যান জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আগে বান কি মুন এবং ক্রিস্টালিনা জর্জিভা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।

বিশ্ব ব্যাংকের সিইও ক্রিস্টালিনা জর্জিভা তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয় তখন আমি হাই স্কুলে পড়তাম। তখন থেকেই আমি এ দেশে আসার স্বপ্ন দেখতাম। বাংলাদেশের সফলতার কথা বলতে গিয়ে বিশ্ব ব্যাংক সিইও বলেন, ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশ যেভাবে সাফল্য অর্জন করেছে, তাতে আমি মুগ্ধ। মানুষের মাথাপিছু আয় ১০০ ডলার থেকে বেড়ে ১৫০০ ডলার হয়েছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্যের হার তিন শতাংশে নামিয়ে আনার পথে ভালোভাবেই রয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশে জনসংখ্যার ঘনত্ব অনেক বেশি। দেশটি বিশেষত নারীর ক্ষমতায়নের মধ্য দিয়ে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমিয়ে আনতে পেরেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঝুঁকির মুখে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ সামনের দিকে রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন জর্জিভা।

মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিককে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে প্রশংসা করেন তিনি।
জর্জিভা বলেন, নিজেদের অনেক সমস্যা থাকার পরও পালিয়ে আসা (রোহিঙ্গা) নাগরিকদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে মানবিকতার দৃষ্টান্ত রেখেছে, তাতে আমি অভিভ‚ত। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানান।
বাংলাদেশ যেহেতু জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে, তাই এখানকার মানুষকে কিভাবে সুরক্ষা দেয়া যায় সে উপায় বের করতেই ঢাকাতেই এই আয়োজন বলে জানান বিশ্ব ব্যাংক সিইও।

তিনি বলেন, আমাদের নষ্ট করার মতো সময় এখন নেই। আমরা যদি আমাদের জানমাল রক্ষা করতে চাই, তাহলে আমাদের অভিযোজন ক্ষমতা বাড়াতে হবে, এটাই আমাদের লক্ষ্য। জর্জিভা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকির সূচকে ২০১৪ সালে বাংলাদেশ ছিল প্রথম স্থানে। কিন্তু এটি এমন একটি স্থান যেখানে পূর্ব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নাগরিকদের নিরাপত্তা দিচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি কিভাবে মোকাবেলা করতে হয় তার অবিশ্বাস্য উদ্ভাবনী দক্ষতা আমরা এখানে দেখেছি। বাংলাদেশের উন্নয়নে সহযোগী হতে পেরে বিশ্ব ব্যাংক গর্বিত বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
দুই দিনের সফরে জর্জিভা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করবেন। এছাড়া বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তা প্রাপ্ত একটি প্রকল্প পরিদর্শন করবেন তিনি।

এর আগে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিশ^ব্যাংক জানায়, ক্রিস্টালিনার এই সফর বাংলাদেশ ও বিশ্ব ব্যাংক গ্রুপের মধ্যকার দীর্ঘদিনের সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে সহায়তা করবে বলে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে জর্জিভা বলেছেন, বাংলাদেশকে গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন-সহযোগী হিসেবে পেয়ে বিশ্ব ব্যাংক গর্বিত। আমরা বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিকে ত্বরান্বিত করার উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টাকে সাহায্য করব। ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম হওয়া সত্তে¡ও বাংলাদেশ বিশ্বকে দেখিয়েছে অভিযোজন ও দুর্যোগ মোকাবিলার প্রস্তুতি কিভাবে নিতে হয়। আমি বাংলাদেশের সফল উন্নয়ন উদ্ভাবনগুলো এবং তা কিভাবে অন্যান্য জায়গায় প্রয়োগ করা যায় তা আরও গভীরভাবে জানতে চাই।
স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশের প্রথম উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে বিশ্ব ব্যাংক অন্যতম। এ পর্যন্ত সংস্থাটি বাংলাদেশকে ৩০ ডলারের অনুদান ও সুদমুক্ত ঋণ দিয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে সবচেয়ে বড় আইডিএ কর্মসূচি চলছে; যার পরিমাণ ১২ দশমিক ছয় বিলিয়ন ডলার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ