Inqilab Logo

সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সব বিমানবন্দরে ডগ স্কোয়াড গঠনের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

একনেকে ১১ প্রকল্প অনুমোদন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ জুন, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

দেশের বিমানবন্দরগুলোতে অধিকতর নিরাপত্তার জন্য ডগ স্কোয়াড গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন’ প্রকল্প অনুমোদনের সময় তিনি এ নির্দেশনা দেন। এ দিন টঙ্গীতে রাসায়নিক গুদাম নির্মাণসহ ১১ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। এগুলো বাস্তবায়নে মোট খরচ ধরা হয়েছে আট হাজার ৫২ কোটি ৭২ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে টাকা তিন হাজার ৩৮৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা, বাস্তবায়নকারী সংস্থা থেকে ৫৫০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক সহায়তা থেকে চার হাজার ১১৩ কোটি ২৫ লাখ টাকা খরচ করা হবে। একনেক সভা শেষে এ তথ্য জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, কৃষি মন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়‚ন, স্বাস্থ্য ও মন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা সভার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। সভায় মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এসডিজি’র মুখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুকুরের ঘ্রাণশক্তি অত্যন্ত প্রখর। পৃথিবীর অনেক দেশের বিমানবন্দরেই ডগ স্কোয়াড থাকে। বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তার জন্যেও ডগ স্কোয়াড গঠন করতে হবে। সভায় জানানো হয়, বাংলাদেশে তিনটি আন্তর্জাতিক ও ছয়টি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর রয়েছে। দেশের স্থিতিশীল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বিমানবন্দরগুলোর ব্যস্ততাও দিন দিন বাড়ছে। নতুন প্রকল্পের আওতায় এসব বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে। কমিউনিকেশন ও নেভিগেশন সার্ভেইল্যান্স (সিএনএস) ব্যবস্থা উড়োজাহাজ পরিচালনা ও এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ কাজে বাংলাদেশে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশগুলোর বেশিরভাগই পুরনো, অনেক সময় এসব ঠিকঠাক কাজ করে না। গৃহীত প্রকল্পের আওতায় এ কাজের জন্য নতুন যন্ত্রপাতি কেনা হবে।

‘আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন’ প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। এ অর্থ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যশোর বিমানবন্দর, সৈয়দপুর বিমানবন্দর ও সিভিল এভিয়েশন ট্রেনিং সেন্টারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজে ব্যয় করা হবে।

একনেক সভায় জানানো হয়, আকাশপথে নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে বিমান চলাচলের লক্ষ্যে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব ফ্লাইট ইনফরমেশন রিজিওন (এফআইআর) কাভারের সার্ভেইল্যান্স গভীর সমুদ্র পর্যন্ত বিস্তৃত করার জন্য শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে প্রকল্প এলাকা হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। যশোর ও সৈয়দপুরে দু’টি কনভেনশনাল ভেরি হাই ফ্রিকোয়েন্সি ওমনিডিরেকশনাল রেঞ্জ (সিভিওআর) রয়েছে, যা ২৫ বছরের পুরনো। এখানে ডপলার ভেরি হাই ফ্রিকোয়েন্সি ওমনিডিরেকশনাল রেডিও রেঞ্জ (ডিভিওআর) প্রতিস্থাপন ও ডিসট্যান্স মেজারিং ইক্যুইপমেন্ট (ডিএমই) স্থাপন করা হবে। এছাড়া, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি) প্রতিস্থাপন করা হবে।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রাইমারি সার্ভেইল্যান্স রাডার (পিএসআর) ও সেকেন্ডারি সার্ভেইল্যান্স রাডার (এসএসআর) নেই। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এসএসআর ৩০ বছরের পুরনো। এ যন্ত্রটি দিয়েই বাংলাদেশের সব এফআইআর কাভার করা হচ্ছে। তাই, যত দ্রুত সম্ভব, এসব বিমানবন্দরে এএসআর ও পিএসআর প্রতিস্থাপন করা প্রয়োজন। এছাড়া, যশোর ও সৈয়দপুরে সিভিওআর ও ডিভিওআর ২৫ বছরের পুরনো। এগুলোও প্রতিস্থাপন করা জরুরি।

গৃহীত প্রকল্পের আওতায় এসব যন্ত্রপাতি প্রতিস্থাপন করে বাংলাদেশের বিমানবন্দরগুলোতে নিরাপদ উড়োজাহাজ পরিচালনার ব্যবস্থা করা হবে বলে জানানো হয়। বেশ কয়েকটি প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা প্রসঙ্গে পরিকল্পনা সচিব নূরুল আমিন জানান, হাইওয়ে সড়ক নির্মাণের সময় চালকদের বিশ্রামাগার নির্মাণ করতে পুনরায় তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া শুধু পৌরসভা এলাকায় নয়, ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত পানি সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এ জন্য কত টাকা প্রয়োজন তারও হিসাব নিকাশের কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

একনেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হচ্ছে, নেত্রকোণা-কেন্দুয়া-আঠারবাড়ী-ঈশ্বরগঞ্জ জেলা মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, এর খরচ ধরা হয়েছে ৭১০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। বাংলাদেশের ৩০টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে এক হাজার ৭৫১ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৫৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা। ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩৫২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। ইনভেস্টমেন্ট কম্পোনেন্ট ফর ভালনেরেবল গ্রুপ ডেভলপমেন্ট প্রোগ্রাম প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩১৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা। কুমিল্লা-চাঁদপুর-ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সেচ এলাকা উন্নয়ন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩২৫ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। পোল্ট্রি গবেষণা ও উন্নয়ন জোরদারকরণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১২৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। প্রাণীসম্পদ উৎপাদন উপকরণ ও প্রাণীজাত খাদ্যেও মান নিয়ন্ত্রণ গবেষণাগার স্থাপন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ১০৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। খুলনা ৩৩০ মেগাওয়াট ডুয়েল ফুয়েল কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে তিন হাজার ৯১৯ কোটি ২৬ লাখ টাকা। রাসায়নিক গুদাম নির্মাণ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৯১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। বিসিক শিল্প পার্ক, টাঙ্গাইল প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৯৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ