Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গাড়ি ছিনতাই করতেই উবার চালককে হত্যা

উত্তরায় ডিবির সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : আট লাখ টাকা চুক্তিতে জনৈক ব্যক্তিকে একটি এলিয়েন মডেলের গাড়ি সরবরাহের কথা ছিল ছিনতাইকারীদের। সে লক্ষ্যে অ্যাপভিত্তিক পরিবহন সেবা উবারে কল করতে থাকেন তারা। পাঁচবার কল করে টয়োটার এলিয়েন মডেলের গাড়ির খোঁজ মেলে। গাড়িটি ছিনতাইয়ে রামপুরার একটি বাসার ছাদে পরিকল্পনা করা হয়। পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী, উত্তরা ১৪ নং সেক্টরে গত ১৪ জুন রাতে গলা কেটে হত্যা করা হয় উবার চালক আরমান হোসেনকে। গতকাল রোববার দুপুরে রাজধানীর ডিএমপি মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন এসব কথা বলেন।

ডিবি সূত্রে জানা গেছে, হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সিজান (২৪)সহ ৩ জনকে গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলো- শরিফ (১৯) ও সজিব (২০)। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় শনিবার অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ সময় আসামিদের সঙ্গে নিয়ে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত দু’টি সুইচ গিয়ার চাকু ঘটনাস্থলের কাছাকাছি জায়গা থেকে উদ্ধার করা হয়।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) আব্দুল বাতেন সাংবাদিকদের বলেন, টার্গেট ছিল একটি টয়োটা এলিয়েন মডেলের গাড়ি ছিনতাই করা। টার্গেট হিসেবে বেছে নিয়েছিল রাইড শেয়ারিং কোম্পানি উবারের গাড়ি। পরিকল্পনা অনুযায়ী, এলিয়েন গাড়ি পেতে উবারের রাইড রিকোয়েস্টে এক-দুইবার নয়, পাঁচবার চেষ্টা করে পেয়ে যায় কাক্সিক্ষত এলিয়েন মডেলের গাড়ি। গত ১৩ জুন রাত ১২টা থেকে এক ঘণ্টার মধ্যে উত্তরা পশ্চিম থানাধীন ১৪ নম্বর সেক্টরস্থ ১৬ নং রোডের ৫২ নং বাড়ির সামনে গাড়িতে চালক আরমানকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। হত্যাকান্ডের পর গোয়েন্দা উত্তর বিভাগের উত্তরা জোনাল টিম ছায়াতদন্তে নামে। তদন্তের একপর্যায়ে জানা যায়, উবার চালক আরমান হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সিজান এবং তার সঙ্গে ছিল শরিফ ও সজিব। মামলাটি বর্তমানে গোয়েন্দা উত্তর বিভাগে তদন্তাধীন।

তিনি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, সিজান আগেও গাড়ি ছিনতাই করেছে। জনৈক ব্যক্তিকে আট লাখ টাকায় এলিয়েন মডেলের গাড়ি সরবরাহে চুক্তি হয়। এরপর এলিয়েন গাড়ি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে সিজান রামপুরায় তার বাসার ছাদে শরিফকে নিয়ে পরিকল্পনা করে। একপর্যায়ে তাদের পরিকল্পনায় সজিবকে যুক্ত করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১৩ জুন নিউমার্কেট থেকে দু’টি সুইচ গিয়ার চাকু কেনে তারা। রাত ১১টার দিকে সিজান উবারের মাধ্যমে গাড়ি কল করলে গাড়িটি এলিয়েন না হওয়ায় কল বাতিল করে দেয়। এভাবে পঞ্চমবারের চেষ্টায় পেয়ে যায় উবার চালক আরমানের এলিয়েন মডেলের গাড়িটি। গাড়িতে চড়ে তারা উত্তরার উদ্দেশে রওনা হয়। উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৬ নম্বর রোডে নিরিবিলি স্থানে গাড়িটি থামাতে বলে।গাড়ির ভাড়া পরিশোধ না করে ২০ মিনিট অপেক্ষা করে রাত ১২টা ৩৭ মিনিটের দিকে চার দিক নিরাপদ মনে করে সিজানের ইশারায় চালক আরমানের পেছন সিটে বসা শরিফ আরমানের মাথার চুল পেছনের দিকে টেনে ধরে চাকু দিয়ে গলা কেটে গাড়ি থেকে নেমে যায়। পরবর্তী সময়ে আশপাশের পরিবেশ অনুক‚ল না হওয়ায় আরমানের লাশসহ গাড়িটি রেখে তারা পালিয়ে যায়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ