পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক (ডিজি) সামীম মোহাম্মদ আফজালের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ফুঁসে উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়। স্থবির হয়ে পড়েছে ইফার সব কার্যক্রম। ডিজির পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভের ঢেউ ঢাকা শহর ছাড়িয়ে জেলা ও উপজেলা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে। ইফা ডিজি সামীম মোহাম্মদ আফজালের পদত্যাগের দাবিতে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ইফার সব পরিচালক একযোগে গতকাল মঙ্গলবার সকালে আগারগাঁওস্থ ইফা কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেন। এসময় শত শত বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা ও কর্মচারী রাস্তায় নেমে আসেন।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বঙ্গবন্ধুর প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভাবমর্যাদা পুনরুদ্ধার এবং দুর্নীতিমুক্ত করতে অনতিবিলম্বে বিতর্কিত ডিজি সামীম মো. আফজালের পদত্যাগ দাবি করেন। এতে বক্তব্য রাখেন সাময়িক বরখাস্ত ও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে চাকরিতে পুনর্বহালকৃত পরিচালক মুহীউদ্দিন মজুমদার বাদল, পরিচালক হাজেরা খাতুন, রাশিদা আক্তার, তৌহিদুল আনোয়ার ও শফিকুর রহমান তালুকদার।
এদিকে, দুপুরে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ এডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহ সচিবালয়ে তার দফতরে ইফা ডিজির পদত্যাগ দাবিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমের সাথে আলাপকালে বলেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনে যা ঘটছে তা খুবই দুঃখজনক। ইসলামিক ফাউন্ডেশনে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি প্রতিরোধে আন্তরিকভাবে পদক্ষেপ নেয়া হবে। ডিজির দুর্নীতি ও অনিয়মের তদন্ত হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইফার ডিজিসহ কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। কেউ দুর্নীতি ও অনিয়ম করলে অবশ্যই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত শনিবার ইফার ডিজি আগারগাঁওস্থ ইফার কার্যালয়ে থেকে ৫০টি ফাইল গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার নির্দেশে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতিরোধের মুখে উল্লেখিত ফাইল আর নিয়ে যেতে পারেননি। তিনি বলেন, ইফার ডিজি সামীম মোহাম্মদ আফজাল শারীরিকভাবে খুবই অসুস্থ। এখন আর তার পক্ষে দায়িত্ব পালন করা মোটেই সম্ভব না। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইফার ডিজি আমাকে বলেছিলেন, তিনি গত রোববার ইফা থেকে পদত্যাগ করবেন। তার পদত্যাগপত্র এখনো হাতে পাইনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক ফাউন্ডেশন সারাবিশ্বে ইসলামের বাণী ছড়িয়ে দেয়ার কাজে নিয়োজিত। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কোনো ক্ষতি হোক এটা আমরা চাইবো না। বর্তমানে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের স্বার্থ রক্ষায় ইফার ডিজি একটি শান্তিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিবেন বলেও প্রতিমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ইফার বিক্ষোভ সমাবেশে ডিজিকে দুর্নীতির বরপুত্র হিসেবে উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, ডিজি ইফাকে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। তিনি নিজেই দুর্নীতি করেন এবং দুর্নীতিবাজদের প্রশ্রয় দেন। নেতৃবৃন্দ বলেন, মেধাবীদের বঞ্চিত করে ডিজি রাতের অন্ধকারে নিজ কক্ষে প্রহসনের পরীক্ষা নিয়ে বোনের মেয়ে, ভাইয়ের ছেলেসহ বহু আত্মীয়-স্বজনকে বিধিবহির্ভূতভাবে চাকরি দিয়েছেন। শ্যালক ফরহাদ ও ভাতিজা লেলিন ও স্টালিনকে ইফায় ঠিকাদারি দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বিতর্কিত ডিজি। কমপক্ষে দশটি শিল্প গ্রুপে মোটা অঙ্কের বিনিয়োগ রয়েছে তার। তদন্ত করলে থলের বিড়াল বেরিয়ে আসবে। নিম্ন যোগ্যতাসম্পন্ন ভাগিনা মাওলানা এহসানুল হক জিলানীকে ইমাম নিয়োগ দিয়ে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমকেও কলঙ্কিত করেছেন ডিজি। বিতর্কিত ঐ ইমাম বায়তুল মোকাররমে রাতারাতি দোকানের মালিক বনে গেছেন। লন্ডনে প্রবাসী ভাগিনাদের নামে দোকান বরাদ্দ দিয়ে দ্রুত তা বিক্রি করে বিদেশে অর্থ পাচারও করেছেন তিনি।
নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা অনুযায়ী দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে অনতিবিলম্বে ইফার বিতর্কিত ডিজিকে অপসারণ করে তার বিচার করতে হবে। দুপুরে পরিচালকবৃন্দ ডিজির পদত্যাগ দাবিতে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাতের আবেদন জানিয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন। অপরদিকে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ডিজি গতকাল লোক মারফত ১৮ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত তিন দিনের নৈমিত্তিক ছুটির আবেদন পাঠিয়েছেন ইফা কার্যালয়ে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।