পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর দুই বছর অতিবাহিত হলেও এখনো নিয়োগ হয়নি ১০ হাজার চিকিৎসকের। তৃণমূল মানুষের দোরগোড়ায় চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিতে এবং দেশের চিকিৎসক সংকট নিরসনে ২০১৭ সালের এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাস্থ্য মন্ত্রণলায়কে এ নির্দেশ দেন। এরপর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে চিকিৎসক নিয়োগে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষা শেষে মৌখিক পরীক্ষার মুখোমুখী হন ১৩ হাজার ২০০ জন। এর মধ্যে চূড়ান্তভাবে উত্তীর্ণ হন ১৩ হাজার ১৫৮ জন। যার মধ্য থেকে মাত্র ৪ হাজার ৭৯২ জনকে ক্যাডার হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি। আর একই পদ্ধতিতে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এবং উত্তীর্ণ হয়ে নন-ক্যাডার হিসেবে সুপারিশ পায় বাকী ৮ হাজার ৩৬০ জন।
সংশ্লিষ্টদের মতে, এতে দেশের কাক্সিক্ষত চিকিৎসা সেবা প্রদানে ব্যর্থ হচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। ফলে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা এসডিজি অর্জন ব্যহত হবে। পাশপাশি পিএসসি’র পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও যেসব চিকিৎসক চাকরিতে যোগদান করতে পারছে না তারাও বিষন্নতায় ভুগছেন।
জানা গেছে, বাংলাদেশের চিকিৎসক সংকট দূরীকরণে প্রধামন্ত্রী ২০১৭ সালে ১০ হাজার ডাক্তার নিয়োগের অনুমোদন প্রদান করেন। সরকারি কর্মকমিশন থেকে ১৩ হাজার ২০০ ডাক্তার লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ঘোষণা করে। তারই ধারাবাহিকতায় মৌখিক পরীক্ষা শেষে গত ৩০ এপ্রিল চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে মাত্র ৪ হাজার ৭৯২ জনকে ক্যাডার হিসেবে সুপারিশ করে ৮ হাজার ৩৬০ জনকে উত্তীর্ণ কিন্তু নন-ক্যাডার হিসেবে রাখা হয়েছে। অথচ প্রজ্ঞাপনে কোন চিকিৎসক নন-ক্যাডারভুক্ত হওয়ার কথা ছিল না।
মন্ত্রনালয় সূত্র জানায়, বিগত ১০ বছরে স্বাস্থ্যব্যবস্থা গতিশীল করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে। ১২ হাজার নারীকে স্কিলড বার্থ এ্যাটেনডেন্ট প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তৃণমূলে স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে ১৩ হাজার ৮৮২টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করা হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়েছে। জেলা সদর হাসপাতালের শয্যা সংখ্যা ১০০ থেকে ১৫০ শয্যা এমনকি ২৫০ শয্যা পর্যন্ত উন্নীত করা হয়েছে। কিন্তু সে অনুপাতে জনবলের পদ সৃষ্টি হয়নি। এখনও ২০০৮ সালের কাঠামো দিয়েই চলছে। যার নিদারুণ পরিণতি ভোগ করতে হচ্ছে কোটি কোটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে।
এখনো দেশের চিকিৎসকদের অর্ধেক পদ এটাচমেন্টের মাধ্যমে পুরণ করা হয়। অর্থাৎ একই চিকিৎসককে দুই স্থানে পদায়ন করে দুটি পদই পূর্ণ দেখানো হয়। এভাবে কাগজে কলমে চিকিৎসক থাকলেও আদতে একজন চিকিৎসক দুই জায়গায় পদায়ন আছেন আর ভুগছে বাকি সবাই।
সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দিতে বিপুল সংখ্যক ক্যাডার চিকিৎসক নিয়োগ এখন সময়ের দাবি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, এদেশে আরো ৫৬ হাজার সরকারি চিকিৎসক প্রয়োজন। ডাক্তারগণ লোক বলের অভাবে গড়ে প্রায় ১৬ ঘণ্টা করে ডিউটি করে যাচ্ছে। অন্যদিকে বিএমডিসির নীতিমালা অনুযায়ী চিকিৎসা শাস্ত্রের মৌলিক বিষয়গুলোতে প্রতি ১০ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১ জন শিক্ষক থাকতে হবে। কিন্তু বাস্তবে সেই অনুপাতে সরকারি মেডিকেল শিক্ষক নেই। নন-ক্যাডার চিকিৎসকেরা জানান, দেশে চিকিৎসকের সংকট আছে। তাঁরা ক্যাডারভুক্ত হতে পারেননি। চিকিৎসক সংকট নিরসনে ক্যাডারভুক্তির দাবি জানান তাঁরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী জানান, আমরা ৮ হাজার ৩৬০ জন বিসিএস উত্তীর্ণ চিকিৎসক সরকারি সেবাদানের নিশ্চয়তা পেতে বেশ কিছুদিন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ছুটোছুটি করেছি। মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন করে শান্তিপূর্ণভাবে প্রধানমন্ত্রী দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছি। কিন্তু কোনভাবেই সাড়া পাচ্ছি না। তাই দেশের চিকিৎসক সংকট নিরসনে ক্যাডারভুক্তির ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন শিক্ষার্থীরা। ৩৯তম বিসিএস নন-ক্যাডারের চিকিৎসক মাসুদুল ইসলাম বলেন, আট হাজারের বেশি চিকিৎসক চরম হতাশায় ভুগছে। চিকিৎসক সুজিত কুমার বড়–য়া বলেন, আমাদের তো বলা হয়েছিল ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হবে। কিন্তু পাস করার পরও পদ নিয়ে জটিলতায় আমরা নিয়োগ পাচ্ছি না। বলা হচ্ছে পদ খালি না থাকার কারণে আমাদের নিয়োগ দেওয়া যাচ্ছে না। এতে করে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্য অধিদফতরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, বিষয়টি আসলেই মর্মান্তিক। পাবলিক সার্ভিস কমিশন ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তে উভয় সঙ্কটে পড়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য খাতে চিকিৎসকও দরকার। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চিকিৎসক পদে নন-ক্যাডার নেওয়ার সুযোগ নেই। অথচ পাবলিক সার্ভিস কমিশন ৮ হাজার ৩৬০ জনকে উত্তীর্ণ কিন্তু নন-ক্যাডার হিসেবে রেখেছে, যা ঠিক করেনি।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।