Inqilab Logo

সোমবার, ০৮ জুলাই ২০২৪, ২৪ আষাঢ় ১৪৩১, ০১ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে চট্টগ্রামে বর্ণিল আয়োজন

জমজমাট আ.লীগ

রফিকুল ইসলাম সেলিম | প্রকাশের সময় : ২২ জুন, ২০১৯, ১২:০৭ এএম

৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে ঘিরে চট্টগ্রামে সরগরম হয়ে উঠছে আওয়ামী লীগের মাঠের রাজনীতি। অক্টোবরে দলের জাতীয় কাউন্সিল। তার আগেই চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার সম্মেলন। সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের প্রস্তুতিও এগিয়ে চলছে। মূল দলের পাশাপাশি ছাত্রলীগ, যুবলীগ, মহিলা লীগ এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগেও নতুন কমিটি গঠনের দাবি উঠেছে। সর্বস্তরে নতুন কমিটি গঠনের তোড়জোড়ে দারুন চাঙ্গা দলের নেতারা। কদর বাড়ছে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদেরও। জমজমাট নেতাদের অফিস, বাসা বাড়ি।
আগামীকাল রোববার দলের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর নানা আয়োজনকে ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। টানা তিনবারে ক্ষমতায় দেশের ঐহিত্যবাহী এই রাজনৈতিক দল। দলের নেতাদের কেউ কেউ মনে করেন দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকায় দল সরকারের একাকার হয়ে যাচ্ছে। আর তাই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে সামনে রেখে সরকার থেকে দলকে আলাদা করারও তাগিদ দিচ্ছেন তারা। মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ে দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের ঐতিহ্যের ধারক আওয়ামী লীগ। রাষ্ট্র পরিচালনার পাশাপাশি প্রাচীন এই রাজনৈতিক দলটি গণমানুষের প্রত্যাশা পূরণে আরও বেশি সক্রিয় হবে এমন প্রত্যাশা দলের প্রবীণ নেতাদের।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন গতকাল শুক্রবার সন্ধায় দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ৭০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর মধ্যদিয়ে আওয়ামী লীগের নতুন পথচলা শুরু হবে। দেশের স্বাধীনতা থেকে শুরু করে উন্নয়নের রোলমডেল হওয়া সবকিছুই আওয়ামী লীগের অবদান উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের পরাধীনতা থেকে মুক্তি দিয়েছেন। আর তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা জাতিকে দিয়েছেন অর্থনৈতিক মুক্তি। তার দূরদর্শি নেতৃত্বে বিশ্বদরবারে এখন অন্য এক বাংলাদেশ। এদেশের যা কিছু অর্জন আর সাফল্য তার পেছনে রয়েছে আওয়ামী লীগ।
এবার ব্যাপক আয়োজনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত হবে জানিয়ে তিনি বলেন, মহানগরের পাশাপাশি নগরীর ১৪টি থানা, ৪১টি ওয়ার্ড এমনকি ইউনিট পর্যায়ে নানা অনুষ্ঠানমালা হাতে নেয়া হয়েছে। দলের নেতাকর্মীরা সাধারণ মানুষকে সাথে নিয়ে এসব অনুষ্ঠান পালন করবে। এর মাধ্যমে গণমানুষের সাথে আওয়ামী লীগের সম্পর্ক আরও নিবিড় হবে।
ইতোমধ্যে নগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন সফল করতে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। মহানগরের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বর্ণিলভাবে উদযাপন করবে চট্টগ্রাম উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ। মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে রোববার বেলা আড়াইটায় নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সুধী সমাবেশ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। দলে প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এতে প্রধান অতিথি থাকবেন। বিশেষ অতিথি থাকবেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, ভ‚মিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। বড় পরিসরে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি আশা করে নেয়া হয়েছে নানা প্রস্তুতি। ইনস্টিটিউটের ভেতরে-বাইরে নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠান উপভোগ করতে পারবেন। হলের বাইরে সামিয়ানা টাঙানো হচ্ছে, বসানো হচ্ছে এলইডি স্ক্রিন। আয়োজন করা হয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও।
দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ ২৩ জুন উপজেলাগুলোতে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করলেও ২৬ জুন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বড় পরিসরে অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা আমির হোসেন আমু উপস্থিত থাকবেন। ২৩ জুন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ জেলা পরিষদ মিলনায়তনে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। আলোচনা সভায় দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন প্রধান অতিথি থাকবেন।
এদিকে জাতীয় সম্মেলনের আগে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলার সম্মেল এবং নতুন কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে নেতারা পদ পদবী পেতে নানা তৎপরতা শুরু করেছেন। যারা পদে আছেন তারা আরও উপরে যেতে অথবা পদ ধরে রাখতে নানা চেষ্টা তদবির শুরু করেছেন। আর যারা পদে নেই তারাও পদ পেতে মরিয়া। আর এই সুযোগে দলে বির্তকিতরাও সক্রিয় বলে জানা গেছে।
বিষয়টির প্রতি ইঙ্গিত করে বৃহস্পতিবার রাতে দলীয় কার্যালয়ে বর্ধিত সভায় নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, সম্মেলন এলে সুবিধাবাদী কিছু ব্যক্তি পদ-পদবীর জন্যে মরিয়া হয়ে ওঠে। অথচ তারা দলের দুর্দিনে ছিলেন না। ক্ষমতার জন্য রীতি-নীতি ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে পদ দখল করতে চান। আমি বেঁচে থাকতে এসব সুযোগ সন্ধানীদের পদে বসাবো না। অক্টোবর মাসে জাতীয় কাউন্সিলের আগে কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী সম্মেলনের জন্য প্রস্তুতির কথাও জানান তিনি। তিনি বলেন, কেন্দ্র থেকে লিখিত নির্দেশ পেলে ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে সম্মেলন করে নতুন কমিটি গঠন শুরু হবে। উত্তর ও দক্ষিণ জেলায়ও সম্মেলনের প্রস্তুতি রয়েছে বলে জানান দলের নেতারা। ইতোমধ্যে সব কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি ভেঙ্গে দেওয়ার দাবিতেও সোচ্ছার হয়েছেন ছাত্রলীগের নেতারা।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ