Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অপ্রয়োজনীয় সিজার বন্ধে রিট

শুনানি হতে পারে আজ

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ জুন, ২০১৯, ১২:০৩ এএম

প্রসূতির অপ্রয়োজনীয় সিজার বন্ধে রিট করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সুপ্রিমকোর্ট বারের আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বাদী হয়ে জনস্বার্থে রিট ফাইল করেন। আজ (বুধবার) বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান এবং বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের ডিভিশন বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানির কথা রয়েছে।
রিটে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড কাউন্সিলের সভাপতি এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে বিবাদী করা হয়েছে। প্রসূতির অপ্রয়োজনীয় সিজার এবং এর ফলে নবজাতকের স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়ে ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’র জার্নালে উল্লেখিত প্রতিবেদক যুক্ত করা হয়। আবেদনে অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না-এই মর্মে রুল নিশি চাওয়া হয়। এ ছাড়া রিট বিবেচনাধীন অবস্থায় যেসব বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে গর্ভবতী নারীদের অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান অপারেশন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সেসবও বন্ধের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
এর আগে গত ২১ জুন বিবিসিসহ জাতীয় দৈনিকে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। তাতে উল্লেখ ছিলো, বাংলাদেশে গত দুই বছরে শিশু জন্মের ক্ষেত্রে সিজারিয়ানের হার বেড়েছে ৫১ শতাংশ। বিষয়টিকে ‘অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে বিসিসি’র প্রতিবেদনে। এর ফলে বাবা মায়েদেরে সন্তান জন্মদানের অতিরিক্ত ব্যয় বহন করতে হচ্ছে। নবজাতকও ঝুঁকিতে পড়ছে।
আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’র তথ্য অনুসারে সিজারের মাধ্যমে সন্তান জন্মদানে বেশকিছু ঝুঁকি রয়েছে। এটি প্রসূতি ও নবজাতক উভয়কেই ঝুঁকিতে ফেলে। অস্ত্রোপচারের ফলে ইনফেকশন ও মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণ, অঙ্গহানি, জমাট রক্ত ইত্যাদির কারণে মায়েদের সুস্থতা ফিরে পেতে প্রাকৃতিক প্রসবের তুলনায় সময় বেশি লাগে। এছাড়া সিজারিয়ানের কারণে প্রাকৃতিক জন্মের লাভজনক দিকগুলোও বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে। নবজাতক স্বাভাবিক প্রসবে হলে তার শরীর কিছু প্রয়োজনীয় ব্যাকটেরিয়া গ্রহণ করতে পারে। এসব ব্যাকটেরিয়া শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে। অস্ত্রোপচারের ফলে এই ব্যাকটেরিয়া থেকে সে বঞ্চিত হয়। মায়ের বুকের দুধ পান করার জন্য মায়ের সঙ্গে নবজাতরে যে শারীরিক নৈকট্যে আসা দরকার সিজারিয়ান হলে সেটি বিলম্বে ঘটে। মায়ের সুস্থ স্বাভাবিক হয়ে ওঠার জন্য নবাজতককে তখন কিছু সময় দূরে রাখা হয়। এ সময় মায়ের বুকের দুধও শিশুর জন্য উপকারি।
সংস্থার প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে বাবা-মায়েরা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান জন্মদানে খরচ করেছেন ৪ কোটি টাকারও বেশি। সিজারিয়ানে সন্তান জন্মদানের হার বাংলাদেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে মারাত্মক হারে বেড়েছে। বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে যত শিশু জন্ম নেয় তার ৮০ শতাংশই হয় অপারেশনে। ২০১৮ সালে যত সিজার হয়েছে এর ৭৭ শতাংশই চিকিৎসাগতভাবে অপ্রয়োজনীয় ছিল। ২০০৪ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত বাংলাদেশে প্রসবকালীন অস্ত্রোপচার ৪ থেকে ৩১ শতাংশ বেড়েছে। অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার ঠেকাতে ডাক্তারদের ওপর নজরদারির পরামর্শ দিয়েছে ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’। এ প্রবণতার জন্য সংস্থাটি আংশিকভাবে বাংলাদেশের চিকিৎসাসেবা খাতের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করছে। সংস্থাটি বলছে, কিছু অসাধু চিকিৎসক এর জন্য দায়ী যাদের কাছে সিজারিয়ান একটি লাভজনক ব্যবসা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ