পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রামে পূর্বাঞ্চলীয় রেলের সদর দপ্তর (সিআরবি) চত্বরে বহুল আলোচিত জোড়া খুনের ছয় বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ রোববার। এখনও চাঞ্চল্যকর এই মামলার বিচার শুরু করা যায়নি। চার্জশিটভুক্ত ৬৪ আসামির প্রায় সবাই জামিনে। তবে প্রধান আসামি অজিত বিশ্বাস জামিনে গিয়ে পালিয়ে গেছেন। পুলিশ বলছে তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তবে বিচারপ্রার্থী পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ তিনি প্রকাশ্যে ঘুরছেন, পুলিশ তাকে ধরছে না। প্রধান আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা তামিল না হওয়ায় বিচার শুরু হচ্ছে না বলে জানান আদালতের পিপি।
বিগত ২০১৩ সালের ২৪ জুন সিআরবি চত্বরে ৪৮ লাখ টাকা মূল্যের রেলের দরপত্র নিয়ে যুবলীগের বাবর ও ছাত্রলীগের লিমন পক্ষের বিরোধের জেরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান যুবলীগ কর্মী সাজু পালিত (২৪) ও স্থানীয় সিআরবি বস্তির বাসিন্দা হাফেজিয়া মাদরাসার ছাত্র শিশু আরমান হোসেন টুটুল (৮)। সাজু পালিত ছিলেন বাবরের অনুসারী। প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণে জানা যায়, সাজু পালিতকে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি করা হয়। আর প্রতিপক্ষের গুলি ঠেকাতে সেখানে খেলারত শিশু আরমানকে ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে এক ক্যাডার। গুলি আসতেই ওই শিশুকে মাথার উপর তুলে ধরে ওই ক্যাডার। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারায় ওই শিশু।
টেন্ডারবাজি নিয়ে যুবলীগ-ছাত্রলীগের দুই পক্ষের এই বন্দুকযুদ্ধে দুইজন নিহতের ঘটনায় কোতোয়ালি থানার এসআই মহিবুর রহমান বাদী হয়ে বাবর ও লিমনসহ ছাত্রলীগ-যুবলীগের ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরও ৩০ থেকে ৪০ জনকে আসামি করা হয়। ২০১৫ সালের ২৩ নভেম্বর পুলিশ ৬২ জনকে আসামি এবং ৩৭ জনকে সাক্ষী করে আদালতে চার্জশিট দেয়। এর দুই দিন পরই পুলিশের দেয়া অভিযোগপত্র গ্রহণের শুনানি শেষে তৎকালীন মহানগর হাকিম নওরিন আক্তার কাঁকন তা গ্রহণ না করে ‘অধিক গুরুত্বের সঙ্গে’ তদন্ত করতে পিবিআইকে নির্দেশ দেন।
আদালতের নির্দেশে ১৫ মাস তদন্ত শেষে গত বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি জোড়া খুনের মামলায় সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আলম। সম্পূরক অভিযোগপত্রেও আসামি করা হয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের ৬৪ নেতাকর্মীকে। তবে আসামিদের ক্রম পরিবর্তন হয়েছে আর কমেছে সাক্ষীর সংখ্যাও। দুই দফা তদন্ত হলেও ওই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। অভিযুক্ত ৬৪ আসামি হলেন, যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী ওরফে বাবর ও তার গ্রুপের যুবলীগ নেতা রিটু দাশ, প্রোশীষ মুৎসুদ্দী, অজিত বোস, মোহন তাঁতী, খোকন চন্দ্র তাঁতী, অজিত দাশ, চান মিয়া, রাজু, রাকেশ, সুমন, টিটু দাশ, লাবলু ঘোষ, টিপু, আসলাম, ছোটন বড়ূয়া, সুমন চৌধুরী, শিবু প্রসাদ চৌধুরী, শিমুল প্রসাদ পিন্টু, ফারুক, জসিম, মনির মিয়া, আনু মিয়া, ইউসুফ, জাহিদ, জহির, ফরিদ ও মনির।
আরও আসামি করা হয় সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাইফুল আলম লিমন ও তার গ্রুপের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাবেক সভাপতি আলমগীর টিপু, ছাত্রলীগ নেতা ওসমান গণি দুলু, মনোয়ারুল আলম চৌধুরী, জাহেদ, আমিন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, শরীফ আহমেদ, আমির হোসেন আমু, রায়হান আহমদ, কামরুল হাসান, নজরুল ইসলাম, রানা আহমেদ, মনিরুজ্জামান দিনার, হাসমত আলী রাসেল, সুজয়মান বড়ূয়া, জমির উদ্দিন, আবু জাফর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, রাজু মুন্সী, ফয়সাল আহমেদ, মিজানুর রহমান, জাফর, পিয়াল আইচ, তারেকুর রহমান, ইলিয়াছ, জাবেদ হোসেন, রুবেল চন্দ্র দাশ, নাজমুল হাসান, আশরাফুল হোসেন, মিলন, আশরাফুল আলম, রবিউল ইসলাম জিলানী, কিয়াস কুমার দাশ ও বিশ্বজিত দাশ। আসামিদের মধ্যে ভয়ঙ্কর খুনি অমিত মুহুরী চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে সম্প্রতি খুন হয়েছেন। অজিত ছাড়া বাকি সব আসামি জামিনে রয়েছেন বলে আদালত সূত্রে জানা গেছে।
ছয় বছরেও মামলার বিচার শুরু না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন নিহত সাজু পালিতের মা মিনতী পালিত। তিনি বলেন, বৃদ্ধ বয়সে ছেলেকে হারিয়েছি। যে সন্ত্রাসী আমার ছেলের মাথায় গুলি করে হত্যা করেছে সে এখনও প্রকাশ্যে ঘুরছে। মা হিসেবে এটি যে কত বেদনার তা বোঝাতে পারব না। নগরীর কোতোয়ালী থানা এবং জেলার বোয়ালখালী থানায় মূল খুনি অজিত বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট গেছে জানিয়ে তিনি বলেন, পুলিশ তাকে গ্রেফতার করছে না। অথচ তাকে প্রকাশ্যে দেখা যায়। তিনি অবিলম্বে অজিতকে গ্রেফতার করে মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু করার দাবি জানান। ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে এখনও অপেক্ষায় আছেন আরমান হোসেন টুটুলের বাবা-মা। সন্তানকে হাফেজ বানানোর স্বপ্ন ছিল তাদের। গুলিতে সে স্বপ্ন ধুলিস্যাৎ হয়ে গেছে। তারাও ছেলে হত্যার বিচার চান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।