Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গায়ে পড়ে ঝগড়া তারপর খুন

উত্তরখানে হত্যাকান্ডে গ্যাংয়ের হোতাসহ গ্রেফতার ৩

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ জুন, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

রাজধানীর উত্তরখান এলাকায় সাকিব হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতাররা হলো- গ্যাংয়ের হোতা শাহীন মিয়া ওরফে ব্যাক শাহীন (২৪), মঞ্জুরুল ইসলাম ওরফে মিজু (২৪) ও ফরহাদ হোসেন (২৬)। তাদের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত একটি ধারালো ছোরা ও তিনটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।

গত সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উত্তরখানের বাটুলিয়া এলাকা থেকে র‌্যাব-১ এর একটি দল তাদেরকে গ্রেফতার করে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. সারওয়ার-বিন-কাশেম।

র‌্যাব জানায়, ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যেই তারা সাকিব ও রুবেলের ওপর হামলা চালিয়েছে। তিনজনই র‌্যাবের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। এর আগে গত ১৫ জুন বিকেলে উত্তরখান এলাকায় নদীর পাড়ে বেড়াতে গিয়ে খুন হন সাকিব (২৪)। এ ঘটনায় তার বন্ধু শিপন গুরুতর আহত হন।

র‌্যাব জানায়, হত্যাকান্ডের দিন ঘটনাস্থলে গাঁজা ও ইয়াবা সেবন করছিলো শাহীন, জিয়া, তানভীর, রুবেল, মিঠু ও সবুজসহ ৭-৮ জন। এ সময় সাকিব ও শিপনকে দেখতে পায় মিঠু। এরপর ছিনতাইয়ের উদ্দেশে সবাইকে নিয়ে সাকিব ও শিপনের সঙ্গে গায়ে পড়ে ঝগড়া শুরু করে তারা। বাগবিতন্ডার একপর্যায়ে সাকিব ও শিপনের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও টাকা ছিনিয়ে নিতে চায় তারা। এতে তারা দু’জনে বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ সময় রুবেলের কাছ থেকে একটি সুইচ গিয়ার ছুরি নিয়ে সাকিব ও শিপনকে আঘাত করে পালিয়ে যায় শাহীন। এ ঘটনায় উত্তরখান থানায় অজ্ঞাতনামা ৭-৮ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করা হয়। মামলা নং-১১।

র‌্যাব সূত্রে জানা যায়, ছোট থাকতেই মাকে হারান মো. সাকিব হোসেন। তারা বাবা মো. রফিকুল ইসলাম এক সময় রাজমিস্ত্রীর কাজ করলেও বার্ধক্য ও শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার কারণে এখন বেকার। অভাবের কারণে এসএসসির পর পড়াশোনা বন্ধ করে সংসারের হাল ধরেন সাকিব। তিনি উত্তরার ৭নং সেক্টরে ‘ফড়িং’ নামে একটি পোশাক বিক্রির শোরুমে কাজ করতেন। আহত শিপনও স্থানীয় একটি কাপড়ের শোরুমে কাজ করেন।

র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, গ্যাংয়ের হোতা শাহিন ২০১৫ সালে টঙ্গীর সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যা নিকেতন থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। সে দোয়েল পরিবহনে হেল্পার ছিল এবং এর আগে আশুলিয়া এলাকায় ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসাও করে। দীর্ঘদিন ধরে ইয়াবা ও গাঁজা সেবন করার পাশাপাশি মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত শাহিন। তার বিরুদ্ধে উত্তরখান ও দক্ষিণখান থানায় ছিনতাই, মারামারি ও মাদকের একাধিক মামলা রয়েছে। এছাড়া ফরহাদ পেশায় টিউবওয়েল মিস্ত্রি। সেও ইয়াবা ব্যবসাসহ দীর্ঘদিন ধরে এ চক্রের সঙ্গে জড়িত। চক্রের সবার বিরুদ্ধে মাদক এবং নারী ও শিশু নির্যাতন, ছিনতাই ও খুনের একাধিক মামলা রয়েছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে উত্তরখানে ঘুরতে আসা লোকদের অস্ত্রের ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা-পয়সা, মোবাইল, স্বর্ণালঙ্কার ছিনতাইসহ ভাড়ায় খুন, চাঁদাবাজি, ছিনতাই করে বলে র‌্যাব জানতে পেরেছে।

প্রসঙ্গত, গত ১৫ জুন বিকেলে বন্ধু শিপন মিয়াকে নিয়ে উত্তরখান এলাকায় নদীর পাড়ে বেড়াতে গেলে ৭/৮ জন যুবক তাদের ঘিরে ধরে। দু’জনের বুকে ও পিঠে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে মোবাইল ফোন ও টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাকিব। শিপন এখনো চিকিৎসাধীন। তবে তার অবস্থা আশঙ্কামুক্ত।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ