পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রামপালসহ সুন্দরবনবিনাশী সকল প্রকল্প বাতিলসহ বনের ভেতর দিয়ে কয়লা, তেল ও ফ্লাইএ্যাশ পরিবহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে তেল-গ্যাস খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ। কমিটির আহŸায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ ও সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ গতকাল এক বিবৃতিতে এ দাবি করেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ৪ জুলাই বাকুতে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর অধিবেশনে বাংলাদেশ সরকারকে বিশ^ ঐতিহ্য সুন্দরবন রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আরও কয়েক মাস সময় দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রয়োজনীয় সমীক্ষা চালানোরও কথা বলেছে তারা। এই অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়ে সরকারি প্রতিনিধিদল আবারও নানা ভুল তথ্য উপস্থাপন করেছে, সেসব প্রতিশ্রæতি দিয়েছে যেগুলোর সবগুলোই তারা বারবার ভঙ্গ করেছে। এমন সব উদ্যোগ গ্রহণ করার কথা বলেছে যেগুলো মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়।
বিষাক্ত পণ্যবাহী নৌপরিবহনের ঝুঁকি থেকে সুন্দরবন রক্ষার অঙ্গীকার ও আইন থাকা সত্তে¡ও সরকার গত ক’বছরে এই বিষয়ে কোনো উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ফারাক্কার কারণে সৃষ্ট বৈরী প্রভাব নিরসনেও কিছু করা হয়নি। বারবার বিষাক্ত পণ্যবাহী জাহাজ ডোবার পরে স্থানীয় জনগণ এবং স্বেচ্ছাসেবীরা প্রাণান্তকর চেষ্টা করে ক্ষয়ক্ষতি সামান্য কিছু কমাতে পারলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর ভ‚মিকা ছিল খুবই দায়িত্বহীন।
সরকার একদিকে এই নৌপথে বিষাক্ত পণ্যবাহী জাহাজ পরিবহন বন্ধ করছে না, অন্যদিকে দেশ-বিদেশের ব্যাপক প্রতিবাদ সত্তে¡ও অচিন্তনীয় ঝুঁকি তৈরী এবং সুন্দরবনবিনাশী রামপাল প্রকল্প নিয়ে এখনো অগ্রসর হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ২০১৭ সালে ইউনেস্কো অধিবেশনে দেয়া অঙ্গীকার ভঙ্গ করে সুন্দরবনের চারপাশে আরও দুই শতাধিক বিষাক্ত পণ্যের প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে। কয়দিন আগে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে কয়েকটি সিমেন্ট কারখানা স্থাপনের।
সুন্দরবনের কাছে বরগুনা, পায়রায় আরও কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ চলছে। সরকার দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা মেটানোর জন্য রামপাল প্রকল্প করছে বলে দাবি করে, এবারও ইউনেস্কো অধিবেশনে করুণভাবে এটাই উপস্থাপন করেছে যে, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খুব দরকার। বাংলাদেশের পক্ষে লবিংএ যোগ দিয়েছে কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিরা যাদের অনেকের বাংলাদেশে নদী বন বিনাশী বিদ্যুৎ প্রকল্পে বিনিয়োগ আছে। কিন্তু বিদ্যুতের জন্যই রামপাল, রূপপুর, মাতারবাড়ী, পায়রা, বাঁশখালী প্রকল্প করা জরুরি তা মোটেই সত্য নয়। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যে এর চাইতে অনেক কম ব্যয়বহুল, পরিবেশবান্ধব, নিরাপদ পথ আছে তা আমরা সরকারি মহাপরিকল্পনার বিকল্প রূপরেখায় পরিষ্কারভাবে দেখিয়েছি।
ইউনেস্কোর দায়িত্ব বিশ^ ঐতিহ্য হিসেবে সুন্দরবন রক্ষা করার। আসলে ম‚ল দায় তো সরকারেরই থাকার কথা। দেশে গত ১০ বছর ধরে সুন্দরবিনাশী সকল প্রকল্প বন্ধ করতে বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ আন্দোলন করছেন, বিশেষজ্ঞরা কথা বলছেন। জনমত, বিশেষজ্ঞ মত, দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থ, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখে সুন্দরবনের অতুলনীয় ভূমিকার গুরুত্ব সরকারের কাছে থাকলে সরকার অনেক আগেই এসব প্রকল্প বাদ দিয়ে সুন্দরবনকে আরও শক্তিশালী করায় মনোযোগ দিতো।
আমরা তাই আবারও সরকারের কাছে দাবি জানাই, ইউনেস্কোর অধিবেশনে বারবার মিথ্যার ঝুড়ি সাজানোর চেষ্টা বাদ দিয়ে রামপালসহ দেশকে অরক্ষিত করার সুন্দরবনবিনাশী সকল প্রকল্প অবিলম্বে বাতিল করুন, বিশ^বাসীর কাছে দেশকে আর কলঙ্কিত করবেন না। দেশকে মহাবিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেবেন না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।