পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রস্তাবিত বাজেটে সিম-রিমে সম্পূরক ও আরোপিত শুল্ক, সঞ্চিত আয় ও আয়ের ওপর সর্বনিম্ন শুল্ক, স্মার্টফোন আমদানিতে শুল্ক আরোপের বিরোধিতা করেছে মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো। এর ফলে সার্বিকভাবে পুরো খাতে প্রায় এক হাজার ৩শ’ কোটি টাকা ব্যয় বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করে তারা। ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন করে করারোপের কারণে টেলিযোগাযোগ খাতের মরণদশা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এই খাতকে সোনার ডিম পাড়া হাসের সাথে তুলনা করে বাজেট প্রস্তাবনা পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব করেছে এসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকমিউনেকশন অপারেটরস অব বাংলাদেশ (এমটব)। গতকাল (মঙ্গলবার) বিকেলে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে এমটব আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রস্তাব করা হয়।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়- ২০১৯-২০ অর্থবছরের কর প্রস্তাবে মোবাইল ফোনে সিম ও রিম কার্ডের উপর আরোপিত সম্পূরক শুল্কহার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশে উন্নীতকরণ করা হয়েছে। সিম কার্ডের উপর আরোপিত শুল্ক ১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০০ টাকা। এতে ৮০০ কোটি টাকার বোঝা পড়বে অপারেটরদের ওপর। পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত কোম্পানিগুলোর রিটেইনড আর্নিং বা আয়ের সঞ্চিতির উপর ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ, মোবাইল কোম্পানির আয়ের উপর সর্বনিম্ন শুল্ক শূণ্য দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২ শতাংশ করা। এতে প্রতিবছর অপারেটরগুলোকে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা অতিরিক্ত গুণতে হবে। যা এই খাতে নতুন বিনিয়োগে বড় বাধা হয়ে দেখা দেবে। স্মার্টফোন আমদানিতে আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। এই শুল্কারোপের কারণে একদিকে যেমন স্মার্টফোন গ্রাহকের সংখ্যা কমবে অন্যদিকে ব্যহত হবে ডিজিটাল বাংলাদেশ। সংগঠনটি জানায়, স্থানীয়ভাবে এখন মাত্র ৩০ শতাংশ স্মার্টফোন উৎপাদন হচ্ছে। আর বাকী ৭০ শতাংশ এখনো আমদানী নির্ভর। স্থানীয়ভাবে সক্ষমতা না বাড়িয়ে এই কর বৃদ্ধি করা কোনভাবেই যৌক্তিক মনে করে না এমটব।
প্রস্তাবিত বাজেটে নতুন করে শুল্ক আরোপকে বোঝা মন্তব্য করে এমটবের পক্ষ থেকে বলা হয়, প্রস্তাবিত নতুন শুল্ক নীতিমালা বর্তমান ও নতুন গ্রাহকদের ওপর নতুন করে অতিরিক্ত খরচের বোঝা বাড়াবে। বাজেট ঘোষণার প‚র্বে এই খাত থেকে কিছু সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব ছিলো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের প্রতি, যেমন সিম ট্যাক্স ও মোবাইল সেবার ওপর আরোপিত ৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাতিল করা। এছাড়াও, অমুনাফাভোগী অপারেটরদের বেলায় নূন্যতম করপোরেট শুল্কহার কমিয়ে আনা এবং পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত বা অনিবন্ধিত কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে কর হার ৫ শতাংশ হারে কমিয়ে আনা। এছাড়াও, আর্থিক বিরোধ নিস্পত্তির ক্ষেত্রে আবেদন ফি ৩০ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার বিষয়েও এনবিআর এর কাছে প্রস্তাব রাখে এমটব।
এমটবের মহাসচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফরহাদ বলেন, বর্তমান পটভূমিতে তিনটি প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগকারীকে মুনাফা না করলেও মোট আয়ের ওপর নূন্যতম কর শূণ্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে বাধ্যতামূলকভাবে কর প্রদান করতে হতো। এটা দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি মোট আয়ের ওপর নূন্যতম কর ২ শতাংশ করার বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের অগ্রযাত্রায় টেলিযোগাযোগখাতে বিপুল বিনিয়োগ এর ভূমিকা অগ্রাহ্য। বর্তমানে টেলিযোগাযোগখাত ডিজিটাল বাংলাদেশ পুরোপুরিভাবে বাস্তবায়নের সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে। এ অবস্থায় অবিবেচনাপ্রসূত হারে কর হার বৃদ্ধি ও নতুন করে সম্পূরক শুল্ক আরোপ ফোরজি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও ফাইভ জি নেটওয়ার্ক স্থাপনের পুরো প্রক্রিয়াটিকেই হুমকির মুখে ফেলবে। প্রস্তাবিত বাজেটে কর বৃদ্ধির যে প্রস্তাব করা হয়েছে সেটিকে টেলিযোগাযোগ শিল্পের মরণদশা সৃষ্টি করবে বলেও মন্তব্য করেন এমটব মহাসচিব।
এস এম ফরহাদ বলেন, প্রস্তাবিত কর ও শুল্ক কাঠামো আরোপের মাধ্যমে এই খাতটিকেই পঙ্গু করে দেবে। বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) টেলিযোগাযোগখাতের অবদান ৬ দশমিক ২ শতাংশের অধিক হলেও এ বিষয়টি সম্পূর্ণ রূপে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। বর্তমানে টেলিযোগাযোগখাতে পুরো বিশ্বের মাঝে বাংলাদেশে সর্বোচ্চ কর-ভারের বিষয়টি এখন সর্বজনবিদিত।
এমটবের মহাসচিবের মতে, মোবাইল সেবাখাতে ৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপের ফলে তা ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে জনগণের স্বতঃস্ফ‚র্ত অংশগ্রহণকেই বাধাগ্রস্ত করবে। এছাড়াও, নতুন সিম কার্ড ও প্রতিস্থাপনের উপর আরোপিত শুল্ক ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকা বৃদ্ধি করায় নতুন গ্রাহকদের খরচের বোঝা দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি করবে।
এমটবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও মোবাইল ফোন অপারেটর রবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাহতাব উদ্দীন আহমেদ বলেন, সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নের কথা বলে, কিন্তু প্রতিবার বাজেটে লক্ষ্য করা যায় সরকারের পলিসি সেই কথার সাথে মিল নেই। টেলিযোগাযোগ খাত আয়ের ৫০ শতাংশের বেশি কর দিয়ে থাকে। আমরা বাজেটের আগে কর হার কমানোর প্রস্তাব করেছিলাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমাদের কোন দাবি মানা হয়নি। উল্টো আরও নতুন করে করের বোঝা চাপানো হয়েছে। তিনি বলেন, মার্কেটে থাকা তিনটি বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটরের মধ্যে গ্রামীণফোন ছাড়া রবি ও বাংলালিংক এখনো লাভের মুখ দেখেনি। রবি দীর্ঘদিন পর তাদের ঘাটতি পুষিয়ে লাভের আশা করছিল কিন্তু নতুন করে করারোপের ফলে আর সেটি সম্ভব হবে না।
বাংলালিংকের চিফ করপোরেট এন্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট বাস্তবায়ন হলে ছোট অপারেটর হিসেবে তাদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে। কলরেট বেড়ে যাওয়ার কারণে গ্রাহক কথা বলা কমিয়ে দেবে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের হেড অব রেগুলেটরি হোসেইন শাহাদাত ও টেলিটকের হেড অব রেগুলেটরি সাইফুর রহমান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।