Inqilab Logo

বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৬ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা

রোববার থেকে কার্যকর

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

রাজধানীর অলিতে-গলিতে, মহাসড়কে, ভিআইভি রোডে সবখানে শুধু রিকশা আর রিকশা। রিকশার নৈরাজ্যে বিশৃঙ্খল, অনিরাপদ ও গতিহীন হয়ে উঠছে রাজধানী ঢাকা। রিকশার কারণে রাজধানীর সড়কে শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও যানজটকে কোনভাবেই নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছিল না। দেরিতে হলেও এবার সরকার রাজধানী ঢাকার যানজট নিরসনে তিনটি রাস্তায় রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে যাচ্ছে। আগামী ৭ জুলাই থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন। যে তিনটি রাস্তায় রিকশা চলাচল বন্ধ হচ্ছে সেগুলো হলো, গাবতলী থেকে আসাদগেট হয়ে একদিকে আজিমপুর, অন্যদিকে সায়েন্সল্যাব থেকে শাহবাগ। এ ছাড়া কুড়িল বিশ্ব রোড থেকে রামপুরা হয়ে খিলগাঁও হয়ে সায়েদাবাদ পর্যন্ত রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। উল্লেখিত তিনটি রাস্তায় হিউম্যান হলার, ব্যাটারির রিকশাসহ সব ধরণের অবৈধ যান চলাচলও বন্ধ থাকবে।

গতকাল বুধবার নগর ভবনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়রের সভাপতিত্বে ঢাকা মহানগরীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা আনয়নে গঠিত কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ডিএসসিসি মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।

বৈঠক শেষে মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ঢাকা শহরের সড়কে যানবাহনের শৃঙ্খলা ফেরাতে ডিটিসিএ›র একটি কমিটি গঠিত হয় যার প্রথম বৈঠক ছিলো বুধবার। এ বৈঠকে আমরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন সড়ক থেকে রিকশা, লেগুনা ও হিউম্যান হলারসহ বিভিন্ন অবৈধ এবং অঅনুমোদিত যানবাহন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেই। তারই অংশ হিসেবে প্রাথমিকভাবে রাজধানীর তিনটি রুটে- কুড়িল থেকে খিলগাঁও রামপুরা হয়ে সায়েদাবাদ এবং গাবতলী থেকে আসাদগেট মিরপুর রোড হয়ে আজিমপুর ও সাইন্সল্যাব থেকে শাহবাগ পর্যন্ত সড়কে রিকশার পাশাপাশি অন্য সব অবৈধ যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নেই। আগামী ৭ জুলাই থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, রিকশার কারণে ঢাকার রাস্তায় যানবাহনের গতি আসছে না। চলতে গিয়ে রিকশার ভিড়ে আটকে যায় গাড়ি। বিশ্বব্যাংকের তথ্যও বলছে, এক দশকে ঢাকায় যানবাহনের গড় গতি ঘণ্টায় ২১ কিলোমিটার থেকে নেমে এসেছে মাত্র সাত কিলোমিটারে। কয়েক বছরের মধ্যে তা ঘণ্টায় চার কিলোমিটারে চলে আসবে, যা হাঁটার চেয়েও মন্থর।

রিকশা নিয়ন্ত্রণের জন্য এর আগে ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন বোর্ড (ডিটিসিবি) বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নিয়েও রাজনৈতিক কারণে সফল হতে পারেনি। সিকি শতাব্দী ধরে নিবন্ধন বন্ধ থাকলেও ভোটের রাজনীতি ও ২৫টি সংগঠনের বাণিজ্যে ১২ লাখেরও বেশি অবৈধ রিকশা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে রাজধানীর রাজপথে। সিটি কর্পোরেশন দুই ভাগ হওয়ার পর প্রথম নির্বাচনে নবনির্বাচিত দুই মেয়রেরই প্রতিশ্রুতি ছিল নগরবাসীকে ‘ক্লিন ঢাকা’ উপহার দেয়া। উত্তর সিটির মরহুম মেয়র আনিসুল হক অভিজাত এলাকায় রিকশা নিয়ন্ত্রণে সফল হলেও দক্ষিণে এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। তবে দেরিতে হলেও এবার তিনটি রাস্তায় রিকশা চলাচল বন্ধের কারণে কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলবে বলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা। যদিও গতকালই বাম ঘারানার কিছু নামসর্বস্ব দল রিকশা বন্ধের প্রতিবাদ জানিয়েছে।

জানা গেছে, দুই সিটি করপোরেশনের অধীনে মহানগরীতে বৈধ লাইসেন্সধারী রিকশার সংখ্যা প্রায় ৮৬ হাজার। আর অবৈধ রিকশা আছে ১২ লাখেরও বেশি। এসব অবৈধ রিকশাই রাজধানীকে ক্রমেই কলুষিত করে যানজটের নগরীতে পরিণত করেছে।

সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, গতকাল ডিটিসিএ’র সভায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ ভূঁইয়া, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, ডিটিসিএ’র নির্বাহী পরিচালক রকিবুর রহমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ