পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
এক দশক আগে ওয়ান ইলেভেনের কথা। ক্যামেরার সামনে মাইনাস টু ফর্মুলার স্বপক্ষে যুক্তি দাঁড় করাতে গিয়ে তিনি বললেন, মসজিদ ভাঙতে নয়, আমরা চাই ইমাম বদলাতে। ঘটনাক্রমে তিনিই আজ ওই মসজিদের রেজিস্ট্রার্ড ইমাম হলেন। রাজনীতি যেখানে শেষ বলে কিছু নেই। যাকে নিয়ে এ কথা তিনি সদ্য নির্বাচন হওয়া বগুড়া সদর আসনে নির্বাচিত জি এম সিরাজ।
২০০৮ সালে টেলিভিশনের ক্যামেরার সামনে যখন ইমাম বদলের কথা বলার পর তিনি বিএনপির রাজনীতিতে প্রায় গৌণ হয়ে পড়েছিলেন। তার পরের দশকের পুরোটা সময় ব্যস্ত ছিলেন ব্যবসা নিয়ে। তবে রাজনীতিতে নিজের হারানো অবস্থান ফিরে পেতে ছিলেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তার প্রতিফলন হিসেবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নাটকীয়ভাবে পেলেন দলের মনোনয়ন পাইয়েও দিলেন কয়েকজনকে। যদিও কোন কিছুই তার পক্ষে যায়নি।
ফলশ্রæতিতে নাটকীয় সব ঘটনার পরে বিএনপির নির্বাচিত সব সদস্যই সংসদে শপথ নিলেন। তবে নিলেন না বগুড়া সদরে নির্বাচিত সদস্য বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল। ফলে বগুড়া সদর আসনটি শূন্য ঘোষিত হয়। এরই মধ্যে ভেঙে গেল বগুড়া জেলা বিএনপির কমিটি। নতুন আহ্বায়ক হলেন জিএম সিরাজ। দলে তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হল। তবে নাটকীয় ভাবেই সে বিদ্রোহের অবসান হয়েছিল। সব কানাঘুঁষাকে সত্য প্রমাণ করে পেলেন ঐ আসনে নির্বাচনের মনোনয়ন। ২৪ জুনের নির্বাচনে প্রতিপক্ষকে তিনগুণ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে কার্যত তিনিই বগুড়া বিএনপির ইমাম হিসেবে নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করে দিলেন।
মার্কিন দূতের বগুড়া সফর!
নির্বাচনের একদিন আগে ঢাকা থেকে রংপুর যাবার প্রাক্কালে মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার বগুড়ায় যাত্রাবিরতি করেন। যাত্রা বিরতিকালে তিনি বগুড়া জেলা প্রশাসকের সাথে বৈঠক করেন। পরে মিডিয়া ব্রিফিং-এ রাষ্ট্রদূত আশা প্রকাশ বগুড়ার নির্বাচন তার ভাষায় (সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ) ভাল হবে। মার্কিন দূতের এই সফরের সাথে বগুড়ার নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক ছিল না বলে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের মিডিয়া উইং এবং বগুড়া জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ষ্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয়া হয়। তারপরও মার্কিন দূতের বগুড়া সফর সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে আলাদা গুরুত্ব নির্দেশ করে।
ভোটার উপস্থিতি হতাশাজনক
তবে সবকিছুর পরে ভোটার উপস্থিতি ছিল হতাশাজনক। যদিও বগুড়া নির্বাচন সম্পর্কে সিইসি কেএম নুরুল হুদা বলেন, বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নেয়ায় ভোটার উপস্থিতি বাড়বে। তবে বাস্তবে ভোটের আগের ‘মক ভোট’ (ইভিএমে ভোটের মহড়া ) এ উপস্থিতি মাত্র ৫ শতাংশ এবং ভোটের দিনে ভোট পড়ে ৩৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ।
কোথায় গেল জামায়াতের ভোট?
নির্বাচনের শুরু থেকেই বগুড়া জামায়াতের ভ‚মিকা ছিল রহস্যজনক। তবে তারা নিশ্চিতভাবেই নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীর বিপক্ষে ছিল। তবে আত্মবিশ্বাসী বিএনপি প্রার্থী জিএম সিরাজ জামায়াতকে ম্যানেজের পথে হাঁটেননি। বরং তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ২০ দলের অংশ হিসেবে জামায়াত আমার সাথেই আছে। তবে তারা না থাকলেও অসুবিধা নেই। যদিও জি এম সিরাজের এই কথায় জামায়াত ক্ষুব্ধ।
জামানত হারালেন যারা
নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নুরুল ইসলাম ওমর ৭২৭১ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনসুর রহমান ৪৫৬ ভোট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের রফিকুল ইসলাম ৫২৪ ভোট, স্বতন্ত্র মিনহাজ¦ মন্ডল ২৯২০ ভোট এবং সৈয়দ কবির আহম্মেদ মিঠু ৬৩০ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। তবে স্বতন্ত্র সৈয়দ কবির আহম্মেদ মিঠু নির্বাচনের আগেই প্রেস কনফারেন্স করে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।