Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

কাউন্সিল ইস্যুতে নয়াপল্টনে উত্তেজনা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৬ জুন, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

ছাত্রদলের কাউন্সিল ইস্যুতে প্রতিদিনই উত্তেজনা ছড়াচ্ছে নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। সংগঠনটির কমিটি গঠনে বয়সসীমা বাতিল ও ১২ নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে বিলুপ্ত কমিটির বিক্ষুব্ধ নেতারা। অন্যদিকে কাউন্সিলকে স্বাগত জানিয়ে মিছিল করছেন পদপ্রত্যাশীরা। এ নিয়ে গতকাল (মঙ্গলবার) বহিষ্কৃত নেতারা ও পদপ্রত্যাশীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় কার্যালয়ের নিচ তলায় চেয়ার-টেবিল, সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন বিক্ষুব্ধরা।

কাউন্সিলে বয়সসীমা শিথিল ও ১২ নেতার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে বেলা ১২টায় কাকরাইলের স্কাউট ভবনের সামনে থেকে মিছিল নিয়ে বহিষ্কৃত ছাত্রনেতাদের নেতৃত্বে বিক্ষুব্ধরা বিএনপি কার্যালয়ের গেইটের সামনে অবস্থান নেয়। ওই সময়ে কার্যালয়ের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা ছাত্রদলের বেশ কিছু নেতাকর্মীকে ধাওয়া দেন তারা। কার্যালয়ের প্রবেশ পথে বিদ্যুতের মেইন সুইচ আবারও বন্ধ করে দেন বিক্ষুব্ধরা। কার্যালয়ে নিচের শাটার ও গেইটে লাথি মারেন তারা। ছাত্রদলের নতুন কমিটিতে পদপ্রত্যাশীরা একত্রিত হয়ে কার্যালয়ের গেইটে আসলে উভয় পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে মাহবুবুর রহমান ইমতিয়াজ নামে এক বিক্ষোভকারী আহত হয়। কার্যালয়ের নিচে গেইটের সামনে নিরাপত্তা কর্মীর টেবিল ভাঙা অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। বিক্ষুব্ধরা নিরাপত্তাকর্মীকে গেইটের বাইরে বের করে দেয়। পরে বহিষ্কৃতরা কার্যালয়ের গেইটের সামনে বসে পড়ে ‘সিন্ডিকেটের দালালদের আস্তানা ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন, অ্যাকশন’ ‘সিন্ডিকেটের দেয়া নির্বাচন মানি না, মানব না’ ইত্যাদি শ্লোগান দেন তারা।

এসময় কার্যালয়ের ভেতরে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবু, সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি রাজীব আহসান, সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানসহ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা এবং ৩০/৪০ জন কর্মী অবস্থান করছিলেন।

বেলা ১টায় দিনের কর্মসূচি শেষে বহিষ্কৃত ছাত্রদল নেতা ও বিলুপ্ত কমিটি সহ-সভাপতি ইকতিয়ার কবির বলেন, ভেতরে যারা আছেন তারাই চেয়ার, টেবিল ও সিসি টিভির ক্যামেরা ভাঙচুর করেছেন। আমরা যখন ভেতরে ঢুকতে যাই, তখন ভেতরে যারা ছিলেন, তারা কাপ-পিরিচ ছুড়ে মেরেছেন। এতে আমাদের একজন আহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, তাদের হামলায় আমারও হাত কেটে গেছে। তবে বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, মূলত ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির বহিষ্কৃতদের নেতৃত্বে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

বয়সসীমা তুলে দিয়ে পুনঃতফসিল না হলে কাউন্সিল হতে দেওয়া হবে না জানিয়ে কবির বলেন, আগামীকালের (আজ) মধ্যে দাবি আদায় না হলে অনাকাক্সিক্ষত যেকোনও ঘটনা ঘটলে, তার জন্য সিন্ডিকেট দায়ী থাকবে। আমরা ঘোষিত তফসিল বাতিল করে নতুন তফসিলের দাবি জানাচ্ছি। তাদের কর্মসূচি সমাপ্তির পরপরই দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হলেও কেউ হতাহত হয়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল বলেন, আন্দোলনকারীদের আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর প্ররোচনায় তৃতীয় পক্ষ বিএনপি কার্যালয়ে ভাঙচুর করেছে। আন্দোলনকারীরা ভাঙচুর করেছে এটা আমি বিশ্বাস করি না। কারণ, তারাও বিএনপির রাজনীতি করেন। তারা কেন ভাঙচুর করতে যাবেন?
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী সাংবাদিকদের বলেন, যারা আন্দোলন করছে তারা আমাদেরই ছোট ভাই। আমরা আশা করবো, সিনিয়র নেতারা যে তফসিল ঘোষণা করেছেন, তা মেনে নিয়ে তারা আমাদের সহযোগিতা করবেন।

গত ৩ জুন ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দিয়ে কাউন্সিলে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে ২০০০ সালের পরের এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার শর্ত আরোপ করা হয়। বয়সসীমা উঠিয়ে দেওয়ার দাবিতে ১১ জুন থেকে বিক্ষোভ করে আসছে ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের একাংশ। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করে তারা। গত শনিবার তাদের ১২ নেতাকে সংগঠনের শৃঙ্খলাবিরোধী কার্যক্রমের অভিযোগে বহিষ্কারের পরদিন নির্বাচন পরিচালনা কমিটি তফসিল ঘোষণা করে।###



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ