Inqilab Logo

শুক্রবার ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ কার্তিক ১৪৩১, ২৮ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

চাকরিতে বাধ্যতামূলক হচ্ছে ডোপটেস্ট

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৬ জুন, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

সরকারি চাকরিতে ডোপটেস্ট বাধ্যতামূলক হচ্ছে। সরকারি কর্মকর্তারা যদি মাদকাসক্ত হন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার ও অবৈধ পাচারবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ সব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

তিনি আরো বলেন, সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ডোপটেস্টের জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেছি। প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে অনুশাসন দিয়েছেন। এটা পর্যায় ক্রমে বাস্তবায়ন হবে। সরকারি কর্মকর্তারাও যদি মাদকাসক্ত হন তাহলে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময় ডোপটেস্ট করা হবে। রক্তে যদি মাদক পাওয়া যায় তাহলে তার আবেদন বাতিল বা গ্রহণ করা হবে না।

ভারত ও মিয়ানমার সীমান্ত মাদক নিয়ন্ত্রণে সুরক্ষিত কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে বারবার বৈঠক হয়েছে। কিন্তু কোনো কথাই কার্যকর হয়নি। আমরা তাদের বারবার অনুরোধ করেছি। তারা পাল্টা বলে আসছে এগুলো অবৈধ। আমরা চাই এ কথার বাস্তবায়ন হোক। কারণ তারা এগুলোর বিরুদ্ধে সবসময় বলে আসলেও কাজ হচ্ছে না।

তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। এখন ভারত থেকে ফেনসিডিল আনার সংখ্যা অনেক কমে গেছে। আগে ভারত থেকে যে পরিমাণ ফেনসিডিল আসতো এখন তার ৫৯ ভাগও আসে না। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে যারা ফেনসিডিল তৈরি করে তারা যাতে সেখানে সে কাজটি না করে সে বিষয়ে ভারতকে বলা হয়েছে। ভারতও সে বিষয়ে কাজ করছে। এরপরেও কিছু যে আসছে না আমি সেটা বলবো না। আমরা সেই জায়গাটিতে কাজ করছি। ভারত ও মিয়ানমার সীমান্ত শক্তিশালী করা হয়েছে। সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া সীমান্তের কিছু জায়গা রয়েছে যেখানে হেলিকপ্টার ছাড়া যাওয়া যায় না। প্রধানমন্ত্রী দুটি হেলিকপ্টার কেনার অনুমতি দিয়েছেন। এই দুটি হেলিকপ্টার আসছে। যাতে সীমান্ত দিয়ে অবাধে মাদক না আসে সে জন্য কাজ চলছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের জীবন রক্ষার জন্য আশ্রয় দিয়েছি। এতে আমাদের দুর্ভোগ বাড়ছে। কিন্তু ইয়াবা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে আসছে। তারা জীবনের ঝুঁঁকি নিয়ে এ ব্যবসা করে থাকে। এই অবৈধ ব্যবসা পরিচালনার সময় বিজিবির সঙ্গে গুলির ঘটনা হলে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে। কারণ সেলফডিফেন্স আইনের আওতায় নিরাপত্তা বাহিনী অস্ত্র চালায়।

আইন-শৃংখলা বাহিনীর সঙ্গে বন্ধুকযুদ্ধে এ পর্যন্ত কতোজন মারা গেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইন-শৃংখলা বাহিনী কাউকে হত্যা করেন না। বিভিন্ন উৎস থেকে আমরা যে তালিকা পাই, তা একত্রে করে আইন-শৃংখলা বাহিনীর কাছে দেওয়া হয়। তখন তারা বিভিন্ন অভিযানে যান, অপরাধী চ্যালেঞ্জ করলে এই ধরনের দুঃখজনক ঘটনা ঘটে। এছাড়া যারা অবৈধ ব্যবসা করে তাদের পেশীশক্তির প্রয়োজন হয়। কিংবা তাদের অবৈধ অস্ত্রের প্রয়োজন হয়। যেখানে অবৈধ ব্যবসা আছে সেখানেই অবৈধ অস্ত্র থাকে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের গতিশীলতা ও জনবল বেড়েছে। মাদকবিরোধী আইন-২০১৮কে যুগোপযোগী করা হয়েছে। মাদকবিরোধী জনমত তৈরি করা হচ্ছে। মসজিদে জুমার নামাজের বয়ানে মাদকের বিরুদ্ধে সচেতন হওয়ার জন্য বলা হচ্ছে। এছাড়া, মাদকবিরোধী পোস্টার, লিফলেট টানানো হচ্ছে, টকশো করা হচ্ছে। মাদক ব্যবহার বন্ধে আমরা তিনটি কর্মকৌশল নিয়েছি। এগুলো হচ্ছে- চাহিদা, সরবরাহ ও ক্ষতি হ্রাস। আমরা বিশ্বাস করি, অবশ্যই মাদক নির্মূল করতে পারবো। আগে দেশে তামাক ব্যবহার করতো ৪৩ দশমিক তিন শতাংশ মানুষ। ২০১৭ সালের জরিপে দেখা গেছে তা ৩৫ দশমিক তিন শতাংশে নেমেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ