Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

লাইসেন্স ছাড়া দুধ-দই

বিক্রিকারী প্রতিষ্ঠানের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ জুন, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

রাজধানীতে কোন্ কোন্ প্রতিষ্ঠান অননুমোদিতভাবে দুধ-দুই বাজারজাত করছে-দুই সপ্তাহের মধ্যে সেই তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট। গতকাল রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের ডিভিশন বেঞ্চ এ তালিকা চান। মান নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউটশন (বিএসটিআই) এ তালিকা দাখিল করবে।

গত ২১ মে ধার্যকৃত তারিখ অনুযায়ী গতকাল এ তালিকা দাখিলের কথা ছিলো। সেটি প্রদানে ব্যর্থ হওয়া আদালত বিএসআইটিআই’র প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেন। পরে দুই সপ্তাহের সময়সীমা বেধে দেন। এর আগে বিএসটিআই আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে বলেছিল, রাজধানীতে ৩০৫টি দুধ ও দইয়ের মধ্যে ঢাকা ও সিলেটের মাত্র দুটি দোকানে নিম্নমানের দুধ ও দই মিলেছে।

উল্লেখ্য, গত ফেব্রুয়ারিতে কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত ‘দুধ-দইয়ে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া অণুজীব, কীটনাশক, সীসা, গরুর দুধেও বিষের ভয়’ শীর্ষক সংবাদ দৃষ্টিতে নিয়ে স্ব-প্রণোদিত রুলনিশি জারি করেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে তিন মাসের মধ্যে কমিটি গঠন করে জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেও বলা হয়।

একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত তথ্যে ‘জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ’র একটি গবেষণাপতকে উদ্ধৃত করা হয়। আদালত তখন ওই গবেষণাপত্রটিও আদালতে দাখিল করতে বলেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ’র ল্যাবরেটরির প্রধান প্রফেসর ডা. শাহনীলা ফেরদৌসী ১৫ দিনের মধ্যে গবেষণাপত্র দাখিল করেন। এটি দাখিলের সময় প্রফেসর শাহনীলা ফেরদৌসী জানান, জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষর ল্যাবরেটরি ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ও নেদারল্যান্ডের অর্থায়নে এই গবেষণা কাজ করে।

২০১৫ সাল থেকে তারা এ গবেষণা চালাচ্ছেন। গবেষণা কর্মটি ফাও (আন্তর্জাতিক ফুড ও এগ্রিকালচার অর্গানাইজেশন) আন্তর্জাতিকভাবে প্রকাশ করে। গবেষণায় দইয়ের ৩০টি, পশুখাদ্যের ৩০টি, প্যাকেটজাত দুধ ৩১টি, (কাঁচা পণ্য) নমুনা গরুর দুধের ৯৬টি কোম্পানি ও ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়। এতে উল্লেখিত প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের নামের তালিকা দাখিলের তারিখ ধার্য ছিলো গতকাল। বিএসটিআই পূর্ণাঙ্গ তালিকা দাখিল করতে ব্যর্থ হয়। এ সময় বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ’র কৌঁসুলি মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম ও সংস্থাটির দায়িত্বে থাকা খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব এ এস এস এম জুবেরি রিপোর্ট জমা দেয়ার জন্য সময় প্রার্থনা করেন।

বিএসটিআই’র উপ-পরিচালক প্রকৌশলী মো. নূরুল ইসলাম আদালতে বলেন, আমরা আংশিক রিপোর্ট প্রস্তুত করেছি। বিএসটিআই মোট ১৮টি পাস্তুরিত দুধের জন্য লাইসেন্স দিয়েছে। অন্যগুলোর দায়িত্ব বিএসটিআই’র নয়। এর দায়িত্ব কৃষি ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের। তার এ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বিএসটিআই’র উপ-পরিচালকের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রফেসর শাহনীলা ফেরদৌসী ৩১টি পাস্তুরিত দুধ বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানের নাম পেয়েছেন। আপনারা পাচ্ছেন না কেন? যাদের লাইসেন্স নেই, তাদের বিরুদ্ধে আপনারা কি ব্যবস্থা নিচ্ছেন? আগামী ১৫ জুলাই লাইসেন্স বিহীন কোম্পানির নামসহ আপনাদের পরীক্ষার রিপোর্ট, আর আপনারা যে বলছেন লাইসেন্স বিহীনগুলোর দায়িত্ব আপনাদের না, সেই বিষয়ে হলফ করে জানান।
এছাড়া পৃথক আদেশে আদালত অন্য কোন সংস্থা থেকে প্রফেসর শাহনীলা ফেরদৌসীকে তার গবেষণাকৃত রিপোর্ট তাদের নিকট জমা দেয়ার বিষয়ে চাপাচাপি না করতে নির্দেশ দেন। কেননা তার গবেষণার নিয়মের মধ্যে ছিল, কোম্পানির নাম প্রকাশ করা যাবে না। তিনি শুধু মাত্র নামগুলো আদালতের চাহিদামত দাখিল করেছেন।
গতকাল শুনানিতে বিএসটিআই’র পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার সরকার এম. আর. হাসান (মামুন)। অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ