Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রোজ গার্ডেনে দর্শনার্থীদের ভিড়

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

আওয়ামী লীগের ৭০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দর্শনার্থী ও দলীয় নেতাকর্মীদের পদচারণায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেনে। ১৯৪৯ সালে পুরান ঢাকার রোজ গার্ডেনে (হুমায়ুন সাহেবের বাড়ি) এক ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে জন্ম নেয় আওয়ামী লীগ। গত কয়েকদিন ধরে এই রোজ গার্ডেনে রাজধানী ও আশপাশের জেলার আওয়ামী লীগের জেলা-থানা ও ওয়ার্ড নেতারা ঘুরতে আসছেন। এখানে ছবি তুলে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করছেন।

গতকাল রোজ গার্ডেনে গিয়ে দেখা গেছে, দলে দলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাড়িটি দেখতে এসেছেন। পাশাপাশি অনেক সাধারণ মানুষও এসেছেন। যদিও সারাবছর এখানে তেমন একটা দর্শনার্থী হয় না। দর্শনার্থীরা ঘুরে ঘুরে বাড়িটি দেখেছেন এবং আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস জেনেছেন।

রোজ গার্ডেনে এসেছিলেন বিমানবন্দর থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদুল আজম কনকের নেতৃত্বে নিজ এলাকার নেতাকর্মীরা। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এ ঐতিহাসিক স্থানটি কর্মীদের দেখাতে নিয়ে এসেছি। কর্মীরা অনেক কিছুই শিখেছে। উত্তরা থেকে আসা দর্শনার্থী ফাহাদ তালুকদার বলেন, ফেসবুকে এই বাড়িটি নিয়ে অনেক প্রচারণা দেখি। এই এলাকায় অন্য একটা কাজে আসছিলাম, এক ফাঁকে বাড়িটি দেখতে ঢুকলাম।

রোজ গার্ডেনে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করা আনসার সদস্য লিখন মিয়া জানান, আমি প্রায় ৮ মাস ধরে এখানে দায়িত্ব পালন করছি। এই আট মাসে কেউ রোজ গার্ডেনের দিকে একটু ঢু-মেরেও তাকায়নি। আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কারণে প্রতিদিনই লোকজন দলবেধে রোজ গার্ডেনকে দেখতে আসছেন।

দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এখানে কিছু কর্মসূচী হাতে নিয়েছিল ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। কিন্তু দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাতে সায় না দেয়ায় এখানে কোন কর্মসূচী নেয়া হচ্ছে না।

গতকাল ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী আশিকুর রহমান লাভলু’র নেতৃত্বে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও থানার সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল ইসলাম, ৩৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, ৩৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদ আহমেদসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ-যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ দলের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সৌন্দর্যবর্ধনে রোজ গার্ডেনে গিয়েছিলেন। বাড়িটির আলোকসজ্জার বিষয়ে খোজ খবর নেন তারা। আশিকুর রহমান লাভলু ইনকিলাবকে বলেন, রোজ গার্ডেন ওয়ারীতে অবস্থিত। এই এলাকার আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে সার্বিক দেখভালের দায়িত্ব আমার উপরই বর্তায়। তাই আমার থানা নেতৃবৃন্দ বিষয়টি সুন্দর ভাবে দেখছেন।

ঢাকার মধ্যে যে কয়টি প্রাচীন স্থাপনা আছে তার মধ্যে রোজ গার্ডেন তার অন্যতম। ঢাকার মধ্যে এত সুন্দর নান্দনিক একটি প্রাসাদ রয়েছে, তা না দেখলে বিশ্বাস করা কষ্ট। রোজ গার্ডেনের অবস্থান টিকাটুলির কে এম দাস রোডের শেষ মাথায়। তবে বাড়ির মূল গেটের সামনের অংশটি বিক্রি করে দেওয়ায় একটু ঘুরে পেছনের গেট দিয়ে ঢুকতে হয়, আর সেই অংশটি পড়েছে গোপীবাগের আর কে মিশন রোডে।
রোজ গার্ডেন ছিল ব্যক্তি মালিকানাধীন সম্পত্তি। যা ‘হুমায়ূন সাহেবের’ বাড়ি বলেই পরিচিত। গত বছর সরকার এ বাড়িটি কিনে নেয়। বাড়ি কিনতে সরকারের ব্যয় হয়েছিলো ৩৩১ কোটি ৭০ লাখ দুই হাজার ৯০০ টাকা। ১৯৩১ সালে প্রায় ২২ বিঘা জমির উপর নির্মিত দোতলা এই প্রাসাদের চারদিক ঘিরে ছিলো দেশি বিদেশি গোলাপের চারা। এই গোলাপ বাগানের জন্যই বাগানবাড়িটি সেসময় বিখ্যাত হয়ে ওঠে ‘গোলাপ বাগ’ নামে, যা এখন ‘রোজ গার্ডেন’ নামে পরিচিত। বর্তমানে চারপাশ ঘেরা সেই গোলাপ বাগান না থাকলেও প্রাসাদের সামনে কৃত্রিম ফোয়ারা ও ভাস্কর্যগুলো রয়েছে।

বুধবার রাজধানীর ৫৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও রাজধানীর কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আকাশ কুমার ভৌমিক স্কুলের ছোট-ছোট বাচ্চাদের দেখাতে নিয়ে আসেন রোজ গার্ডেন। ৫০ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি সায়েম খন্দকারের নেতৃত্বে যুবলীগের টি-শার্ট পড়ে একদল যুবলীগ কর্মী রোজ গার্ডেন দেখতে আসেন। একইসাথে মাতুয়াইল ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি নুরুল আমীন নীরু, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী মৎসজীবী লীগের সভাপতি রেদওয়ান খান বোরহান আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেন পরিদর্শন করেন।#



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ