পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ক্ষমতা বেড়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। দুদক বিধি-২০০৭ এর ‘অধিকতর সংশোধনী’র মাধ্যমে এ ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। গতকাল রোববার সংশোধনী সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। এটি দুদক বিধির দ্বিতীয় সংশোধনী। এ বিষয়ে দুদক সচিব দিলোয়ার বখত গতকাল রোববার সাংবাদিকদের বলেন, এই সংশোধনীর ফলে দুদকের কার্যক্ষমতা আরো বাড়বে। জনবল, সময় এবং অর্থ ব্যয়ও কমবে। আইন ও বিধির যে অসম্পূর্ণতা ছিলো সেটিও দূর হলো। গেজেট প্রকাশের দিন থেকেই এই সংশোধনী ‘কার্যকর’ হলো বলেও জানান দুদক সচিব।
প্রজ্ঞাপন বিশ্লেষণে দেখা যায়, সংশোধিত ‘দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা’র ফলে স্ব-শাসিত স্বাধীন এ সংস্থার কার্যক্রমে বড়ধরণের পরিবর্তন আসবে। বিশেষত: ‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪’ এবং দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা-২০০৭’ অনুসারে দুদক কর্মকর্তাদের বাদী হয়ে থানায় গিয়ে মামলা করতে হতো। ওই আইন ও বিধির আওতায় যেকোনো ব্যক্তি কিংবা প্রতিষ্ঠানও থানায় গিয়ে মামলা করতে পারতেন। বিধির এই সংশোধনীর ফলে দুর্নীতি মামলায় পুলিশ নির্ভরতা কমলো। তবে দুদকের বাইরে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলে পুলিশ সেটিকে ‘সাধারণ ঘোষণা’ ( জেনারেল ডিক্লারেশন) বা ‘জিডি’ হিসেবে গ্রহণ করে দুদকে পাঠিয়ে দেবে। এছাড়া কোনো দুর্নীতির অভিযোগে অকাট্য প্রমাণ থাকলে দুদক সেটি প্রাথমিক কোনো অনুসন্ধান ছাড়াই সরাসরি মামলা হিসেবে গ্রহণ করে তদন্ত করতে পারবে। ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে না দিয়ে সরাসরি বিশেষ জজ আদালতে দুর্নীতি মামলার চার্জশিট দাখিল করা যাবে। এতে সৃষ্ট আইনগত জটিলতা কমবে। চার্জশিট দাখিলের পর কখনও তা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পড়ে থাকতো মাসের পর মাস। শুনানির নামে সময়ক্ষেপণ হতো। সেখান থেকে বিচারিক আদালতে যেতেও অনেক সময় লেগে যেতো। সংশোধনী অনুসরণ করা হলে সময়ক্ষেপণের সুযোগ থাকবে না। সংশোধিত বিধির আলোকে চার্জশিট ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দাখিল না করে সরাসরি সিনিয়র বিশেষ জজ আদালতে দাখিলের সুযোগ পাচ্ছে দুদক। সংশোধনীতে বলা হয়, ‘চার্জশিট সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে দাখিলের জন্য বিধান সুস্পষ্ট না থাকলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে।’
সংশোধিত বিধি অনুযায়ী করদাতার আয়কর রিটার্ন ফাইল ও ব্যাংক হিসাব দুদক সরাসরি তলব করতে পারবে । মামলা বা রায় হওয়ার আগে এমনকি মামলার আগেও ‘সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজ’র সম্পদ ক্রোক বা ফ্রিজ (জব্দ) করা যাবে। অনুসন্ধান পর্যায়ে করদাতার আয়কর রিটার্ন ফাইল ও ব্যাংক হিসাব সরাসরি তলব করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে সংশোধনীতে।
‘জ্ঞাত আয়’ বহির্ভুত সম্পদের কোনো সংজ্ঞা ছিলো না ২০০৭-এর দুদক বিধিতে। সংশোধিত বিধিতে এটির সংজ্ঞা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। সংশোধিত বিধি অনুযায়ী অনুসন্ধান বা তদন্তে নিযুক্ত অনুসন্ধানকারী বা তদন্তকারি কর্মকর্তা প্রয়োজনে ‘ব্যাংকার্স বুক এভিডেন্স অ্যাক্ট-১৮৯১’ (গ্রাহক স্বার্থ রক্ষায় ব্যবহৃত ব্যাংক আইন) বিদ্যমান সত্তে¡ও অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আয়কর রিটার্ন, বিবরণীর হিসাব, সাক্ষ্যপ্রমাণ, অ্যাসেসমেন্ট নথি উদ্ঘাটন বা পরীক্ষা বা জব্দ বা তলব করতে পারবে। এক্ষেত্রে অন্য কোনো আইনের বিধান বাধা হয়ে দাঁড়াবে না। যদিও এনবিআর থেকে লিখিতভাবে আইন মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছিল- আয়কর অধ্যাদেশের ১৬৩ ধারায় করদাতার বিবৃতি, রিটার্ন গোপনীয় থাকবে।
সংশোধিত বিধিতে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘সাক্ষ্য আইন বা বর্তমানে কার্যকর অন্য আইনে যা-ই থাকুক না কেন কোনো আদালত বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ আয়কর অধ্যাদেশের অধীনে পরিচালিত কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট রেকর্ড বা কোনো রিটার্ন, হিসাব-বহি বা দলিলপত্রের অংশবিশেষ সাক্ষ্য প্রদানার্থে তলব করার ক্ষমতা প্রদান করবে না।’ অর্থাৎ করদাতার রিটার্নের তথ্য অতি গোপনীয় বিষয়, বিশেষ ক্ষেত্র ব্যতীত এটি কোনো দফতর চাইতে পারবে না।
দুদক বিধি সংশোধন সম্পর্কে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, বিদ্যমান আইন এবং বিধির আলোকে কার্যক্রম চালাতে গিয়ে কখনো কখনো আমাদের কিছু বাধার মুখে পড়তে হতো। এখন সেটি দূর হলো। বিধির সংশোধনী খসড়া প্রণয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত দুদকের সদ্যবিদায়ী মহাপরিচালক (আইন) মো. মঈদুল ইসলাম ‘ইনকিলাব’কে বলেন, সংশোধনীর ফলে প্রতিষ্ঠানটির পুলিশ নির্ভরতা হ্রাস পাবে। মামলা দায়ের, তদন্ত এবং অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় থানা-পুলিশের কাছে দুদকের যে অসহায়ত্ব ছিলো সেটি অনেকাংশে কমবে। এমনকি পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে দুদক ব্যবস্থা নিতে গেলে যে অসুবিধার সম্মুখিন হতে হতো সেটি থাকবে না। এক কথায় এ সংশোধনীর ফলে দুদক শক্তিশালী হলো। সুযোগ কমলো দুর্নীতিবাজদের।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।