কলাপাড়ায় নির্মাণাধীন পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বাংলাদেশি ও চীনা শ্রমিক অসন্তোষের জের কাটিয়ে দীর্ঘ পনের দিন পর কাজে যোগ দিয়েছে বাংলাদেশি শ্রমিকরা। গত বুধবার সকাল থেকে সেফটি ড্রিল প্রশিক্ষণ শেষে তিনশ’ আটজন বাংলাদেশি শ্রমিক চীনাদের সাথে একযোগে কাজ করেছেন বলে জানিয়েছেন বিসিপিসিএল কর্মকর্তারা।

প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজওয়ান ইকবাল খান বুধবার রাতে জানিয়েছেন, বাংলাদেশি শ্রমিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া হচ্ছে, যাতে কেউ ভুয়া পরিচয় পত্র দিয়ে কাজ করতে না পারে। প্রায় সাত হাজার শ্রমিকের যাচাই বাচাইয়ের প্রক্রিয়া শেষ করতে সময়ের ব্যাপার তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ করার লক্ষ্যে নির্বাচিত শ্রমিকের মধ্যে বুধবার সকাল ছয়টায় তিনশত আট জন বাংলাদেশি শ্রমিক পূর্বের মতো সেফটি ড্রিল প্রশিক্ষণ শেষে চীনাদের সাথে একযোগে কাজে যোগ দিয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক (প্রধান প্রকৌশলী) শাহ্ আবদুল মওলা বলেন, অন্যান্য শ্রমিকরাও খুব দ্রæত কাজে যোগ দিবেন তবে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স থাকা বাধ্যতামূলক। এ ব্যাপারে প্রশাসন নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

উল্লেখ্য, গত ১৮ জুন পাওয়ার প্লান্টের অভ্যন্তরে বয়লার থেকে পরে বাংলাদেশি শ্রমিকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চীনা এবং বাংলাদেশি শ্রমিকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে চীনা শ্রমিক জাং ইয়াং ফাংয়ের (২৬) মৃত্যু হয়। এতে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হয় প্রকল্প এলাকায়। লুটপাটসহ ভাঙচুর করা হয় পাওয়ার প্লান্টের অভ্যন্তরে। পরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কয়েক দফা বৈঠকের পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগীতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ হলে গত ২১ জুন চীনা শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও বাংলাদেশি শ্রমিকদের পনের দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়।

চীনা শ্রমিক নিহত, পাওয়ার প্লান্টের অভ্যন্তরে ভাঙচুর এবং লুটের ঘটনায় অজ্ঞাত প্রায় ছয় শত বাংলাদেশি শ্রমিককে আসামি করে এনইপিসির সেফটি ডিরেক্টর ওয়াং লিং বিং কলাপাড়া থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে। এদের মধ্যে ১৬ বাংলাদেশি শ্রমিককে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ মামলায় অভিযুক্ত ছাড়া সকল শ্রমিকরাই পর্যায়ক্রমে পুনরায় কাজে যোগ দিবেন বলে জানিয়েছেন বিসিপিসিএল কর্মকর্তারা।