পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সঞ্চয়পত্রে দ্বিগুন উৎস কর আরোপসহ নিরুৎসাহিত করার নানামুখি পদক্ষেপে ক্ষুদ্ধ দক্ষিণাঞ্চলের নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সাধারন মানুষসহ অবসরপ্রাপ্ত সরকারি-আধা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিরা। আগামি অর্থবছরের বজেটে সব ধরনের সঞ্চয়পত্রের মুনফার ওপর উৎস কর দ্বিগুন করে ১০%-এ উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি গত ১এপ্রিল থেকে সব বিভাগীয় সদর সহ মহানগরীতে এবং ১জুন থেকে সব জেলা-উপজেলা সদরে সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে নতুন নীতিমালা কার্যকর করায় ক্ষুদ্র সাধারণ বিনিয়োগকারিদের মধ্যে চরম হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে কতিপয় ব্যাংক মালিককে সুবিধা দেয়ার জন্যই সরকারি নিরাপদ বিনিয়োগ মাধ্যম সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগে জনগনকে নিরুৎসাহিত করার লক্ষেই এমন পদক্ষেপ। বিষয়টি নিয়ে বিব্রত দক্ষিণাঞ্চলের জনপ্রতিনিধিগনও। অনেক এমপি এ পদক্ষেপকে ‘জনবান্ধব নয়’ বলেও মন্তব্য করেছেন।
আর সঞ্চয়পত্রে করহার বৃদ্ধির এ খবরে খুশি দক্ষিণাঞ্চলের বানিজ্যিক ব্যাংক-এর দায়িত্বশীল কর্মকর্তাগন। এতদিন যে ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে ভুগছিল, তাদের মুখে হাসি ফুটতে শুরু করেছে। বরিশালে কোন কোন বানিজ্যিক ব্যাংক ইতোমধ্যে গ্রাহকদের সাথে বোঝাপাড়ার ভিত্তিতে ১১-১২% মুনাফায় ৩ বছর মেয়াদ স্থায়ী বিনিয়াগে আমানত সংগ্রহ শুরু করেছে। কোন কোন ব্যাংক আরো কিছুটা বেশি মুনফার কথা বলেও গ্রাহকদের স্থায়ী আমানত গ্রহন করছে। পাশাপাশি বাজেট ঘোষনার পর থেকেই সঞ্চয়পত্র বিক্রীর ক্ষেত্রে কিছুটা ভাটির টান লেগেছে।
দক্ষিনাঞ্চলের প্রায় সব সরকারি-বেসরকারি বানিজ্যিক ব্যাংকগুলো আরো তিন বছর আগে থেকে সঞ্চয়পত্র বিক্রীর ক্ষেত্রে অনিহা প্রকাশ করে আসছে। এক্ষেত্রে সঞ্চয় ব্যুরো ও বাংলাদেশ ব্যাংক কাউন্টারে দীর্ঘ অপেক্ষার পরে সঞ্চয়পত্র কেনার সুযোগ ছিল। গত ১ এপ্রিল থেকে বিভাগীয় সদরসহ সিটি করপোরশন এলাকায় এক লাখ টাকার উর্দ্ধে যেকোন ধরনের সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে ভোটার আইডি কার্ড ছাড়াও ছবি এবং এমআইসিআর চেক যূক্ত ব্যাংক হিসেব বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যা গত ১জুন থেকে জেলা ও উপজেলা সদর, পল্লী এলাকার বিনিয়োগকারিদের জন্যও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। মুনাফার অর্থ অনলাইনে সরাসরি গ্রাহকের ব্যাংক হিসেবে স্থানান্তরের জন্য এ ব্যবস্থার কথা বলা হলেও গ্রামেগঞ্জে বসবাসকারি মানুষের জন্য সরকারি এ নিরাপদ বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে।
কারন এখনো গ্রামেগঞ্জে কৃষি ব্যাংকসহ যেসব বানিজ্যিক ব্যাংক রয়েছে, তার বেশিরভাগই অনলাইন সুবিধার আওতায় আসেনি। ঐসব এলাকার ব্যাংকগুলো এমআইসিআর চেক ইস্যু করতে পারছে না। এতে করে গ্রাহক সঞ্চচয়পত্র কিনতে গিয়ে নন এমআইসিআর চেকযূক্ত ব্যাংক হিসেব নম্বর দিলেও তা সঞ্চয় ব্যুরো গ্রহন করছে না।
এদিকে সঞ্চপত্রের ওপর উৎস কর ৫% থেকে ১০%-এ উন্নীত করার সিদ্ধান্তের ফলে সাধারন মানুষ আরো ক্ষুদ্ধ ও হতাশ। বর্তমানে পরিবার সঞ্চয়পত্রে একলাখ টাকা বিনিয়োগ করে প্রতি মাসে একজন নারী যেখানে ৫% উৎস কর বাদে ৯১২ টাকা পাচ্ছেন, সেখানে নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে পাবেন ৮৬৪ টাকা। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মহিলা ও প্রতিবন্ধিদের জন্য পরিবার সঞ্চয়পত্র চালু করা হয়েছিল। তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্রে বর্তমানে মুনাফার হার ১১.০৪%। ফলে একলাখ টাকা বিনিয়োগ করে তিনমাস অন্তর একজন গ্রাহক ৫% উৎসেকর বাদে ২,৬২২ টাকা মুনাফা তুলতে পারতেন, এখন সেখানে পাবেন ২,৪৮৪ টাকা।
সরকারি ও আধা সরকারি অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্য চালু করা ‘পেনশনার সঞ্চয়পত্রে বছরে ১১.৭৬% মুনাফা প্রদান করা হলেও এখন সেখানেও আয় করের খরগ নেমে এসেছে। এ স্কিমে বিনিয়োগ করে একজন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি প্রতি এক লাখ টাকায় তিন মাস অন্তর ২,৭৯৩ টাকা মুনাফা তুলতে পারতেন। এখন সেখানে পাবেন ২,৬৪৬ টাকা। অনুরূপভাবে ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকের সাধারন হিসেব ও মেয়াদি হিসেবের ওপরও ১০% উৎসে কর আরোপ করা হচ্ছে।
ফলে সাধারন মানুষের ওপর করের নতুন এ খরগ নেমে আসায় ক্ষুদ্ধ ও হতাশ সকলেই।
গত কয়েকদিনে বাংলাদেশ ব্যাংকের বরিশাল অফিসের কাউন্টারে ও সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তরের বরিশাল অফিসে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সাথে আলাপ করে উৎসে কর আরোপের নতুন সিদ্ধান্তে ক্ষোভের কথাই শোনা গেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।