Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সমবায় অধিদপ্তরে তুঘলকি পদোন্নতি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

গায়েবি বিভাগীয় মামলার অজুহাত দেখিয়ে যোগ্য ও জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত নিবন্ধক, যুগ্মনিবন্ধক ও উপ-নিবন্ধক পদে পদোন্নতি বঞ্চিত করার অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা সন্তানরা রয়েছেন। কী কারণে তাদের বিরুদ্ধে গায়েবী বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে সে বিষয়ে বঞ্চিতরা কোনো কারণও জানতে পারেননি।
নিয়মানুয়ায়ি আতœপক্ষ সমর্থনের জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার কথা থাকলেও সেটিও দর্শানো হয়নি। একটি বিশেষ গোষ্ঠীর পদোন্নতি দিতে গিয়ে মেধা ও জ্যেষ্ঠতাকে উপেক্ষা করা হয়েছে।
মেধাক্রম ও জ্যেষ্ঠতায় থাকা কর্মকর্তাদের পদোন্নতির জন্য বিবেচনায় আনা হয়নি। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে গায়েবী বিভাগীয় মামলা সাজানো হয়েছে। পছন্দের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিতে গিয়ে ত্রæটিপূর্ণ কার্যপত্র তৈরির অভিযোগ রয়েছে। খোদ সমবায় অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতনদের অনিচ্ছা থাকা সত্তে¡ও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সাজিয়ে বিভাগীয় মামলা করতে বাধ্য করা হয়েছে। আর এর নেপথ্য প্রভাব খাটাতে বিশেষ ভ‚মিকা পালন করেছেন মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ এক কর্মকর্তা। ওই কর্মকর্তাকে অযৌক্তিভাবে কতিথ বিভাগীয় মামলার অজুহাতে পদোন্নতি বঞ্চিত না করার নিবেদন করলেও আমলে নেননি এই শীর্ষ কর্মকর্তা। অবশেষে গতকাল মঙ্গলবার তিন স্তরের পদোন্নতি দিয়ে মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এপ্রেক্ষিতে সমবায় অধিদপ্তরের সিনিয়র কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষেভের সৃষ্টি হয়েছে।
বঞ্চিত কর্মকর্তারা হলেন, আবুল হোসেন, আবু তাহের চৌধুরী খোরশেদ আলম, উপনিবন্ধক কাজী মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, মিজানুর রহমান, নবীরুল ইসলাম, উপনিবন্ধক পদে শেখ ফজলুল করিমসহ ৬জন। এদের মধ্যে কেউ কেউ মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রয়েছেন।
এবিষয়ে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব কামাল উদ্দীন তালুকদার ইনকিলাবকে বলেন, তিন স্তরের পদোন্নতির ক্ষেত্রে কোনো ধরনের অনিয়ম হয়নি। প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্যের ভিত্তিতে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা (ডিপি) রয়েছে তাদেরকে পদোন্নতির বিবেচনায় আনা যায়নি। যা কিছু হয়েছে বিধি বিধান অনুযায়ী হয়েছে।
জানা গেছে, বিসিএস (সমবায়) ক্যাডারের অতিরিক্ত নিবন্ধক/ যুগ্মনিবন্ধক ও উপনিবন্ধক পদে পদোন্নতির জন্য বিভাগীয় পদোন্নতির বোর্ডের সভা ডাকা হয়। গত বছর ৬ ডিসেম্বর সভা ডাকা হয়। ওই সভায় শূণ্য পদের বিপরীতে পদোন্নতি যোগ্য কর্মকর্তাদের তালিকা উপস্থাপন করা হয়। সেই সভায় মেধাক্রম ও জ্যেষ্ঠতাকে প্রাধান্য দিয়ে পদোন্নতির জন্য বিবেচনায় সিদ্ধান্ত হয়। নিয়োগ বিধি অনুযায়ী সমবায় অধিদপ্তর থেকে শূণ্য পদে পদোন্নতি যোগ্য কর্মকর্তাদের তালিকা স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মবায় বিভাগে পাঠানো হয়।
জ্যেষ্ঠতা অনুযায়ী অতিরিক্ত নিবন্ধক পদে ৬জন, যুগ্মনিবন্ধক পদে ২০জন ও উপনিবন্ধক পদে ১২ জন কর্মকর্তার নাম বাছাই করা হয়। ওই তালিকা বিভাগীয় পদোন্নতি বোর্ডের সভায় উপস্থাপন করা হয়। জনপ্রশাসন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে গঠিত সভায় এসব কর্মকর্তাদের আমলনামা পর্যালোচনা করা হয়। যোগ্যদের পদোন্নতির জন্য অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সদস্যরা সুপারিশ করা হয় ওই সভায়। সর্বশেষ গত ২ জুলাই পদোন্নতি বোর্ডের সভার আগে যোগ্য কর্মকর্তাদের (মুক্তিযোদ্ধার সন্তান) নামে গায়েবী বিভাগীয় মামলা সাজানো হয়। ওই সভায় এসব কথিত মামলার প্রস্তুত করা ত্রটিপূর্ণ কার্যপত্র উপস্থাপন করা হয়। এ সময় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা বিরোধিতা করলেও আমলে নেননি পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের শীর্ষ ওই কর্মকর্তা। উল্টো বিরোধিতা করে তার পছন্দের (মেধাক্রমে জুনিয়র) পদোন্নতির তালিকায় অন্তর্ভ‚ক্ত করা হয়।
বিগত বিভাগীয় পদোন্নতি বোর্ড (ডিপিসি)র কার্যপত্রে মোট ১০টি কলাম ছিল এবার ১৬টি কলাম দিয়ে জটিল পরিস্থিতি তৈরি জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। পাঁচ বছরের বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) সারা জীবনের এসিআর দিয়ে কতিথ খারাপ দিক তুলে ধরা হয়েছে। ৮টি পলাতক সমবায় সমিতির পোপন প্রতিবেদন তৈরি ও তা আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনও সুযোগ না দিয়ে দীর্ঘদিন ফেলে রাখা হয়। ঠিক পদোন্নতির আগে উদ্দেশ্যমূলক ভাবে গায়েবি মামলার নামে বঞ্চিত করা হয়েছে।
##

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ