Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

হাজার কোটি টাকার প্রকল্প

চট্টগ্রাম ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ২৯ জুন, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

দেশের সর্ববৃহৎ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল মীরসরাই বঙ্গবন্ধু শিল্পাঞ্চলে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে কয়েক হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রাম চেম্বারে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানান স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, খুব শিগগির সেখানে শিল্প কারখানা চালু হচ্ছে। কয়েক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। সেখানে ওয়াসার পানি সরবরাহের বিকল্প নেই।

বঙ্গবন্ধু শিল্পাঞ্চলসহ চট্টগ্রাম অঞ্চলে অবকাঠামো উন্নয়নে কয়েক লাখ কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে পুরো চট্টগ্রাম বদলে যাবে। তিনি বলেন, দেশের ৯২ শতাংশ রফতানি চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে হয়। বে-টার্মিনালের কাজ সম্পন্ন হলে রফতানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। মাতারবাড়ী সমুদ্রবন্দর করাটা সময়োপযোগী। কর্ণফুলী নদীতে ক্যাপিট্যাল ড্রেজিং জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, কর্ণফুলী বাঁচলে বন্দর বাঁচবে, বন্দর বাঁচলে দেশ বাঁচবে।

কর্ণফুলী নদীর ড্রেজিংয়ে প্রধান বাধা পলিথিন। ড্রেজার পলি সাক করতে পারছে না পলিথিনের জন্য। এভাবে চলতে থাকলে চট্টগ্রাম বন্দর অকার্যকর হয়ে যাবে। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে হবে। বন্দরের সক্ষমতা বাড়লে দেশ এগিয়ে যাবে। চট্টগ্রামের সম্ভাবনা অনেক। এর পুরোটা কাজে লাগাতে হবে। জোয়ারের পানিতে চট্টগ্রামের নিচু এলাকা পানির নিচে চলে যায়। নেদারল্যান্ড প্রমাণ করেছে- পানি ব্যবস্থাপনা কীভাবে করতে হয়। আমাদের এখন টাকা আছে। আমরা মধ্য আয়ের দেশ। সঠিক প্রকল্প নিলে টাকার অভাব হবে না। ওয়াসা, পিডিবি, কর্ণফুলী গ্যাস কর্তৃপক্ষ রাস্তা নির্মাণের পর কাটবে এটা কেন হবে। এগুলো আগে কেন করা হয় না।

সিটি কর্পোরেশনসকে বলবো, আগে আগ্রাবাদে রিকশায় ঘুরতাম, ময়লা দেখিনি। তখন মানুষ কম ছিল। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে চিন্ত করতে হবে। এডহক ভিত্তিতে কিছু হবে না। টাউন প্ল্যান ৫০ বছরের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে করতে হবে। মাস্টার প্ল্যান কেন হবে না? আমরা অক্ষম হলে পৃথিবীতে অনেক সক্ষম লোক আছে। তাদের সহযোগিতা নিতে হবে। উন্নত শহরগুলো স্মার্ট হচ্ছে কীভাবে। ভিশন থাকতে হবে, লিডারশিপ থাকতে হবে। জাতীয় স্বার্থ ক্ষতি করে কোনো প্রকল্প নিলে বরদাশত করা হবে না। এটা নীতিগত সিদ্ধান্ত। টাকার জন্য দেশকে উচ্ছন্নে যেতে দিতে পারি না।

মন্ত্রী উন্নত দেশ হওয়ার জন্য মাথাপিছু আয় ১২,৫০০ ডলারে উন্নীত করা, ঢাকা-চট্টগ্রাম বুলেট ট্রেন ও এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের মাধ্যমে যাতায়াতের সময় এক থেকে দেড় ঘণ্টায় নামিয়ে আনা, ব্ল ইকনোমির সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং সর্বক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার প্রদানের আহবান জানান।

সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, চট্টগ্রাম মহানগরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ২৪টি সেবা সংস্থা রয়েছে। তবে যথাযথ ক্ষমতায়নের অভাবে এবং কেন্দ্রিকরণের কারণে এসব সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করা সম্ভব হচ্ছে না। তিনি পরিকল্পনা গ্রহণের পূর্বেই সমন্বয়করণ এবং আঞ্চলিক দপ্তরসমূহকে যথাযথভাবে ক্ষমতায়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন।

মন্ত্রণালয়ের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেন, মীরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ১৫ লাখ লোকের কর্মসংস্থান এবং ১৫ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করা সম্ভব হবে। তিনি সেখানে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে জানান।

সভাপতির বক্তব্যে চেম্বার সভাপতি কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল, এলএনজি টার্মিনাল, কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন স¤প্রসারণ, ঢাকা-চট্টগ্রামে দ্রুত গতির ট্রেন, চট্টগ্রাম-ঢাকা মহাসড়ককে ৮ লেনে উন্নীত করা, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ দ্রুত শেষ করা, তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু নির্মাণ, মেট্রোরেল, গণপরিবহন, পানিবদ্ধতা নিরসনের দাবি জানান। আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ ইকনোমিক জোন অথরিটি-বেজা’র সদস্য মো. হারুনুর রশিদ, ওয়াসার এমডি ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম ফজলুল্লাহ, চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মো. নুরুল আলম নিজামী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ