Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নতুন বাজেট ব্যবসায়ীদের মুনাফা বাড়াবে-----নজরুল ইসলাম খান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরের পাসকৃত বাজেট জনগণের কোন কাজে আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন । তিনি বলেন, এই বাজেট জনগণের কল্যাণে নয়, ব্যবসায়ীদের মুনাফা বাড়াবে। বিএনপির এই নেতা বলেন, যে বাজেট পাস হয়েছে। কারা এই বাজেট পেশ করেছে যারা ৩০ তারিখের নির্বাচন ২৯ তারিখ রাত্রেই শেষ করে দিয়েছেন। সেই কৌশলে জোর করে ক্ষমতায় আসীন এই সরকার বাজেট পেশ করেছে। কারো কথা তারা শুনবে না। ইচ্ছা করে দুই-একটা জায়গায় বাড়ায়ে বলা হয়েছে যাতে প্রধানমন্ত্রী সেটা কমায়ে একটু প্রশংসা পেতে পারেন। সেরকমই কিছু কথা হয়েছে এবং কন্ঠভোটে অর্থবিলও পাস হয়ে গেছে।

গতকাল (রোববার) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট ব্যবসা বান্ধব নয়, ব্যসায়ী বান্ধব। এই বাজেট দ্বারা ব্যবসা সম্প্রসারিত হয়ে কর্মসংস্থান করবে না, এই বাজেট যারা ব্যবসা করে তাদের মুনাফা বৃদ্ধির বাজেট যা কোনো কাজে আসবে না আমাদের জনগণের। কারণ এই টাকা বিদেশে পাঁচার হয়ে যায়।
প্রস্তাবিত বাজেটের সমালোচনা করে নজরুল ইসলাম বলেন, এই সরকার যা নিয়েই গর্ব করুক সেটার অর্থ যোগান দেয় শুধুই শ্রমিকরা, কৃষকরা। আমাদের বিদেশে কর্মরত শ্রমিকদের টাকায় বৈদেশিক মুদ্রার ফান্ড বড় হয়ে যাচ্ছে, রিজার্ভ বাড়ছে। সরকার খুব প্রশংসা দাবি করেন। এতে শ্রমিকদের কল্যাণের জন্য কোনো কর্মসূচি নেই, বাজেটে কোনো দিক নির্দেশনা নেই।
এদেশের গার্মেন্টস শ্রমিকরা যার শতকরা ৮০ ভাগ নারী, সেই শ্রমিকদের কঠোর পরিশ্রমে জীবনধারণের যে বেতন তা না পাওয়া সত্তে¡ও তারা যে উপার্জন করেন তা নিয়ে সরকারের কোনো চিন্তা নেই, বাজেটে তাদের কল্যাণের কোনো পরিকল্পনা নেই। এদেশের কৃষক যারা আমাদেরে অর্থনীতির মূল শক্তি, সেই কৃষকদের কল্যাণে কোনো কর্মসূচি নেই। যে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধান পুঁড়িয়ে দিচ্ছে, যাতে করে তাদের এটা করতে না হয়, সেই লক্ষ্যে কোনো পরিকল্পনা ও বরাদ্ধ নেই।
সংসদে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বক্তব্যে প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম এই নেতা বলেন, সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, গত নির্বাচনে বিএনপি নাকী মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে আর সেই বাণিজ্যের টাকা সুইস ব্যাংকে জমা হয়েছে কিনা তা উনি দেখবেন। প্রধানমন্ত্রী আপনি একেবারে সাধারণ জিনিস ভুলে যান আর মানুষ তা বিশ্বাস করবে সেটা আপনি মনে করেন। এই অর্থবছর শেষ হচ্ছে মাত্র আজ। নির্বাচন হয়েছে ডিসেম্বর মাসে অর্থাৎ এই অর্থবছরের মধ্যে কত টাকা পাঁচার হয়েছে এর তো কোনো রিপোর্টই এখন পর্যন্ত করা হয় নাই। যে রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে সেই হাজার হাজার কোটি টাকা সেটা কে দিয়েছে? সেটা কোন মনোনয়ন বাণিজ্যের টাকা? কারা সেই টাকা বাইরে পাঠিয়েছে? এতোবার দাবি করবার পরেও আপনারা সেটা প্রকাশ করছেন না কেনো? আপনারা সব সময় যে ব্যবসায়ীদের নাম প্রকাশ করেন তাদেরকে নিয়ে আপনি বিদেশ সফর করেন। তাহলে তাদেরকে উৎসাহিতই করা হচ্ছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন তুলে ধরে তিনি বলেন, একটি রিপোর্টে দেখছিলাম যে, ২০০৮-০৯ সাল থেকে ২০১৮-১৯ সাল পর্যন্ত এই ১০ বছরের ৪০ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিদেশে পাঁচার হয়েছে। কাদের টাকা এসব? জনগণের টাকা, বাংলাদেশের টাকা। এই টাকা কারা পাঁচার করলো- আপনি সেটা নিয়ে তো খোঁজ নিচ্ছেন না। তাদের নাম কেনো প্রকাশ হচ্ছে না। আর আপনি ফালুত যুক্তি দিলেন যে রিপোর্ট এখন পর্যন্ত হয়নি, অর্থবছর এখনো শেষ হয় নাই, সেই সময়ে যে নির্বাচন হয়েছে আপনার কল্পনায় সেখানে মনোনয়ন বাণিজ্য হয়েছে আর সেই টাকা গেছে।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সামাধি নিয়ে না খেলার আহ্বান জানিয়ে নজরুল ইসলাম বলেন, উনি (আকম মোজাম্মেল হক) আমার অত্যন্ত বন্ধু মানুষ, আমরা একসাথে মুক্তিযুদ্ধ সংগ্রাম পরিষদ করেছি, ৩ মার্চ থেকে আমরা সমরাস্ত্র কারখানা বন্ধ করে দিয়েছি, একসাথে আমরা ১৯ মার্চ ইতিহাস সৃষ্টি করেছি পাকিস্তান আর্মির অস্ত্র কেড়ে নিয়ে তাদের সাথে লড়াই করেছি। এখন তিনি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী। তিনি বলেছেন, সংসদের যে ডিজাইন আছে সেখানে কোনো কবরের জায়গা নাই। অতত্রব জিয়াউর রহমানের কবর সরিয়ে নিতে হবে। আরে পাকিস্তানের পাস করা ডিজাইন এতো পছন্দ হয়ে গেলো আপনার। সেই পাস করা ডিজাইন অুনযায়ী কাজ করার জন্য মহান মুক্তিযদ্ধের ঘোষক, প্রথম সেক্টার কমান্ডার, প্রথম ফোর্সেস কমান্ডার এবং পববর্তি পর্যায়ে সেনা প্রধান জিয়াউর রহমান বীরোত্তম তার কবর সরিয়ে নিতে হবে। পাকিস্তানকে এতো ভালোবাসার কথা নয় আপনাদের। জিয়াউর রহমানের কবর নিয়ে খেলবেন না। এদেশের সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করবে। খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনে শ্রমিক দলের নেতাকর্মীদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়ার আহবান জানান তিনি।
সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জুর পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার, নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ মো. আবু জাফর, শ্রম বিষয়ক সহ সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, শ্রমিক দলের আবুল কালাম আজাদ প্রমূখ। ##



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ