পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বাজেট নিয়ে মিথ্যা তথ্য দিয়ে দেশের সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত না করার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে বলেই বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে আমরা তাল মিলিয়ে চলতে পারছি। সারা বিশ্ব অবাক হচ্ছে। ব্যাংকে টাকা নেই, এটা ঠিক নয়। টাকা আছে, কিন্তু লুট করার মতো টাকা নেই। গতকাল সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটের ওপর অর্থমন্ত্রীর পক্ষে সমাপনী বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একজন বালিশতত্ত¡ নিয়ে এসেছেন। পাবনার রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওই ঘটনায় (বালিশ কেনা) যিনি দায়িত্বে ছিলেন তার কিছু পরিচয় আমরা পেয়েছি। নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুল আলম এক সময় বুয়েটে ছাত্রদলের নির্বাচিত ভিপি নাকি ছিলেন। তাকে সেখান থেকে সরানোও হয়েছে। যখনই তথ্য পেয়েছি, সঙ্গে সঙ্গে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। তিনি আরো বলেন, এখানে (বিএনপিতে) এমন এমন লোক রয়ে গেছেন, জন্ম থেকেই তাদের চরিত্র দুর্নীতির। তার কারণও আছে। এই দলটি (বিএনপি) যিনি করেছিলেন, তিনি সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় সংবিধান ও সামরিক আইন লঙ্ঘন করে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট খন্দকার মোশতাকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর খুনিদের ইনডেমনিটি অর্ডারটাকে ভোটারবিহীন পার্লামেন্টে আইন হিসেবে পাস করিয়ে দিয়েছেন তিনি। অস্ত্রের মুখে সায়েম সাহেবকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে দিয়ে নিজেকে নিজে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করে ক্ষমতায় এসেছিলেন জিয়া। ক্ষমতা দখল করার পর তাদের হাতে যে দল গড়ে ওঠে, তাদের চরিত্রটা জানা উচিত। তাদের উৎসটাই হচ্ছে দুর্নীতি। দুর্নীতির মধ্যে থেকে উঠে আসা।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী বিএনপিসহ বিরোধী দলের সদস্যদের সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে বলেন, অনেকে বলেন, ব্যাংকে টাকা নেই। ব্যাংকে টাকা থাকবে না কেন? অবশ্যই টাকা আছে। তবে লুটে খাওয়ার টাকা নেই। আর ব্যাংক খেকে যারা লুট করে নিয়ে গেছেন তাদের আমরা চিনি। অনেকেই তো প্রচুর টাকা ব্যাংক থেকে নিয়ে আর ফেরত দেননি। দুর্নীতির দায়ে কারাগারে বন্দী আছেন। সময় আসলেই এব্যাপার আলোচনা করতে পারবো। তিনি বলেন, রাজস্ব আহরণে উচ্চাবিলাসী হওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
বিদায়ী অর্থবছর ২০১৮-১৯ সম্পূরক বাজেটের উপর সাধারণত অর্থমন্ত্রী সমাপনী বক্তৃতা দিয়ে থাকেন। এবার বাজেট উত্থাপনের মত ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটেছে সংসদের ইতিহাসে। অর্থমন্ত্রীর অসুস্থতার কারণে সোমবার সম্পূরক বাজেট পাসের আগে সম্পূরক বাজেটের সমাপনী বক্তৃতাও করেন সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুরুতেই সম্পূরক বাজেটের ওপর সমাপনী বক্তৃতা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানান স্পিকার। সবশেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুরোধে জাতীয় সংসদে কন্ঠভোটে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট পাশ হয়। যা সংসদের ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। যেটি আগে কখনই ঘটেনি।
অধিবেশনের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ বলছেন বাজেট দিয়ে বাস্তবায়ন করতে পারে না। বাজেট বাস্তবায়নের মাঝামাঝি সময়ে আমরা একটা হিসেব নেই। কোথায় কোন খাতে কি বরাদ্দ দিয়েছিলাম, কতটা কার্যকর হলো, কতটা হলো না বা কোন কোন জায়গায় বরাদ্দকৃত টাকা যথাযথ বাস্তবায়ন করা সম্ভব, আর কোথায় কোথায় সম্ভব না। কোথায় বাস্তবায়নের জন্য বেশি টাকার প্রয়োজন হয় এরপর এটা ঢেলে সাজাই। বাজেটে সেই ক্ষেত্রে পরিমার্জন করি, সংশোধন করি- এটাই নিয়ম। যাতে অর্থটা যথাযথভাবে কাজে লাগে। তিনি বলেন, সকল প্রকল্প তো একইভাবে চলে না, চলতে পারে না, চলা সম্ভবও না। এটাই বাস্তবতা।
প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, যদি বাজেট বাস্তবায়নই করতে না পারি তাহলে ২০০৮ সালের ৬১ হাজার কোটি টাকার বাজেট থেকে এখন কীভাবে ৫ লাখ কোটি টাকার উপরে বাজেট দিলাম? এই টাকা আসলো কোথা থেকে? এর উন্নয়নটা তো সারাদেশের মানুষ পাচ্ছে। কাজেই অযথা কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত না করাই ভাল। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, বাজেট দিয়ে বাস্তবায়ন করতে পারি না, এ অভিযোগ যারা করেন তাদের কাছে আমার প্রশ্ন- ২০০৮ সালে ৬১ হাজার কোটি টাকার বাজেট দিতাম, আজ সেখানে ৫ লাখ কোটি টাকার বাজেটে উপরে চলে গেছে। এতো বড় বাজেট কীভাবে দিলাম, যদি বাস্তবায়নের দক্ষতাই না থাকবে? তিনি বলেন, বাস্তবতার কারণেই বাজেটে কিছুটা সংশোধন, পরিবর্তন ও পরিমার্জনের প্রয়োজন হয়। প্রতি বছরই এটা করে থাকি। এটা শুধু আমাদের দেশে না সব দেশেই হয়ে থাকে।
বিদ্যুৎ নিয়ে সমালোচনার জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদ্যুৎ নিয়ে অনেকে কথা বলছেন। যে বিদ্যুতের এতো উন্নয়ন হল, তাহলে শতভাগ হয় না কেন? জবাবে তিনি বলেন, একটা কথা মনে রাখতে হবে বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলো সবগুলো সবসময় চালু থাকে না। প্রত্যেকটা বিদ্যুৎ কেন্দ্র মাঝে মাঝে নতুনভাবে সংস্কার করতে হয়, যেকারণে বন্ধ থাকে। যেখানে যতটুকু চাহিদা সেই চাহিদা মোতাবেক বিদ্যুৎ দেয়া হয়। আজকে দেশের ৯৩ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাচ্ছে। গ্রামে গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাচ্ছে।
সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চলতি ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের যেসব সামষ্টিক অর্থনৈতিক অনুমান সমূহের উপর ভিত্তি করে প্রণীত হয়েছিল, পরবর্তীতে বৈশ্বিক নানা ঘটনার কারণে সেসব সামষ্টিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে কিছুটা পরিমার্জনের প্রয়োজন হয়। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের মূল বাজেট প্রণয়নকালে সামষ্টিক জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৮ শতাংশ অনুমান করেছিলাম। কিন্তু সংশোধিত বাজেটে তা ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ হবে বলে অনুমান করছি। তিনি বলেন, সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ণয় করা হয়েছিল ৭ দশমিক ৬ শতাংশ। যা সাফল্যজনকভাবে অতিক্রম করতে সক্ষম হব বলে আশা করছি। অপরদিকে মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ অনুমান করা হলেও সংশোধিত মূল্যস্ফীতি নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ। প্রাক্কলিত জিডিপি ২৫ লাখ ৩৭ হাজার ১০০ কোটি টাকার পরিবর্তে কিছুটা কমিয়ে ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রবৃদ্ধি ১২ দশমিক ৭ শতাংশ, যা অনুমান করা হয়েছিল ১৩ দশমিক ৪ শতাংশ। এটা খুব স্বাভাবিক নিয়মেই হয়ে থাকে। মূল্যস্ফীতির ব্যাপারে বলবো, প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেলে সাধারণ মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পাবার কথা। কিন্তু যেহেতু আমরা বাজেট পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে অত্যন্ত সতর্ক তাই সব সময় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।