Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুইস ব্যাংকে অর্থ পাচার ঃ তদন্তে নামছে সরকার

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১ জুলাই, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

এক বছরে সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের আমানতের পরিমাণ ২৯ শতাংশ বেড়েছে। অর্থ বাড়ার এই ঊর্ধ্বগামীর কারণ অনুসন্ধান এবং প্রয়োজনীয় কর্মপন্থা নির্ধারণে তদন্তে নামছে সরকার। এক্ষেত্রে বাংলাদেশীদের অর্থ বৃদ্ধির বিষয়টি পুরোপুরি নেতিবাচকভাবে দেখছে না সরকার। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সুইস ব্যাংকে টাকা বাড়ার বিষয়টি শুধু অর্থ পাচার নয়। এর মধ্যে দেশটির সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং প্রবাসীদের ডিপোজিটের বিষয়টিও জড়িত।
অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুইস ন্যাশনাল ব্যাংকের (এসএনবি) প্রকাশিত ‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে সরকার। এরই মধ্যে মুদ্রা পাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন বন্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে গঠিত বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া শুরু করেছে। সংস্থাটি অজ রোববার থেকেই আনুষ্ঠানিক কাজ শুরু করতে যাচ্ছে। এমনকি এ বিষয়ে বৈঠকও করতে যাচ্ছে এই ইন্টেলিজেন্স ইউনিট।
এ বিষয়ে বিএফআইইউ’র প্রধান আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান বলেন, সুইস ব্যাংকে বিশেষ করে ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন কারণে অর্থ জমা রাখেন। তবে গত এক বছরে বাংলাদেশিদের আমানতের পরিমাণ ১ হাজার ২৭৪ কোটি বাড়ার বিষয়টি সরকারের দৃষ্টিতে এসেছে। তিনি বলেন, তবে ঢালাওভাবে পুরোপুরি বিষয়টিকে নেতিবাচক হিসেবে দেখা ঠিক হবে না। কারণ বাংলাদেশীদের টাকা বৃদ্ধির এই বিষয়টি শুধু অর্থ পাচার নয়। ইউরোপের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ও লেনদেন বেড়েছে। তিনি আরো বলেন, কেউ যদি টাকা সেখানে অবৈধভাবে নিয়ে থাকে, সেটা আমরা দেখবো। যেহেতু আমরা এগমন্ট গ্রুপের সদস্য সেহেতু আমরা প্রয়োজনে তাদের চিঠি লিখবো। এর আগেও তাদের কাছে বিভিন্ন ধরনের তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, এগমন্ট হলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (এফআইইউ) সমন্বয়ে গঠিত একটি আন্তর্জাতিক ফোরাম। যারা মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়নসংক্রান্ত তথ্য নিয়ে কাজ করে।
‘ব্যাংকস ইন সুইজারল্যান্ড' শীর্ষক প্রতিবেদন অনুসারে সুইজারল্যান্ডের ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের আমানতের পরিমাণ এখন ৫ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা বা ৬১৭ দশমিক ৭২ মিলিয়ন সুইস ফ্রাঁ। এক বছরে সুইস ব্যাংকগুলোতে বাংলাদেশিদের আমানতের পরিমাণ বেড়েছে ১ হাজার ২৭৪ কোটি টাকা বা ২৯ শতাংশ। আগের বছর আমানতের পরিমাণ ছিল ৪ হাজার ৬৯ কোটি টাকা।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী ২০১৮ সালে দেশটির বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা করা অর্থের পরিমাণ ছিল প্রায় ৬২ কোটি সুইস ফ্রাঁ। বাংলাদেশী মুদ্রায় যা ৫ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা। তবে ২০১৭ সালে ছিল ৪৮ কোটি ১৩ লাখ সুইস ফ্রাঁ বা ৪ হাজার ১৬০ কোটি টাকা। বাংলাদেশী মুদ্রায় এক সুইস ফ্রাঁর বিনিময়মূল্য এখন ৮৬ টাকা ৪৩ পয়সা। ২০১৬ সালের তুলনায় অবশ্য ২০১৭ সালে সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশীদের অর্থ জমার পরিমাণ কমে গিয়েছিল। সাধারণত সুইস ব্যাংক অর্থের উৎস গোপন রাখে। ##

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ