Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশব্যাপী বাম জোটের অর্ধদিবস হরতাল পালিত, ১৪ জুলাই জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ জুলাই, ২০১৯, ২:০৮ পিএম | আপডেট : ২:২৩ পিএম, ৭ জুলাই, ২০১৯

পুলিশের বাধার মুখেও মিছিল, সড়ক অবরোধ করে হরতাল পালন করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে এ জোট সারা দেশে আধাবেলা হরতাল পালন করে। গ্যাসের দাম কমানোর দাবিতে এবং পুলিশের বাধার প্রতিবাদে আগামী ১৪জুলাই জ্বালানি মন্ত্রণালয় ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষনা করেছে বাম জোট। হরতাল শেষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে জোটের সমন্বয়ক মোশারফ হোসেন নান্নু এ কর্মসূচি ঘোষনা করেন।
বাম গণতান্ত্রিক জোটের ডাকা এ হরতালে বিএনপি এবাং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির নৈতিক সমর্থন ছিল। এ ছাড়া পূর্ণসমর্থন জানায় গণফোরাম, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ ন্যাপ, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য এবং ক্ষেত মজুর সমিতি।
রোববার সকাল ৬টা থেকে এই হরতালে রাজধানীর পল্টন, প্রেসক্লাব, শাহবাগ এলাকায় থেমে থেমে বৃষ্টির মধ্যেই মিছিল করছেন সিপিবি, বাসদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণসংহতি আন্দোলনসহ জোটভুক্ত বাম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। প্রগতিশীল ছাত্র জোটের কর্মীরা শাহবাগ এলাকায় সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করায় ওই মোড় হয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ছাত্ররা সড়ক অবরোধ করে রাখে। তবে রাজধানীর অন্যান্য এলাকায় যানবাহন চলছে স্বাভাবিকভাবে। হরতালের মধ্যে বিশৃঙ্খলা এড়াতে রাজধানীতে মোড়ে মোড়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সদস্য মোতায়েন ছিল।
সকাল সাড়ে ৬টার দিকে প্রগতিশীল ছাত্রজোটের শতাধিক নেতাকর্মী মিছিল নিয়ে শাহবাগ চত্বরে অবস্থান নেন। পরে সেখানে তারা সমাবেশ শুরু করলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি মেহেদী হাসান নোবেল, ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি ইমরান হাবিব রুমন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী, ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা কলেজ শাখার সভাপতি জোবায়ের প্রধান এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরে বৃষ্টি শুরু হলে নেতাকর্মীরা বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েন। তবে রাস্তার ওই অংশ হরতালকারীদেরই নিয়ন্ত্রণে ছিল।
শাহবাগ মোড় বন্ধ থাকায় এলিফেন্ট রোডের শাহবাগমুখী যানবাহনগুলোকে কাঁটবন সিগন্যাল থেকে হাতিরপুর ও নীলক্ষেতের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। হরতালে পল্টন এলাকাতেও বাসগুলোকে নির্ধারিত রুট ছেড়ে অন্য রাস্তা ধরে গন্তব্যে যেতে দেখা যায়। গুলিস্তান থেকে প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে চলাচলকারী গাড়িগুলো জিপিও মোড়ে এসে সচিবালয়ের পাশ ঘেঁষে হাই কোর্টের দিকে চলে যায়। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তা এবং পল্টন মোড়ের কিছু অংশ দখল করে হরতালের সমর্থনে স্লোগান দেন হরতালকারীরা। সকালে পল্টন মোড়ে একটা গাড়ি ভাঙচুরের শিকার হয়েছে। তবে পরে আর এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি।
বাম জোটের শরিক সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ঢাকাসহ সারা দেশে বিভিন্ন স্থানে আমাদের নেতাকর্মীদেরকে হরতাল পালনে বাধা দেওয়া হয়েছে। জয়পুরহাট, ময়মনসিংহ ও ঢাকায় কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে পরে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের বাধার প্রতিবাদে নতুন কর্মসূচি ঘোষনা করা হবে। সরকার গত ৩০ জুন সব পর্যায়ে গ্যাসের দাম গড়ে ৩২.৮ শতাংশ বাড়ানোর ঘোষণা দিলে তার প্রতিবাদে ৭ জুলাই দেশজুড়ে আধাবেলা হরতাল করার ঘোষণা দেয় বাম গণতান্ত্রিক জোট। জোটের শরিক দলগুলো সরকারের ওই সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক বর্ণনা করে ‘জনগণের পকেট কাটার’ আরেকটি ব্যবস্থা হিসেবে অখ্যায়িত করে। বাম সংগঠনগুলোর এই হরতালে বিএনপি ও তাদের শরিক কয়েকটি দল সমর্থন জানালেও তাদের কর্মীদের এদিন মাঠে দেখা যায়নি।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এর প্রতিবাদে জনগণকে সাথে নিয়ে ‘রাজপথে তীব্র আন্দোলন’ গড়ে তোলার হুঁশিয়ারি দেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শরিক ওয়ার্কাস পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পেছনে ‘যৌক্তিক কারণ রয়েছে’ মন্তব্য করে সবাইকে তা মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ