পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
টানা তিন বছর বিভিন্ন সময় দৈনিক ইনকিলাবে রিপোর্ট প্রকাশের পর অবশেষে মৎস্য প্রজনন মৌসুমে আগামী দুই মাস সুন্দরবনে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়েছে। বিষ দিয়ে মাছ শিকার রোধ, মাছের নিরাপদ প্রজনন ও সংরক্ষণ করতেই এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে বলে জানান কর্তৃপক্ষ। তবে নিষেধাজ্ঞার খবর জানার পর জেলেদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বন বিভাগের উপ প্রধান বন সংরক্ষক মো. জহির উদ্দিন বলেন, সুন্দরবনের জীব ও বৈচিত্র রক্ষা এবং মৎস্য প্রজননকে স্বাভাবিক পর্যায়ে উন্নিত করার লক্ষ্যে এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। আশা করা যায় আগামী মৌসুমে মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে এ পদক্ষেপ বিশেষ ভ‚মিকা রাখবে। এতে করে জেলারা যেমন সুফল ভোগ করবে তেমনি দেশের মৎস্য উৎপাদনে নতুন মাত্রা যোগ হবে।
সূত্রমতে, জুলাই ও আগস্ট মাসে পাস-পারমিট নিয়ে বনের অভ্যন্তরে খালে এক শ্রেণির অসাধু জেলে জাল দিয়ে মাছ আহরণের আড়ালে বিষ প্রয়োগ করে চিংড়ি মাছ ধরে। কিন্তু ওই বিষে খালের মাছসহ জীববৈচিত্র্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়। ফলে মাছ মরে খালের পানিতে ভেসে ওঠে। বিষে মরা মাছ খেয়ে অন্যান্য জীব-জন্তুও মারা যায়, এতে পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে।
এ নিয়ে গত ৩ বছর যাবত দৈনিক ইনকিলাবে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশিত হয়। তৎকালীন ডিএফও এবং বর্তমান ডিসিসিএফ এ বিষয়ে মাঠপর্যায়েও ব্যাপক পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এছাড়া সুন্দরবন বনবিভাগের পশ্চিম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা গত এক বছরে বিষ প্রয়োগে মাছ শিকারের উপর ব্যাপক কড়াকড়ি আরোপ করে। তবে এতে বিপাকে পড়েছে জেলারা। অন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না থাকায় হতাশায় ভ‚গছে তাদের পরিবারগুলো।
মৎস্য ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান শেলু বলেন, সুন্দরবনের খালে মাছ ধরা বন্ধ ঘোষণায় জেলেদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। এই নিষেধাজ্ঞার কারণে অধিকাংশ জেলে নদীতে মাছ আহরণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। নিষেধাজ্ঞার সময়ে জেলেদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ সহায়তা দেয়ার দাবি করেন তিনি। সুন্দরবনের খুব কাছের জনপদ মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের জয়মনির মো. শামসুদ্দিন হাওলাদারসহ বিভিন্ন খালে মাছ ধরে পরিবারের জীবিকা চালান এমন আরও অনেক জেলে জানান, ‘সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ ধরে খারাপ লোকেরা, আমরা ফরেস্ট (বনবিভাগ) থেকে অনুমতি নিয়ে মাছ ধরি পেটের দায়ে। এটা করেই আমাদের সংসার চলে, এটাই আমাদের পেট মজুরি। শুনছি আর মাছ ধরতে পারব না, এখন তো জীবনে মারা যাবো।’
পূর্বসুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মো. শাহিন কবির বলেন, ‘জুলাই-আগস্ট এই দুই মাস পর আবার জেলেদের মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া হবে।’ এসময়ে বন নির্ভরশীল পেশাজীবী জেলেরা কীভাবে তাদের জীবিকা চালাবে জানতে চাইলে এই বন কর্মকর্তা বলেন, ‘তাদের জন্য বিকল্প কর্মসংস্থানের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
সুন্দরবন বিভাগের বন সংরক্ষক (সিএফ) আমির হোসেন চৌধুরী বলেন, সুন্দরবনের কাছ (জ্বালানি) সংগ্রহের জন্য বাওয়ালিরা নির্দিষ্ট পরিমান রাজস্ব দিয়ে পাস-পারমিট নেয়। তবে অনেকে অবৈধভাবে বনে প্রবেশ করে। এদের মধ্যে কেউ কেউ সুন্দরবনের মৎস্য ও মৎস্য প্রজাতির সম্পদ আহরণ করে। সাদা মাছের প্রজনন মৌসুমে মাছের আধিক্য থাকায় এক শ্রেণির অসাধু জেলেরা অধিক লাভের জন্য সুন্দরবনের খালগুলোতে বিষ দিয়ে মাছ ধরেন। এজন্য তাদের ঠেকাতে এবং সুন্দরবনের খালে মাছের প্রজনন বাড়াতে দুই মাস নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।