পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থ বছরের বাজেট উপর আনীত ছাঁটাই প্রস্তাব নিয়ে জাতীয় সংসদে আলোচনা হয়েছে। আলোচনাকালে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্যদের অভিযোগের জবাব দিতে সরকারি দলের ভূমিকায় দেখা যায় বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যদের। এনিয়ে সংসদের অধিবেশন কক্ষে কিছুটা উত্তেজনাও ছড়িয়ে পড়ে। তবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কৃষিসহ কয়েকটি ইস্যুতে দুই দলের সদস্যরাই সরকারের সমালোচনা করেন। গতকাল সকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে বাজেট পাস হওয়ার আগে চারটি ছাঁটাই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। এই আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য মো. হারুনুর রশীদ বলেন, ডাক্তাররা এত বেশি রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে গেছে মানুষ এখন মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে না। তার বক্তব্যের জবাবে জাতীয় পার্টির মো. রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, সব দোষ খালি ডাক্তারদের দিলে চলবে না। একটা-দুইটা বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্র করে সমস্ত ডাক্তার, সমস্ত হাসপাতাল খারাপ বলবেন এটা তো ঠিক না। এরপর জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য বলেছেন চিকিৎসা হয় না, এটা ঠিক না। আসলে আপনাদের (বিএনপি) দেশের উপর আস্থা নেই। আপনারা সমস্ত ডাক্তারদের দলীয়করণ করেছেন। এরজন্য কে দায়ী? বি. চৌধুরী প্রথম ড্যাপ করেন জিয়ার আমলে। আপনারাই ডাক্তারদের দলীয়করণ করেছেন।
একের পর এক জাতীয় পার্টির এমপিদের এধরণের বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপির এমপিরা। একপর্যায়ে বিএনপির রুমিন ফারহানা বলেন, এমন সংসদে বসেছি, কোনটা সরকারি দল, কোনটা বিরোধী দল কিছুই বুঝি না। জবাবে জাতীয় পার্টির সদস্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, বিরোধী দল কি করবে? সরকার যদি ভালো কাজ করে সেটার প্রশংসা করে। কিন্তু সংসদে ৪০০ কার্যদিবসে মাত্র ১০ দিন উপস্থিত হওয়া বিরোধী দলের কাজ না। জাতীয় পার্টি সেই বিরোধী দল হতে চায় না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
কৃষিখাতে বরাদ্দের বিরুদ্ধে ছাঁটাই প্রস্তাব দিয়ে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা অভিযোগ করেন, দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ ও খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশ হলেও কৃষকরা উৎপাদিত ফসলের দাম পাচ্ছেন না। ধানের দাম না পেয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনাও কোথাও কোথাও ঘটেছে। হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ খেলাপীরা নিয়ে গেলেও সামান্য ঋণ নেয়ার কারণে ৪৫ হাজার কৃষকের বিরদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। কৃষকদের ঋণ কখনো মওকুফ করা হয় না। অথচ ঋণ খেলাপীদের বিরুদ্ধে মামলা হয় না। সরকারকে কৃষকবান্ধব হতে হবে, মিলারবান্ধব নয়। কৃষকদের ঋণের সুদ মওকুফ ও পর্যাপ্ত ভর্তুকি দিতে হবে।
জবাবে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব এবং নানা পদক্ষেপ নিয়েছে বলেই উৎপাদন কয়েকগুণ বেড়েছে। এখনও ৪০ ভাগ মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। তবে রফতানিকে বহুমুখী করতে না পারলে অর্থনীতি বিকশিত হবে না। আমরা রফতানিকে বহুমুখী করতে পারব। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের আমলে সারের দাবি করায় ১৮ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়। বিদ্যুৎ চাইলে ২০ জন কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়। বিশ্বের সকলদাতা সংস্থার বিরোধিতা সত্তে¡ও প্রধানমন্ত্রী কৃষিতে ভর্তুকি দিয়েছেন। দৃঢ়কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এটা ভর্তুকি নয়, কৃষিতে বিনিয়োগ করছি। যে কারণে দেশ খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়, উদ্বৃত্তের দেশ। সকল কৃষিপণ্য উৎপাদনে সারাবিশ্বে ঈর্ষণীয় স্থান অর্জন করে নিয়েছে বাংলাদেশ। কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণে প্রয়োজনে ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শিক্ষাখাতে বরাদ্দের বিরোধিতা করে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা বলেছেন, যখন একটি সরকার এক দশক ধরে ক্ষমতায় থাকার পরেও বিদেশ থেকে শিক্ষক আনতে চায়, সেই সরকরের ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার থাকে না। দেশে শিক্ষার মান ক্রমেই কমে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রাথমিক শিক্ষার মান বাড়াতে সরকারবিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের নিয়ে একটি শিক্ষা উন্নয়ন কমিটি গঠনের দাবি জানান তারা।
জবাবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, যারা (জিয়াউর রহমান) বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় রণক্ষেত্র করে, শিক্ষার্থীদের হাতে মাদক তুলে দেয়, হিজবুর বাহারে মেধাবী ছাত্রদের বিপদগামী করে। যারা এসব অনৈতিক কাজগুলো করে তাদের কাছে নৈতিকতার ছবক নেয়া একটু হাস্যকরই মনে হয়।
বিএনপি-জামায়াতের আমলে অনিয়মের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির অভিযোগ উত্থাপন করেন শিক্ষা মন্ত্রী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একমাত্র জাতীয়করণ বঙ্গবন্ধু সরকার ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার করেছেন। বিএনপি-জামায়াতের আমলে কোথায় কোথাও এমপিওভুক্ত করা হয়েছে? আমরা দেখেছি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত ব্যাপারে তারা বৈষম্য করেছে। কোন কোন প্রভাবশালী মন্ত্রী তাঁর নিজ এলাকায় একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করেছেন। যেগুলোর মান ঠিক নেই, শিক্ষক নেই। তারা নিয়ম বিরুদ্ধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করেছে। কাজেই অতীতের সকল এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের মান যাচাই করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। শিক্ষার মান বাড়াতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
স্বাস্থ্যখাতের নানা সমস্যার কথা তুলে ধরে ছাঁটাই প্রস্তাব দিয়ে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা বলেন, বিএনপি আমলে ডাক্তাদের দলীয়করণের কারণে দেশের স্বাস্থ্য খাতের এই অবস্থা। চিকিৎসা নিতে মানুষ বিদেশে যাচ্ছে। কিন্তু দেশেও ভাল চিকিৎসা হচ্ছে। তবে দেশের চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ার কারণে মানুষ দরিদ্র হচ্ছে। সবাই ঢাকায় কোন না, কোন হাসপাতালে অ্যাটাচমেন্ট থাকে। এই অ্যাটাচমেন্ট বন্ধ করুন। মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ বিক্রি বন্ধ করুন।
জবাবে স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়ন তুলে ধরে মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে গেছে। বিএনপি কম্যুনিটি ক্লিনিক বন্ধ করে দিয়েছিল। সেখানে গুরু পালিয়েছে। আমরা ফের সেটা চালু করেছি। বাংলাদেশে রাতকানা রোগ নেই। টিকাদান শতভাগ অর্জিত হয়েছে। আমেরিকায় বর্তমানে গড় আয়ু ৭৮ বছর। আমরা দ্রুতই সেই পর্যায়ে উন্নীত হব। সরকারিখাতে ৩৫টি মিলে প্রায় ১০০টি মেডিক্যাল কলেজ। বিএনপি-জামায়াত আমলে ১৫টিও ছিল না। বিএনপি-জামায়াত শত শত মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিট গঠন করে পোড়া মানুষকে চিকিৎসা দিয়ে বাঁচিয়েছেন। সকল রোগের চিকিৎসায় এখন বাংলাদেশে হচ্ছে। বেশিরভাগ মানুষই বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পাচ্ছেন। একমাত্র ধর্ণাঢ্য ব্যক্তি ছাড়া কেউ বিদেশে চিকিৎসা নিতে যায় না। ক্ষমতায় থাকতে খালেদা জিয়া-তারেক রহমানরা কখনও দেশে চিকিৎসা নেননি বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।